Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর

সুভাষ রায়, গ্রাম : ডালিয়া, উপজেলা : ডিমলা, জেলা : নীলফামারী
প্রশ্ন : পেয়ারার গায়ে ছোট ছোট বাদামি দাগ পড়ে। এছাড়া পরিপক্ব ফল ফেটে যায়। এ অবস্থায় কী করণীয়?  
উত্তর :  পেয়ারার অ্যানথ্রাকনোজ রোগ হলে এ সমস্যা হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগ প্রতিরোধে গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা, ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলা দরকার। আক্রমণ বেশি দেখা দিলে পেয়ারার কুঁড়ি আসার আগে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার স্প্রে করলে এ রোগের প্রকোপ কমানো সম্ভব।
 মো. সাগর আলী, গ্রাম : পূর্ব শ্যামপুর, উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রশ্ন : বরবটির পাতা ও গাছে সাদা পাউডারের মতো দেখা যায়। এছাড়া পাতা হলুদ ও কালো হয়ে মারা যাচ্ছে। এ সমস্যার  প্রতিকার কি?
উত্তর : ওইডিয়াম প্রজাতির এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। বরবটির এ সমস্যা দূরীকরণে প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে রোগাক্রান্ত গাছে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে। আর এ রোগের আক্রমণ রোধে আগাম বীজ বপন, রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং সুষম সার ব্যবহার করতে হয়।
মো. এনাম উল্লাহ গ্রাম : লাল মোহাম্মদ শিকদারপাড়া, উপজেলা : মহেশখালী, জেলা : কক্সবাজার
প্রশ্ন : নারকেল গাছের কা- ফেটে আঠা বের হচ্ছে। কি করণীয়?
উত্তর : এ সমস্যাটিকে নারকেল গাছের কা-ের ব্লিডিং বলে। রোগের আক্রমণের শুরুতে কা-ে ছোট ছোট ফাটল দেখা যায়। ফাটলগুলো থেকে লালচে বাদামি রঙের রস ঝরে। আস্তে আস্তে গাছ নষ্ট হয়। এ সমস্যা প্রতিকারের জন্য আক্রান্ত স্থান ছুরি বা দা দিয়ে চেঁছে পরিষ্কার করে বর্দোপেস্ট লাগাতে হয় এবং এক লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁত ও ১০০ গ্রাম চুন মিশিয়ে বর্দোপেস্ট তৈরি করতে হয়। বর্দোপেস্ট নারকেল গাছের আক্রান্ত স্থানে বেশ ক’বার লাগালে এ সমস্যাটি  থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আব্দুল আহাদ, গ্রাম : খাটুরিয়া, উপজেলা : গোবিন্দগঞ্জ, জেলা: গাইবান্ধা
প্রশ্ন:  পাটের কা- কালো হয়ে যাচ্ছে। আক্রান্ত স্থানে হাত লাগলে হাতে কালো দাগ লাগে। কী করব?
উত্তর: পাটের এ সমস্যাটির নাম পাটের কালোপট্টি রোগ। এ রোগ হলে পাটের আক্রান্ত স্থানে হাত দ্বারা ঘসলে হাতে কালো দাগ লেগে যায়। এ রোগে অল্প পরিমাণ পাট গাছ আক্রান্ত হলে সে পাট গাছগুলো অপসারণ করা। আর যদি আক্রমণ বেশি হয়ে যায় তবে মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করা। এছাড়া জমিতে পানি থাকলে তা নিকাশ করা। এসব বিষয় মেনে চললে আপনি উপকার পাবেন।  
মো. সাগর আলী, গ্রাম : পূর্ব শ্যামপুর, উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রশ্ন : গোলাপ ফুল গাছের পাতায় সবুজ হলুদের মিশ্রণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া  গোলাপ গাছের পাতাগুলো  কোঁকড়ানোও রয়েছে।  এমনকি ফুলও ছোট আকারের হয়। কী করণীয়?
উত্তর : গোলাপ গাছে ইয়েলো মোজাইক ভাইরাস আক্রমণ করলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এজন্য ভাইরাস রোগমুক্ত নার্সারি হতে গোলাপের কলম সংগ্রহ করতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে পুড়ে ফেলতে হবে। বাহক পোকা দমন করার জন্য ইমিডাক্লোরপিড গ্রুপের কীটনাশক ০.৫ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। তাহলেই এ সমস্যা থেকে আপনি রেহাই পাবেন।
ঋদ্ধিনন্দন সানা, গ্রাম : বনগ্রাম, উপজেলা : কাউনিয়া, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : পুঁইশাকের পাতায় গোল গোল দাগ হয়। পুরো পাতা নষ্ট হয়ে যায়। ভেতরটা সাদাটে ও দাগের কিনারাটা কালচে হয়। কী করণীয়?
উত্তর : পুঁইশাকে এ সমস্যাটি সারকোস্পোরা নামক ছত্রাকের কারণে হয়ে থাকে। এ রোগটিকে পুঁইশাকের পাতার দাগ রোগ বলে। এ সমস্যা দেখা দিলে  প্রতি লিটার পানিতে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ১ গ্রাম ছত্রাকনাশক ভালোভাবে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সমস্যার সমাধান হবে। তবে অল্প গাছে এ রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত পাতাগুলো তুলে মাটিতে পুঁতে ফেলা যেতে পারে। এছাড়া সুষম সার ও পরিমিত সেচ প্রদান করলে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
মো. হাবিবুর রহমান, গ্রাম : শৈলেন, উপজেলা : বিরামপুর, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : আম ফেটে যায়। প্রতি বছরই এমন হচ্ছে। কী করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাব?
উত্তর : আম ফেটে যাওয়ার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কারণটি হলো শারীরবৃত্তীয় কারণ। বিশেষ করে আম গাছে পানি সেচ প্রয়োগে সমস্যা হলে এ সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়া গরম ও ঠা-া আবহাওয়ার কারণেও এটি হতে পারে। এ কারণে সময়মতো সেচ ও পরিচর্যার মাধ্যমে এ সমস্যার মোকাবিলা করা যায়।
মো. আনোয়ারুল ইসলাম, গ্রাম : বরকতপুর, উপজেলা : ভুয়াপুর, জেলা: টাঙ্গাইল
প্রশ্ন : পুকুরে চা বীজের খৈল প্রয়োগ করতে চাই। কীভাবে করব?
উত্তর : চা বীজের খৈল প্রয়োগ করে পুকুর থেকে রাক্ষুসে ও অচাষকৃত প্রজাতির মাছ দূর করা যায়। এই খৈল দিয়ে মারা মাছ খাওয়া যায়। এ জন্য প্রতি শতকে প্রতি ৩ ফুট গভীরতার জন্য ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম চা বীজের খৈল প্রয়োজন হয়। চা বীজের খৈল পানিতে ভিজিয়ে সমস্ত পুকুরের পানিতে সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর মাছ দ্রুত ধরে ফেলতে হবে।
 মো. মাসুম হোসেন, গ্রাম : ভিয়াইল, উপজেলা : চিরির বন্দর, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : পুকুরে জলজ পোকামাকড় দমন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বা ডিজেল/কেরাসিন প্রয়োগ করে নার্সারি পুকুরের জলজ পোকামাকড় ভালোভাবে দমন করা যায়। এসব হলো- ১. ডিপট্যারেক্স- ৬ থেকে ১২ গ্রাম প্রতি শতক পুকুরে প্রয়োগ করা; ২. সুমিথিয়ন/ নোভান- ২ থেকে ৩ গ্রাম প্রতি শতক পুকুরে প্রয়োগ করা। এসব কীটনাশক ব্যবহারে নিয়ম হলো-প্রয়োজনীয় মাত্রার কীটনাশক একটি পাত্রের মধ্যে ১০ লিটার পরিমাণ পানিতে গুলে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিঠিয়ে দিতে হবে। ডিপট্যারেক্স প্রয়োগের পর জলজ পোকামাকড় মারা যাওয়া শুরু করলে সমস্ত পোকামাকড় চটজাল দ্বারা তুলে ফেলতে হবে। দুপুর রোদে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। কম তাপমাত্রা, মেঘ কিংবা বৃষ্টির সময় কীঠনাশক ব্যবহার না করা।  এছাড়া কীটনাশক ব্যবহারে যেসব সতর্কতা মেনে চলতে হয় তা হলো- কীটনাশক ব্যহারে সময় ব্যবহারকারীকে নাক, মুখ, শরীর, কাপড় ঢেকে নিয়ে চশমা পরে নিতে হবে; বাতাসের অনুকূলে স্প্রে করা; সমস্ত মরা পোকামাকড় তুলে ফেলতে হবে। এছাড়া ঘন নাইলনের জাল (ঘন পলিস্টার নেট) বার বার টেনেও পোকামাকড় সহনশীল মাত্রায় কমিয়ে আনা যায়। আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে সেটি হলো- জলজ পোকামাকড় দমনের সময় উল্লিখিত যে কোনো একটি পদ্ধতি রেণু ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা আগে অনুসরণ করতে হবে।   
মো. রানা, গ্রাম : দানিশনগর রাজবাড়ী, উপজেলা : পীরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : আমার গরুর ১৫ দিন হলো বাচ্চা হয়েছে। বাছুর দুধ পাচ্ছে না। এ অবস্থায় আমি কী করব? পরামর্শ চাই।
উত্তর : গাভীর দুধ বৃদ্ধির জন্য গাভীকে দানাদার খাবার যেমন- গমের ভুষি, চালের কুঁড়া, খেসারি, খৈল এবং খড় খাওয়াতে হবে। এসব খাবারের পাশাপাশি মিল্ক বুস্ট পউডার ও এ মিল্ক ট্যাবলেট খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।  
 মোছা. জাহান আরা, গ্রাম : উজগ্রাম, উপজেলা : গাবতলী, জেলা : বগুড়া
 প্রশ্ন : আমার কবুতরের ঘাড় বাঁকা হয়ে থাকে। খাবার খেতে পারে না। এর সমাধান কী?
উত্তর : এটি ভিটামিনের অভাবজনিত একটি রোগ। এই রোগ হলে কবুতরকে বিয়োটিভ দিনে ২ বেলা করে খাওয়াতে হবে। এছাড়া একটি বোতলে ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম ছোলা নিয়ে পানি দিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন ওই ছোলা বড় কবুতরের ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০টা এবং ছোট কবুতরের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০টা করে খাওয়াতে হবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি উপকার পাবেন।
কৃষির যে কোনো প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে  কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন আমাদের কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ এ নাম্বারে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত যে কোনো দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে। তাছাড়া কৃষিকথার গ্রাহক হতে বার্ষিক ডাক মাশুলসহ ৫০ টাকা মানি অর্ডারের মাধ্যমে পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫ এ ঠিকানায় পাঠিয়ে ১ বছরের জন্য গ্রাহক হতে পারেন। প্রতি বাংলা মাসের প্রথম দিকে কৃষিকথা পৌঁছে যাবে আপনার ঠিকানায়।

 

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন*

*উপ-প্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫; taufiquedae25@gmail.com

 

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর

আব্দুল মুন্নাফ, গ্রাম : দুর্গাপুর, পো: দুর্গাপুর, উপজেলা : আদিতমারী, জেলা : লালমনিরহাট
প্রশ্ন : নারিকেল পাতা পুড়ে যাচ্ছে। করণীয় কি?
উত্তর : এটা ব্লাইট রোগ। আক্রান্ত পাতা কেটে নষ্ট/ পুড়িয়ে ধ্বংস করা। পটাশ সার অবশ্যই ব্যবহার করা। আক্রান্ত গাছে মেনকোজেব+মেটালঅক্সিল গ্রুপের ঔষধ রিডোমিল গোল্ড ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
মো: দিদার, গ্রাম : গর্বভানধুর, পো : লালদিঘি, উপজেলা : পীরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : কলাগাছ লম্বালম্বিভাবে ফেটে যায়। করণীয় কি?
উত্তর : এটা পানামা রোগ। পাতা  বোটার নিচ থেকে ঝুলেপড়ে এবং ফেটে যায়।
উত্তর : এক্ষেত্রে আক্রান্ত গাছ গোড়াসহ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে ১% ফরমালিন ও ৫০ ভাগ পানি দ্বারা গর্ত ভিজিয়ে রেখে ১০-১২ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে।
গ্রাম : আলিয়াবাদ, পো : আলিয়াবাদ, উপজেলা : দুর্গাপুর, জেলা : রাজশাহী
প্রশ্ন : আমের ফল ধারণের পরবর্তী পরিচর্যা কি?
উত্তর : ফল মটরদানার মতো অবস্থায় নির্দিষ্ট মাত্রার ১/২ ইউরিয়া ও ১/২ এমওপি সার সমান দুইভাগ করে একভাগ করে ব্যবহার করতে হবে। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও পটাশ সার মে মাসের ১ম সপ্তাহ/ জাত অনুসারে আম সংগ্রহের ১ মাস আগে প্রয়োগ করতে হবে।
বাবু আহমেদ, গ্রাম : সোনাতলা, পো : সোনাতলা, উপজেলা : সাঁথিয়া, জেলা : পাবনা
প্রশ্ন : পেঁয়াজের পাতার মাথা পুড়ে যাচ্ছে। করণীয় কি?
উত্তর : এটি পেঁয়াজের পার্পল ব্লচ রোগ।
আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। থিরাম (৩৭.৫%)+কার্বোক্সিন (৩৭.৫%) গ্রুপের প্রোভেক্স দ্বারা বীজ শোধন (২  গ্রাম/ ১ কেজি) করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম  হারে রিডোমিল গ্লোল্ড স্প্রে করতে হবে ৭ দিন পর পর মোট ৩ বার।
মো: আজিজুর রহমান, গ্রাম : পৌরসভা, পো : পৌরসভা, উপজেলা : আটওয়ারী, জেলা : পঞ্চগড়
প্রশ্ন : আম গাছে মুকুল আসার পরবর্তী কার্যক্রম কি?
উত্তর : আম গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে হপার পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোরপিড গ্রুপের কীটনাশক (যেমন কনফিডর ৭০ মি ২ গ্রাম/লিটার) পানিতে স্প্রে করুন। গাছে সম্পূর্ণরূপে ফুল প্রস্ফুটিত হরার পর ১৫ দিন পর পর ৪ বার বেসিন পদ্ধতিতে সেচ দিতে হবে।
মো: মাসুদুর রহমান, গ্রাম : শিবপাশা, পো : রারপাশা, উপজেলা :  বরিশাল সদর, জেলা : বরিশাল
প্রশ্ন : ঢেঁড়সের সাদামাছি পোকার আক্রমণে কি করণীয়?
উত্তর : আশেপাশে বেগুন, তুলা, মেস্তা চাষ না করা। পোকার আক্রমণ বেশি হলে এসিফেট গ্রুপের এসাটাফ ০.৫ ১ গ্রাম/লিটার হারে স্প্রে করা।
সাহেব আলী, গ্রাম : বাঙ্গোরা, পো: বাঙ্গোরা, উপজেলা : সদর, মানিকগঞ্জ, জেলা : মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : ভুট্টার ক্ষেতে কাটুই পোকার আক্রমণে করণীয় কি?
উত্তর : আক্রান্ত জমিতে সেচ দিলে কাটুই পোকার কীড়া উপরের দিকে চলে আসে। পোকা খেকো পাখি বসার ব্যবস্থা করা। বিষটোপ ব্যবহার করা। কারটাপ ৬ কেজি/ হে: জমিতে প্রয়োগ করা। আক্রমণ বেশি হলে ক্লোরোপাইরিফস+সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের নাইট্রো ৫ মিলি/লিটার পানিতে স্প্রে করা।
আশরাফুজ্জামান, গ্রাম : মরশিদুকা, পো : মরশিদুকা, উপজেলা : মৌলভীবাজার সদর, জেলা : মৌলভীবাজার
প্রশ্ন : ব্রি ধান-৫৮ এর সার ব্যবস্থাপনা কি?
উত্তর : সার ব্যবস্থাপনা : প্রতি বিঘায় ইউরিয়া ৩০-৪০ কেজি, টিএসপি ৭-১৪ কেজি, এমওপি ৮-১৬ কেজি, জিপসাম ৪-১১ কেজি, জিংক ০.৭-১.৪ কেজি সার প্রয়োগ করতে হবে।
সর্বশেষ চাষের সময় সবটুকু টিএসপি, এমওপি, জিপসাম ও জিংক সালফেট সার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া তিন কিস্তিতে যথাক্রমে রোপনের ১০-১৫ দিন পর ১ম কিস্তি ৩০-৪০ দিন পর ২য় কিস্তি ও ৫০-৬০ দিন পর ৩য় কিস্তি প্রয়োগ করতে হবে।
নাজমুল হক, উপজেলা : মাদারীপর, জেলা : মাদারীপুর
প্রশ্ন : তরমুজ গাছের ডাল ঢলে পড়ে। গাছ শুকিয়ে যায়, চারা অথবা বয়স্ক গাছে বেশি হয়।
উত্তর : রোগাক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে  ফেলতে হবে। জমি থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে। কীটনাশক ব্যবহার করতে চাইলে কপার হাইড্রোক্সাইড গ্রুপের ২ গ্রাম চ্যাম্পিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মোসা: ফাতিমা, উপজেলা : আমতলী, জেলা : বরগুনা
প্রশ্ন : করলা গাছের পাতাগুলো ছোট ছোট হয়ে যাচ্ছে। গাছ বড় হয় না, বিভিন্ন জায়গায় পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। করণীয় কি?
উত্তর : রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত ডালপালা কেটে মাটিতে পুঁতে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ক্ষেতের আশেপাশের আগাছা ধ্বংস করতে হবে। রোগ বেশি দেখা দিলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের টিডো ০.৫ মিলি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল : iopp@ais.gov.bd

 

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
জনাব মামুন মিয়া, উপজেলা : বদলগাছী, জেলা : নওগাঁ
প্রশ্ন : আলুর শুকনো পচা রোগ কিভাবে দমন করব?
উত্তর : ফিউজারিয়াম প্রজাতির ছত্রাকের আক্রমণে আলুর শুকনো পচা রোগ  হয়। আলুর গায়ে কিছুটা গভীর কালো দাগ পড়ে ও ভেতরে গর্ত হয়ে যায়। প্রথম পচন ভিজা থাকলেও পরে তা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। আক্রান্ত অংশে গোলাকার ভাঁজ এবং কখনো কখনো ঘোলাটে সাদা ছত্রাক জালিকা দেখা যায়। এ রোগ দমন করার জন্য নি¤েœাক্ত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
    আলু ভালভাবে বাছাই গ্রহণ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
    যথাযথভাবে কিউরিং করে আলু গুদামজাত করতে হবে।
     ম্যানকোজেব গ্রুপের ডাইথেন এম-৪৫ দ্রবণ ০.২% দ্বারা বীজ আলু শোধন।
     বস্তা, ঝুড়ি, গুদামঘর ইত্যাদি ৫% ফরমালিন দিয়ে শোধন করতে হবে।
জনাব মো: আমজাদ মিয়া, উপজেলা : হরিরামপুর, জেলা : মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : আদা গাছের পাতা হলুদ হয়ে গাছ আস্তে আস্তে নেতিয়ে পড়ছে এবং শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি আদার কন্দ পচা বা রাইজম রট রোগ নামে পরিচিত, যা ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। কা-ের উপরের অংশে এ রোগ আক্রমণ করে। আক্রান্ত গাছের পাতা প্রথমে হলুদ হয়ে যায় কিন্তু গাছের পাতায় কোন দাগ থাকে না। পরবর্তীতে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। আক্রান্ত গাছের কন্দ পচে যায় এবং পচা দুর্গন্ধ বের হয়। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত গাছে রাইজম ফ্লাই নামক পোকার আধিক্য দেখা যায়। এ রোগ আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। কাঁচা গোবর পানিতে গুলে কন্দ শোধন করে ছায়ায় শুকিয়ে ব্যবহার করতে হবে। ২ গ্রাম হারে রিডোমিল গোল্ড ম্যানকোজেব ৬৪% মেটালেক্সিল ৮% বা নোইন ৫০ ডব্লিউপি (কার্বেন্ডাজিম) বা ম্যানকোজেব ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে আধা ঘণ্টা শোধন করে ছায়ায় শুকিয়ে ব্যবহার করতে হবে। স্টেবল ব্লিচিং পাউডার প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতকে) ২০ কেজি হারে শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। রোগ দেখা দেওয়া মাত্রই প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কমপ্যানিয়ন (ম্যানকোজেব ৬৩%+ কার্বেন্ডাজিম ১২% বা নোইন ৫০ ডব্লিউপি (কার্বেন্ডাজিম) বা রিডোমিল গোল্ড (ম্যানকোজেব ৬৪%+ মেটালেক্সিল ৮% বা ডাইথেন এম-৪৫ (ম্যানকোজেব) বা ১% বর্দোমিক্সচার মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
জনাব বিপ্লব, উপজেলা : রানীশংকৈল, জেলা : ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : মিষ্টি আলুর গাছে খর্বাকৃতির ও হলুদ রঙের হয়। পরে আক্রান্ত গাছ কালো কালো হয়ে যায়। গুদামজাত অবস্থায় টিউবারেও এ দাগ হয়। এই রোগ দমনে করণীয় কি?
উত্তর : রোগমুক্ত মিষ্টি আলুর লতা লাগাতে হবে। শস্যপর্যায় অবলম্বন করতে হবে। কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক  যেমন (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন+ থিরাম গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন- প্রোভ্যাক্স ২০০ উব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে তার মধ্যে লতা ডুবিয়ে শোধন করে নিয়ে জমিতে লাগাতে হবে। সংরক্ষিত টিউবারকে এ রোগের আক্রমন হতে রক্ষা করতে টিউবারকে সংরক্ষণের পূর্বে ভালোভাবে কিউরিং করে নিতে হবে। এ রোগ কমানোর জন্য কাটা, ছেঁড়া ও থেঁতলানো টিউবার বেছে নিতে নিখুঁত টিউবার সংরক্ষণ করতে হবে।
জনাব সিয়াম, উপজেলা : নলছিটি, জেলা : ঝালকাঠি
প্রশ্ন : বার্লির পাতায় ছোট ছোট দাগ পড়ে । পরে বাড়তে থাকে এবং গাঢ় বাদামি থেকে কালো বর্ণ ধারণ করে। এই রোগ কেন হচ্ছে এবং দমনে করণীয় কী?
উত্তর : গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। প্রোপিকোনাজন গ্রুপের ঔষধ টিল্ট ২৫০ ইসি (.০৫%) ০.৫ মিলি হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিতে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। ভিটাভেক্স ২০০ প্রতি কেজি বীজে (২.৫-৩.০) গ্রাম মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
জনাব রুবেল, উপজেলা : কুষ্টিয়া সদর, জেলা : কুষ্টিয়া
প্রশ্ন : লাউয়ের পাতার উপরের দিকে সাদা রঙের পাউডারের মতো দাগের সৃষ্টি হয়েছে। কী করণীয়?
উত্তর : লাউয়ের পাউডারি মিলডিউ রোগ (ড়রফরঁস ংঢ়ঢ়.) ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের কারণে পাতার উপরের দিকে সাদা রঙের পাউডারের মতো দাগের সৃষ্টি হয় এবং পরে দাগগুলো বড় হয়ে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের কারণে ফলের গুণগত মান কমে যায় এবং ফলন কমে যায়। আক্রমণ বেশি হলে পাতা হলুদ বা কালো হয়ে মারা যায়। আগাম বীজ বপন করতে হবে। রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে হেক্টর প্রতি  ১৫ কেজি সালফার গুড়া ক্ষেতের গাছে ছিটিয়ে দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে।  ৭ দিন পর পর ৩ বার প্রোপিকোনাজল ০.৫ মিলি বা সালফার (রনভিট)-২ গ্রাম/প্রতিলিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। বীজবপনের আগে প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম ইপ্রোডিয়ন রোভরাল বা মেনকোজেব গ্রুপের ডাইথেন এম-৪৫, ছত্রাকনাশক মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
জনাব সাগর আহমেদ, উপজেলা : পাটগ্রাম, জেলা : লালমনিরহাট
প্রশ্ন : মরিচের পাতা সাদা হয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে, কী করণীয়?
উত্তর : থ্রিপস পেকার আক্রমণে পাতা সাদা হয়ে কুঁকড়ে যায়। পোকা ও কীড়া পাতা ও কচি ডগার রস চুষে নেয়। আক্রান্ত গাছের পাতা নৌকার মতো উপরের দিকে গুটিয়ে যায়। আক্রান্ত ফুলের বোঁটা বাদামি রঙের হয়ে ঝরে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করতে হবে। সাবানের পানি (১০ লিটার পানিতে  ২০ গ্রাম) স্প্রে করা যেতে পারে। অতিরিক্ত আক্রমণ হলে প্রতি লিটার পানিতে ০.২৫ মিলি ইমিডাক্লোরপ্রিড (টিডো) বা আইসেপ্রোকার্ব (মিপসিন/সপসিন) ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পর পর ৩ বার।
জনাব মারুফ, উপজেলা : হরিরামপুর, জেলা :  মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : করলার পাতা ছোট হয়ে গুচ্ছ আকারে হয়ে গেছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি করলার মাইকোপ্লাজমাজনিত রোগ। আক্রান্ত গাছের পাতাগুলো গুচ্ছ আকারে দেখা যায়। গাছ বাড়ে না। ফুল ও ফল কমে যায়। বাহক পোকা হিসাবে জ্যাসিড পোকা দ্বারা এ রোগ ছড়ায়। এ রোগে আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে নষ্ট অথবা  পুড়ে ফেলতে হবে। রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। ক্ষেতের আশে পাশের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। বাহক পোকা ধ্বংস করার জন্য বালাইনাশক ইমিডাক্লোরপ্রিড (টিডো, এডমায়ার) ১ মিলি প্রতিলিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ৩ বার।
জনাব আবদুল মান্নান, উপজেলা : লোহাগড়া, জেলা : নড়াইল,
প্রশ্ন : মসুর গাছের পাতায় সাদা ছত্রাকের জালিকা দেখা যাচ্ছে। জমির কোন কোন অংশে গাছ কালচে বাদামি রং ধারণ করেছে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
উত্তর : স্টেমফাইলাম প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সৃষ্টি হয়। দূর থেকে আক্রান্ত ফসল আগুনে ঝলসানো মনে হয়। বীজ, বিকল্প পোষক, বায়ু প্রভৃতির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। আক্রান্ত জমিতে ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের রোভরাল-৫০ ডব্লিউ নামক ছত্রাকনাশক (০.২%) ১০ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
জনাব মামুন, উপজেলা : মুক্তাগাছা, জেলা : ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : কুল গাছে বিছাপোকা আক্রমণ করেছে।  এখন কী করণীয়?
উত্তর : বিছা পোকা কুল গাছের একটি মারাত্মক পোকা। এ পোকার আক্রমণ বেশি হলে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের রিপকর্ড ১ মিলি. প্রতি লিটার পানিতে অথবা ইবামেকটিন বেনজয়েট গ্রুপের প্রোক্লেম-১ গ্রাম/লি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে  ১০ দিন পরপর ৩ বার এবং গাছের গোড়া ও ডালপালা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
জনাব জামান, উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা :  বগুড়া
প্রশ্ন : রসুন গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে। সমাধানের উপায় কী?
উত্তর : ঝপষবৎড়ঃরঁস ৎড়ষভংরর নামক ছত্রাকের আক্রমণে রসুন গাছের গোড়া পচে যায়। এ রোগের আক্রমণে কন্দের গোড়ায় ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং পরে পচে যায়। এ রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে কপার অক্সি ক্লোরাইড গ্রুপের ৪ গ্রাম সুলকক্স বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ২ গ্রাম ব্যভিস্টিন মিশিয়ে চারার গোড়ায় স্প্রে করতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত চারা সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। আক্রান্ত জমিতে প্রতি বছর রসুন বা পেঁয়াজ চাষ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
জনাব মো: মামুন, উপজেলা : ঠাকুরগাঁও  সদর, জেলা : ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : ফুলকপির ফুল পচে কালো কালো হয়ে যাচ্ছে। কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : এটি ফুলকপির কার্ড পচা রোগ। এটি দুই প্রজাতির ছত্রাক ফিউজারিয়াম ইকোইজিটি ও অলটারনারিয়া প্রজাতি এবং আরউইনিয়া কেরোটোভোরা নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। ছত্রাক দ্বারা আক্রমণের ফলে ফুলকপির কার্ডে প্রথমে বাদামি রঙের গোলাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগগুলো একত্র হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে এবং কার্ড পচে যায়। আর ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত কার্ড খুব দ্রুত পচে যায়। বীজ বপনের আগে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক এমকোজিম/অটোস্টিন/ নোইন ২-৩ গ্রাম/ কেজি হারে বীজ শোধন করে রোপণ করতে হবে। ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক (কিউরেট ৫০ ডব্লিউ পি/ ইভারাল ৫০ ডব্লিউপি) অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক (অটোস্টিন/নোইন ২) গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে হলে বিসমার্থিওজল গ্রুপের ব্যাকটেরিয়ানাশক ব্যাকট্রল/থায়াজল/ব্যাকট্রোবান প্রতি লিটার পানিতে ৩-৪ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (পিপি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২; ই-মেইল :aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: দুলাল, উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা : বগুড়া।  
প্রশ্ন : লাউয়ের গাছের কা- ফেটে আঠা বের হচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : গাছের কা- ফেটে আঠা বের হওয়া এ রোগকে গ্যামোসিস বা আঠাঝরা রোগ বলে। এ রোগে আস্তে আস্তে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এ রোগ দমনে আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত কা-ে বর্দোপেস্ট (১০০ গ্রাম তুঁত+১০০ গ্রাম চুন+১ লিটার পানি) লাগাতে হবে এবং ১% বর্দোমিকচার বা (কপার অক্সিক্লোরাইড) ক্রপের যে কোন ছত্রাকনাশক (সানভিট) (০.৪%) রোগাক্রান্ত লাউগাছে সঠিক নিয়মে ৭ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে পারেন।
সবুজ চন্দ্র, উপজেলা : ফুলবাড়ি, জেলা : কুড়িগ্রাম।
প্রশ্ন : মুলার পাতায় দাগ দেখা যাচ্ছে। কি করণীয়?
উত্তর : মুলার পাতায় দাগ রোগ দেখা যায় অষঃবৎহধৎরধ নৎধংংরপধব ছত্রাকের কারণে। ছোট ছোট বাদামি দাগ পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে। রোগের আক্রমণ দেখা দিলে ইপ্রোভিয়ন গ্রুপের ইভারাল/ রোভরাল ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
শামীম মিয়া, উপজেলা : মিঠাপুকুর, জেলা : রংপুর।
প্রশ্ন : টমেটোর পাতা কোঁকড়ায়ে যাচ্ছে। কি করণীয়?
উত্তর : সাদা মাছি দ্বারা এ রোগের ভাইরাস ছড়ায়। পাতার গায়ে ঢেউয়ের মতো ভাজের সৃষ্টি হয় ও পাতা ভীষণভাবে কোঁকড়ায়ে যায়। আক্রমণ বেশি হলে পাতা মরে যায়। এ রোগের প্রতিকারে আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করতে হবে। ভাইরাসের বাহক পোকা দমনের জন্য ডায়মেথোয়েট, ইমিডাক্লোরাপিড (০.২৫ মিলি/লি:) যে কোন একটি কীটনাশক ১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মতিউর রহমান, উপজেলা : মোহনপুর, জেলা : রাজশাহী।
প্রশ্ন : পালং শাকের সার প্রয়োগ ও বীজ বপনের হার সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : সারের নাম ও শতক প্রতি পরিমাণ : গোবর- ৪০ কেজি, ইউরিয়া- ১ কেজি, টিএসপি- ৫০০ গ্রাম, এমপি- ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া ছাড়া সব সার জমির শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হয়। তবে গোবর জমি তৈরির প্রথম দিকে প্রয়োগ করাই উত্তম। ইউরিয়া সার চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ কিস্তিতে উপরিপ্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বীজ বপনের সময় আগস্ট ১৫ অক্টোবর ১৫।
বীজ বপনের হার প্রতি আল ৩৫-৪০ গ্রাম, প্রতি শতকে ১১৭ গ্রাম, প্রতি একরে ৯-১১ কেজি, প্রতি হেক্টরে ২৫-৩০ কেজি।
মো: শুভ, উপজেলা : জয়পুরহাট সদর, জেলা : জয়পুরহাট।
প্রশ্ন : পোকা ধানের শীষ কেটে দিচ্ছে। কি করতে পারি?
উত্তর : ধানের শীষ আসার পর ধানের শীষ কাটা লেদাপোকার (বৈজ্ঞানিক নাম : গুঃযরসধ ংবঢ়ধৎধঃধ) কীড়া শীষ কেটে ক্ষতি করে। মেঘলা আবহাওয়ায় এ পোকার বংশ বৃদ্ধি বেশি হয়। পোকা দমনের জন্য ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। ধান কাটার পর নাড়া পুড়ে ফেলে ও জমি চাষ দিতে ফেলে রাখতে হবে। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফসল সংগ্রহ করতে হবে। ক্ষেতে অধিকাংশ গাছে প্রতি বর্গমিটারে গড়ে অন্তত একটি করে কীড়ার উপস্থিতি থাকলে বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম কারবারিল গ্রুপের সেভিন), ২ মিলি. ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের (মর্টার ৪৮ ইসি) যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মো: রাকিব মিয়া, উপজেলা : জামালপুর সদর, জেলা : জামালপুর
প্রশ্ন :  বোরো ধানের বীজতলার চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। করণীয় কি?
উত্তর : চারা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি শতক বীজতলায় ২৮০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর চারা সবুজ না হলে প্রতি শতক বীজতলায় ৪০০ গ্রাম হারে জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত ঠা-ার সময় বীজতলাকে স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে।
মো: আবু সাইদ, উপজেলা : খানসামা, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : সরিষা গাছের পাতার নিচে পাউডারের মতো দেখা যাচ্ছে এবং পাতার উপরের অংশ হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কি করব?
উত্তর : এটি ডাউনি মিলডিউ রোগ নামে পরিচিত। এই রোগ দেখা দেয়া মাত্র ম্যানকোজেব গ্রুপের ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ম্যানকোজেব+ মেটালঅক্সিল এই গ্রুপের রিডোমিল এমজেড ৭২, ৭-১০ দিন অন্তর ৩ বার পুরো গাছে স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া সুষম সার সঠিক পরিমাণে সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত ক্ষেতে প্রতি বছর সরিষার চাষ না করে পর্যায়ক্রমে ফসল চাষ করা উচিত। এছাড়া বীজ বপনের পূর্বে বীজ শোধন (ভিটাভেক্স-২.৫ গ্রাম বা ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন প্রতি কেজি বীজ) করে নিলে এই রোগের প্রকোপ অনেকাংশে রোধ সম্ভব।
অনুপ কুমার, উপজেলা : লালপুর, জেলা : নাটোর।
প্রশ্ন : মরিচ গাছের কচি পাতা ও ডগার রস পোকা শুষে খেয়ে ফেলছে এবং গাছকে দুর্বল করে দিচ্ছে। প্রতিকার কি?
উত্তর : থ্রিপস পোকার আক্রমণে এই লক্ষণ দেখা যায়। পাতা শুকিয়ে যায় এবং গাছ দুর্বল হয়ে পরে। কুঁকড়ানো পাতা কুঁকড়ানো এড়াতে হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। করণীয় হিসেবে আগাম বীজবপন, সুষম সার ব্যবহার রোগের প্রাথমিক অবস্থায় গাছে ছাই ছিটিয়ে দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। জৈব বালাইনাশক হিসেবে ১ কেজি আধা ভাঙা নিম বীজ ২০ লিটার পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি পাতার উপরের দিকে স্প্রে করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ফিপ্রোনিল গ্রুপের (রিজেন্ট/এসেনড) গ্রুপের ডাইমেথয়েট (বিস্টারসোয়েট/ টাফগর) ১০ লিটার পানিতে ২০ মিলি হারে বা ১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করে এসব পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই মরিচ তুলে খাবেন না/বিক্রি করবেন না।
আব্দুল আলীম, উপজেলা : মনিরামপুর, জেলা : যশোর
প্রশ্ন : শসা গাছের কচি ফল ও ডগা পোকার কীড়া ছিদ্র করে ফেলছে। এখন কি করব?
উত্তর : শসা ও খিরার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিকারক পোকা ফলের মাছি পোকা। এ পোকা প্রথমে ফলের মধ্যে প্রথমে ডিম পাড়ে। পরবর্তীতে ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের ভিতর খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। আগাম বীজ বপন, সুষম সার ব্যবহার এবং ক্ষেত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে এই পোকার হাত থেকে ফসল রক্ষা করা অনেকাংশে সম্ভব। আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। সেক্সফেরোমেন ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। ফেরোমেনের গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে পুরুষ মাছি পোকা প্লাস্টিক পাত্রের ভেতরে প্রবেশ করে ও সাবান পানিতে পরে মারা যায়। জৈব বালাইনাশক যেমন: নিমবিসিডিন ৩ মিলি./লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। শতকরা ১০ ভাগের বেশি ক্ষতি হলে যে কোন বালাইনাশক যেমন সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের (রিপকর্ড ১ মি.লি)/ ১ লি.  ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের (ডেসিস ০.৫ মিলি) ৩ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মো: জালাল উদ্দিন, উপজেলা : আমতলী, জেলা : বরগুনা
প্রশ্ন : বাঁধাকপি গাছের গোড়া পোকা কেটে দেয়, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
উত্তর : কাটুই পোকা বা ঈঁঃ ড়িৎস এর আক্রমণে এ সমস্যা হয়ে থাকে। প্রতি লিটার পানিতে ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক (ডার্সবান/ লার্ভিন-২) গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ মিলি ১০ দিন পরপর ৩ বার মিশিয়ে গাছের গোড়ায় বিকালে স্প্রে করতে হবে। জমি চাষ দিয়ে মাটি উলট-পালট করে পোকা নষ্ট করতে হবে। জমিতে গভীর সেচ দিয়ে পোকা নষ্ট করতে হবে। বিষটোপ তৈরির জন্য এক কেজি চাউলের কুঁড়া বা গমের ভুসির সাথে ২০ গ্রাম পাদান অথবা কারবারিন গ্রুপের সেভিন কীটনাশক পানি বা চিটাগুড়ের সাথে মিশিয়ে তৈরি করতে হবে।
মো: আল আমিন, উপজেলা : শেরপুর সদর, জেলা : শেরপুর
প্রশ্ন : গম ফসল চাষের জন্য কতবার সেচের প্রয়োজন হয়?
উত্তর : গমে মাটির প্রকারভেদে সাধারণত ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময় (বপনের ১৭ থেকে ২১ দিন পরে), দ্বিতীয় সেচ গমের শীষ বের হওয়ার সময় (বপনের ৫৫ থেকে ৬০ দিন পর) এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় (বপনের ৭৫ থেকে ৮০ দিন পর) দিতে হবে। গমক্ষেতে ধানের মতো ঢালাও সেচ দিতে হবে না। নালা বা ফিতা পাইপের মাধ্যমে সেচের পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলন ৫৮% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ১ম সেচের পর একটি নিড়ানি দিলে ফলন প্রায় ১০ থেকে ১২ ভাগ বৃদ্ধি পায়।
মো: পারভেজ হোসাইন, উপজেলা: চারঘাট, জেলা : রাজশাহী
প্রশ্ন : মসুরে গোড়া পচা রোগের আক্রমণ হয়েছে? করণীয় কী?
উত্তর : এ রোগের জীবাণু স্কেলেরোসিয়াম রলফসি নামক এক প্রকার ছত্রাক। গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ক্রমান্বয়ে হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। মাটি ভিজা থাকলে গাছের গোড়ায় ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়াম ও সরিষার দানার ন্যায় স্কেলেরোসিয়াম গুটি দেখা যায়। এ জীবাণু গাছের অবশিষ্টাংশে বিকল্প পোষক ও মাটিতে বেঁচে থাকে এবং পরবর্তী বছরে ফসলে আক্রমণ করে। তাই ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং অধিক পরিমাণে জৈবসার ব্যবহার করতে হবে। বীজ লাগানোর আগে ভিটাভেক্স ২০০ (০.২৫%) হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক  যেমন নোইন ৫০ ডব্লিউপি অথবা (এমকোজিম ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মো: রবিউল আলম, উপজেলা : ধুনট, জেলা : বগুড়া
প্রশ্ন : আলুর পাতায় এলোমেলো গোলাকার দাগ দেখা যাচ্ছে যা, কালো রং হয়ে যাচ্ছে এবং পাতা পচে যাচ্ছে। কী করতে পারি?
উত্তর : এ রোগ প্রতিরোধে আগাম আলুর চাষ অর্থাৎ ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আলু রোপণ করা যেতে পারে। রোগসহনশীল জাত যেমন বারি আলু ৪৬, বারি আলু ৫৩ আলু চাষ করা যেতে পারে। নিম্ন তাপমাত্রায়, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের জন্য ৭ থেকে ১০ দিন অন্তর অন্তর ৩ বার ম্যানকোজেব গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন ডায়থেন এম-৪৫ বা পেনকোজেব ৮০ ডব্লিউপি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। রোগ দেখা দেয়ার পর আক্রান্ত জমিতে রোগ নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হবে। রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হলে ৩ থেকে ৪ দিন অন্তর ছত্রাকনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করতে হবে। ছত্রাকনাশক অবশ্যই পাতার উপরে ও নিচে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (পিপি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২; ই-মেইল : aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: আল ইমরান, উপজেলা- সাঘাটা, জেলা- গাইবান্ধা
প্রশ্ন : শিমের পচন রোগ হলে করণীয় কী?
উত্তর : রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা। আক্রমণ বেশি হলে টিল্ট-২৫০ ইসি অথবা ডাইথেন এম-৪৫, ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
আনোয়ার, উপজেলা- কটিয়াদী, জেলা- কিশোরগঞ্জ
প্রশ্ন : পেঁপে গাছের পাতার উপর হলুদ ও গায় সবুজ  রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। করণীয় কী?
উত্তর : পেঁপের মোজাইক ভাইরাস, ভাইরাসের বাহক জাবপোকা বালাইনাশক দ্বারা দমন করা। যেমন- সানপ্রোজিন-০৫ গ্রাম, ডাইমেথয়েট (০২%)।
ওসমান গনি, উপজেলা- শিবগঞ্জ, জেলা- বগুড়া
প্রশ্ন : আলু বীজ কিভাবে শোধন করতে হয়?
উত্তর : আলু বীজকে মারফিউরিক ক্লোরাইড ২ লিটার পানিতে ১ গ্রাম নিয়ে ১২ ঘণ্টা ডুরিয়ে নিলে ভাল হয়। এছাড়া ভিটাভেক্স ২০০ ১ লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম মিশিয়ে আলু ধুয়ে নেয়া যায়। এরপর ছায়ায় শুকিয়ে বীজ বপন করতে হবে।
মিজানুর রহমান, উপজেলা- রাজাপুর, জেলা- ঝালকাঠী
প্রশ্ন : ধান বীজ সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থাপনা কী?
উত্তর : ৮০% ধান পাকার পরেই একদিনে কেটে মাড়াই করে ৩/৪ দিন রোদে শুকাতে হবে। ছায়ায় ঠা-া করতে হবে ১২% আর্দ্রতায় আসলে। বায়ুরোধক পলিথিন এ বেঁধে ফেলতে হবে। শুকনো নিমপাতা দিয়ে ছালার বস্তায় সংরক্ষণ করতে হবে। শুকনো ছাই/শুকনো তুঁত কৌটার মধ্যে পাতলা কাপড়ে বেঁধে ধান বীজ রাখার পাত্রের মধ্যে পাত্রের মুখে দিয়ে সিল করতে হবে।
সুফিয়া রহমান, উপজেলা- বোদা, জেলা- পঞ্চগড়
প্রশ্ন : লবণাক্ততা কীভাবে কমাতে পারি?
উত্তর : ধান চাষ করলে সবসময় পানি ধরে রাখতে হবে। মিষ্টি পানি সংরক্ষণ/আটকে রাখতে হবে। জিপসাম সার ১০-১২ কেজি/ বিঘা প্রয়োগ করলে লবণাক্ততা দূর হয়। এছাড়া সবুজ সার চাষ করে মিশিয়ে দিলে অথবা সর্জান পদ্ধতিতে ফসল চাষ করে।
রায়হান কবির, উপজেলা- বাগেরহাট, জেলা- বাগেরহাট
প্রশ্ন : ধানক্ষেতে বাদামি গাছফড়িং প্রতিরোধের উপায় কী?
উত্তর : ২-৩ হাত পরপর বিলিকেটে জমিতে আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। লাইন ও লগো পদ্ধতিতে ধান লাগাতে হবে। ক্ষেতে উপকারী পোকামাকড় সংরক্ষণ (বোলতা, মাকড়সা/লেডি বার্ড বিটেল) করতে হবে। পাইমেট্রোজিন গ্রুপের ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
মারজান, উপজেলা- রাণীসংকৈল, জেলা- ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : টমেটোর পাতা কুঁকড়ে গেছে। সমস্যা কী?
উত্তর : সাদা মাছি দ্বারা ভাইরাস ছড়ায়। আক্রান্ত গাছ ছোট হয়ে থাকে। গাছে ছাই ছিটিয়ে দেয়া। এমিডাক্লোরাপিড গ্রুপের কীটনাশক (০.২৫ মিলি/লি.) পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ৩ বার ব্যবহার করা যেতে পারে।
কৃষক : মো: মুস্তাকিন, যশোর সদর, যশোর
প্রশ্ন : নারিকেলের ফল ঝরে যায়, করণীয় কি?
উত্তর : বোরণ ও পটাশ সার দিতে হবে, অতিরিক্ত রস পুষ্টির অভাবে হয় ঝরে যেতে পারে। গাছের গোড়ায় সুষম মাত্রায় সার দিতে হবে। মাকড়নাশক ব্যবহার করতে হবে। ১০ লিটার পানিতে ২৫/৩০ গ্রাম ওমাইট মিশিয়ে ফুট পাম্পের সাহায্যে ফল ও গাছের পাতা ১০-১৫ দিন অন্তর তিনবার ভিজিয়ে দিতে হবে।
কৃষক : মো: শামিম, উপজেলা- গোদাগাড়ি, জেলা- রাজশাহী
প্রশ্ন : করলার পাতায় ছোট ছোট হলুদ এবং পাতার নিচে গোলাপী ছত্রাক দেখা যায়, করণীয় কী?
উত্তর : গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা, গাছের রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ১-২ গ্রাম মিকিউর বা মেনকোজেব ২ গ্রাম ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
কৃষক : মো: শফিকুল ইসলাম, উপজেলা- কুমিল্লা সদর, জেলা- কুমিল্লা
প্রশ্ন : ধানের পাতার সবুজ অংশ মুড়িয়ে খেয়ে ফেলে, করণীয় কী?
উত্তর : জমির পাশে আলোর ফাঁদ এবং জমিতে পার্চিং করতে হবে। শতকরা ২৫ ভাগ পাতা আক্রান্ত হলে, হেক্টরপ্রতি ম্যালাথিয়ন ১.১২ লি:, সুমিথিয়ন ১.০ লি:, ডাইমেথোয়েট ১.১২ লি:, কারবারিল ১.৭০ কেজি ব্যবহার করতে হবে।
কৃষক : মো: রিপন, উপজেলা- সাতক্ষীরা সদর, জেলা- সাতক্ষীরা
প্রশ্ন : সরিষা চাষের জন্য ভালো জাতগুলোর নাম কী?
উত্তর : সরিষার জীবনকাল ৮৫-৯০ দিন। জমি থেকে আমন ধান কাটার পর আগাম সরিষা করা যায়। ভালো জাতগুলো বারি সরিষা ১৪, বারি সরিষা ১৭, বারি সরিষা ১৮ এবং বিনা সরিষা ৪, বিনা সরিষা ৯ এই জাতগুলো চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
কৃষক : মো: আবু সাঈদ, উপজেলা- পলাশবাড়ি, জেলা- গাইবান্ধা
প্রশ্ন : কলার পাতায় বড় দাগ সৃষ্টি করে ফলে পাতা পুড়ে যায়, করণীয় কী?
উত্তর : আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি প্রোপিকোনাজাল (টিল্ট-২৫০ ইসি) মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল: iopp@ais.gov.bd

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো. মেহেদী হাসান, উপজেলা : পত্নাতলা, জেলা : নওগাঁ।
প্রশ্ন : পান গাছে গোড়া পঁচা রোগ হয়েছে, করণীয় কী?
উত্তর : আক্রান্ত লতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলতে হবে। বরজ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সরিষার খৈলের সাথে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। রোগ দেখা দিলে ম্যানকোজেব/রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম/লিটার হারে ১০-১২ অন্তর স্প্রে করতে হবে।
মো. রিয়াজুল ইসলাম, উপজেলা : ফুলবাড়ি, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : ডালিমের গায়ে কালো বিক্ষিপ্ত ক্ষত দাগ হয়, প্রতিকার কী?
উত্তর : গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে। ফল মটরশুটির আকার হওয়ার পর থেকে ১ গ্রাম/লিটার পানিতে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ১৫ দিন অন্তর ৩-৪ বার ব্যবহার করতে হবে।
মো: সুজন, উপজেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন : পরিপক্ক পেয়ারা ফলের ভেতর লেদাপোকা দেখা যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : ফল ব্যাগিং করতে হবে। ১০০ গ্রাম থেতলানো কলা+৫ গ্রাম কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক+১০০ মিলি পানি মিশিয়ে বিষটোপ তৈরি করে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। ডাইমেথয়েট গ্রুপের কীটনাশক ২মিলি/লিটার হারে ব্যবহার করতে হবে।
মো. মেহেদী হাসান, উপজেলা : গফরগাঁও, জেলা : ময়মনসিংহ।
প্রশ্ন : লাউ গাছের পাতাতে হলুদ এবং সাদা দাগ পড়লে কোন রোগ হয় এবং এর জন্য করণীয় কী?
উত্তর : ডাউনিমিলডিউ রোগ হতে পারে। চংবঁফড়ঢ়বৎড়হড়ংঢ়ড়ৎধ পঁনবহংরং ছত্রাকের কারণে হয়। এ রোগ প্রতিরোধে রোগ প্রতিরোধ জাত ব্যবহার; সুষম সার ব্যবহার; টিল্ট-২৫০ ইসি-০.৫ মিলি/লিটার; আক্রমণ বেশি হলে হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি সালফার গুঁড়া ক্ষেতের গাছে ছিটিয়ে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
তরিকুল ইসলাম, উপজেলা : দিনাজপুর, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : আমন ধানের সারের পরিমাণ।
উত্তর : বিঘাপ্রতি ইউরিয়া-২৬ কেজি, টিএসপি-৮ কেজি, এমওপি-১৪ কেজি, জিপসাম-৯ কেজি। ইউরিয়া ৩ ভাগের ১ ভাগ এবং বাকি অন্যান্য সার শেষ চাষের সময় দিতে হবে এবং ১ ভাগ গাছ লাগানোর ১৫-২০ দিন পর এবং বাকি ১ ভাগ কাইচথোড় আসার ৫-৭ দিন আগে।
মো. জব্বার হোসেন, উপজেলা : সদর, জেলা : নরসিংদী।
প্রশ্ন : আমন ধানের উৎপাদন কিভাবে বাড়াবো?
উত্তর : ১. মাটি ব্যবস্থাপনা (উর্বর, সমতল ও উপযুক্ত গভীরতায় কর্ষন); ২. মানসম্মত বীজ বাছাই; ৩. বীজতলার সঠিক পরিচর্যা; ৪. চারা ২৫-৩০ দিনে তোলা ও দ্রুততার সাথে রোপণ করা; ৫. উন্নত সার ব্যবস্থাপনা; ৬. ৪০ দিন পর্যন্ত জমি সম্পূর্ণ আগাছামুক্ত রাখা; ৭. বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) ও উপযুক্ত সময়ে কর্তন।
মো. ইয়াকুব মোল্লা, উপজেলা : মোল্লারহাট, জেলা : বাগেরহাট।
প্রশ্ন :  ধান রোপণের ১ মাস পর লবণাক্ততার সমস্যা। করণীয় কী?
উত্তর : জমিতে পানি বেঁধে রাখতে হবে। মিষ্টি পানির সেচ/বৃষ্টি হলে তা আটকে রাখা। লবণ পানির প্রবেশ ঠেকাতে হবে। লবণসহিষ্ণু জাতের ধান (ব্রি ধান৫৩/ব্রি ধান৫৪/ব্রিধান৫৫ /ব্রি ধান৭৮/ব্রি ধান৬৭) চাষ করা।
মো. মামুন হোসেন, উপজেলা : দুর্গাপুর, জেলা : রাজশাহী।
প্রশ্ন :  পাটের পচন পদ্ধতি কী?
উত্তর : পানির যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকলে ডোবা/খাল/সামান্য স্রােত থাকে এমন নদীতে তাড়াতাড়িভাবে জাগ দিয়ে পাট পচানো যায়। তবে পানির স্বল্পতা থাকলে কাঁচা পাটের ছাল ছাড়িয়ে বেড়ীর ন্যায় বেধে/রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানো যায়।
মো. মাসুদ রানা, উপজেলা : সদর, জেলা : টাংগাইল।
প্রশ্ন :  পুঁইশাকের পাতায় লালচে রঙের ছোট ছোট দাগ হয়। পরবর্তীতে করণীয় কী?
উত্তর : রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক বিকেলে প্রতি ৭ দিন পরপর এভাবে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। পাশাপাশি সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে এবং আক্রান্ত পাতাগুলো তুলে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে।
মো. আজগর আলী, উপজেলা : ঘিওর, জেলা : মানিকগঞ্জ।
প্রশ্ন : নারিকেল বাড রট হলে করণীয় কী?
উত্তর : আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। বর্দোমিকচার (১%) মিশিয়ে স্প্রে করা এবং আক্রান্ত নারিকেল সংগ্রহ করে পুঁতে ফেলতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল :iopp@ais.gov.bd

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো. মাইদুল ইসলাম, গ্রাম: তাম্বুলখানা, উপজেলা: ফরিদপুর সদর, জেলা: ফরিদপুর
প্রশ্ন: ভুট্টা পাতায় ছোট ছোট দাগ পড়ে। পরে বাদামি হয়। এ সমস্যা দূরীকরণে কী করব ?
উত্তর : এ ধরনের সমস্যাকে ভুট্টা পাতায় দাগ বা কারভুলারিয়া লিফ স্পট বলা হয়। বেশি আর্দ্রতা ও তাপমাত্রায় আক্রমণ বাড়ে। আর এ রোগের জীবাণু মাটিতে এবং আক্রান্ত গাছে  থাকে। পরে বাতাস ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। প্রথমে ভুট্টার পাতায় ছোট ছোট গোল অথবা ডি¤¦াকৃতির হলুদাভ দাগ পড়ে। পরবর্তীতে এ দাগগুলো বাদামি রঙ ধারণ করে এবং আকারে বড়  হয়ে কখনো কখনো প্রায় ১ সেমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ সমস্যা রোধে রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করার সাথে সাথে ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। আগাম বীজ বপনও রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত ফসলে কার্বেন্ডাজিম+ম্যানকোজেব গ্রæপের ছত্রাকনাশক যেমন কমপ্যানিয়ন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার ¯েপ্র করতে হবে। আশা করি উপকার পাবেন।
মো: ইমতিয়াজ আহমেদ, গ্রাম: ধল্লাপারা, উপজেলা: ঘাটাইল, জেলা: টাঙ্গাইল
প্রশ্ন: আমন ফসলে বøাস্ট রোগের দমনে কী করণীয় ?
উত্তর :  আমন মওসুমে সুগন্ধি জাতে এ রোগটি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশি বৃষ্টি হলে এবং তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকলে প্রথমে পাতায় পাতাবøাস্ট দেখা যায়। পরবর্তীতে শীষ বের হলে শীষ বøাস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে সব জমিতে পাতাবøাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে সে সব জমিতে ছত্রাকনাশক যেমন ট্রুপার ৫৪ গ্রাম প্রতি বিঘাতে অথবা নেটিভো ৩৩ গ্রাম প্রতি বিঘাতে অথবা ট্রাইসাইক্লাজোল গ্রæপের অনুমোদিত  ছত্রাকনাশক পরিমাণ মতো ৫ থেকে ৭ দিন পরপর দু’বার স্প্রে করতে হবে। রোগটি পাতা থেকে শীষেও যেতে পারে তাই শীষ বের হওয়ার সাথে সাথেই শেষ বিকেলে এসব ছত্রাকনাশক একই নিয়মে আগেভাগেই স্প্রে করতে হবে। আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।
মো. খাদেমুল ইসলাম, গ্রাম: খাটুরিয়া, উপজেলা: ডোমার, জেলা: নীলফামারী
প্রশ্ন: আলু গাছের গোড়ার দিকে কালো দাগ পড়ে। আলু গাছ শক্ত ও মট করে ভেঙে যায়। এমনকি আলু গাছের কাÐের সাথে ছোট সবুজ আলু দেখা যায়। এ অবস্থায় কী করণীয়। জানাবেন।
উত্তর : আক্রান্ত গাছগুলোকে তুলে পুড়ে ফেলতে হবে। সুস্থ বীজআলু বপন করতে হবে পাশাপশি সুষম সার প্রয়োগ করাও প্রয়োজন। কার্বেন্ডাজিম গ্রæপের অটোস্টিন অথবা কার্বোক্সিন ও থিরাম  সমৃদ্ধ গ্রæপ প্রোভ্যাক্স ২০০ ডবিøউপি প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।  মেনকোজেব গ্রæপের ডাইথেন এম ৪৫ প্রতি ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে। তাহলে আপনার উল্লিখিত এ সমস্যার সমাধান পাবেন।
মো: রঞ্জু মিয়া, গ্রাম: সাকোয়া  উপজেলা: বোদা, জেলা: পঞ্চগড়
প্রশ্ন :  শুদ্ধ/বিশুদ্ধ/ভেজালমুক্ত বোরন সার চিনব কিভাবে ?
উত্তর : বোরন সার চেনার উপায় ১ গøাস পানিতে ১ চা চামচ বোরন সার বা বোরিক এসিড বা সলুবর মিশাতে হবে। যদি স্বচ্ছ দ্রবণ তৈরি হয় এবং কোনো তলানি না পড়ে তাহলে বুঝা যাবে বোরন সারটি ভালো। তবে নিশ্চিত হবার জন্য ১ চিমটি বেরিয়াম ক্লোরাইড বোরন সারের দ্রবণে মিশালে যদি পরিষ্কার দ্রবণ তৈরি হয়। তবে সারটিতে ভেজাল নেই। আর যদি সারটি সোডিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরি হয় সেক্ষেত্রে দ্রবণটি দুধের মতো সাদা হয়ে যাবে। তার মানে বোরন সারটি ভেজাল। আশা করি বোরন সার ভেজাল কি না সে পরীক্ষাটি এখন করতে পারবেন।
মো. জহুরুল ইসলাম গ্রাম:  তৈলটুপি, উপজেলা: হরিণাকুÐু, জেলা: ঝিনাইদহ
প্রশ্ন : সজিনা গাছের সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : সজিনা গাছ লাগানোর পরের বছরে প্রতি গাছের জন্য ৪০ থেকে ৫০ কেজি পচা গোবর, ৫০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি এবং জিপসাম, বোরাক্স ও জিঙ্ক সালফেট ৫০ গ্রাম করে সার প্রয়োগ করতে হয়। সেক্ষেত্রে দুপুর বেলায় সূর্যের আলো গাছের উপর পড়লে, গাছ যে পরিমাণ জায়গায় ছায়া প্রদান করে, সেই পরিমাণ জায়গা নির্বাচন করতে হয়। পরবর্তীতে গাছের চতুর্দিকে সে পরিমাণ জায়গায় মাটি কোদাল দিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে সার মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর প্রতি বছরে প্রতি গাছের জন্য ৪০-৫০ কেজি পচা গোবর ঠিক রেখে ৫০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, টিএসপি. ও এমওপি সার এবং জিপসাম, বোরাক্স ও জিঙ্ক সালফেট সার ২০ গ্রাম করে বর্ধিত হারে প্রয়োগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে সজনে গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। সে কারণে উঁচু জায়গাতে সজনে গাছ লাগানো দরকার। বর্ষাকালে পানি নিকাশ ও খরা মৌসুমে সেচ প্রদান করাও প্রয়োজন।
মো.  মিজানুর রহমান, গ্রাম: ফুলগাছ, উপজেলা: লালমনিরহাট সদর, জেলা: লালমনিরহাট
প্রশ্ন :  মুগডালের পাতা কেমন জানি ছোট ছোট দাগ পড়েছে এবং পাতাগুলোতে ছিদ্র দেখা যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধান জানাবেন।  
উত্তর :  সারকোস্পোরা ক্রয়েন্টা নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। পাতায় ছোট ছোট লালচে বাদামি বর্ণের গোলাকৃতি হতে   ডিম্বাকৃতির দাগ পড়ে। এমনকি আক্রান্ত পাতা ছিদ্র হয়ে যায়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে সম্পূর্ণ পাতা ঝলসে যায়। পরিত্যক্ত ফসলের অংশ, বায়ু ও বৃষ্টির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। বেশি আর্দ্রতা (৮০%) এবং উচ্চ তাপে (২৮ ডিগ্রি সে.) এ রোগ দ্রæত বিস্তার লাভ করে। সে  কারণে এ রোগ প্রতিকারে অটোস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে ১২ থেকে ১৫ দিন অন্তর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে। এছাড়া রোগ প্রতিরোধী জাত বারি মুগ-২, ৩, ৪ এবং ৫ ব্যবহার করতে হবে। আশা করি উপকার পাবেন।
মৎস্য বিষয়
শেফালী বেগম, গ্রাম: আগমাড়াই, উপজেলা: রাজবাড়ী সদর, জেলা: রাজবাড়ী
প্রশ্ন : চিংড়ি মাছের খোলস কালো হয়ে গেছে কী করব ?
উত্তর : আক্রান্ত চিংড়ির খোলসে কালো দাগ পড়লে চিংড়ির খোলস ভেঙে যায়। আক্রান্ত চিংড়ি ধীর গতিতে চলাফেরা করে এবং আহার বন্ধ করে দেয়। এ রোগ প্রতিরোধে ০.৫ থেকে ১০০ পিপিএম ম্যালাকাইট গ্রীন এবং ২০ থেকে ৭৫ পিপিএম ফরমালিন মিশ্রিত করে ব্যবহার করলে এ রোগ সেরে যাবে। এছাড়া খাবারের সাথে ০.৫ থেকে ১০০ পিপিএম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন বা ডক্সাসিলিন ব্যবহার করা হলে এ রোগ সেরে যাবে।
মোঃ হাফিজুর রহমান, গ্রাম: নলুয়া, উপজেলা: কচুয়া, জেলা: চাঁদপুর
প্রশ্ন : মাছের  পেট ফোলা বা শোথ রোগ হয়েছে কী করব ?
উত্তর : এ্যারোমোনাস ব্যাকটেরিযা নামক জীবাণুর সংক্রমণের দ্বারা কার্প ও শিং জাতীয় মাছে এর রোগ হয়। এ রোগ সাধারণত বড় মাছে হয়। মাছের দেহ অভ্যন্তরে এক বা একাধিক অঙ্গে তরল পদার্থ জমে যায়। দেহের ভেতরে সবুজ বা হলুদ তরল পদার্থ দেখা যায়। পেট ফুলে উঠে। চোখ  বের হয়ে আসে। আইশ ঢিলা হয়ে যায় ও ফুলে ওঠে। পেটে চাপ দিলে মলদ্বার দিয়ে পানি বের হয়ে আসে দেহের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। মাছ উল্টো হয়ে ভেসে ওঠে। অল্প খাবার খায়। তরল পিচ্ছিল পদার্থ বের হয়। দেহের পিচ্ছিলতা কমে যায়। এ রোগে আক্রান্ত মাছ সাধারণত ভালো হয় না। প্রাথমিক অবস্থায় পুকুরে প্রতি ঘনমিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মাছের দেহের জমাকৃত তরল সিরিঞ্জের সাহায্যে বের করে প্রতি ৪ কেজি ওজনের জন্য ১০ মিলিগ্রাম হারে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ইনজেকশন সপ্তাহে দু’বার দিতে হবে বা প্রতি কেজি খাবারের সাথে ১০০ মিলিগ্রাম রেনামাইসিন  পাউডার মিশিয়ে ৭ দিন খাওয়াতে হবে। আর এ রোগ যাতে করে না হয় সেজন্য পুকুর প্রস্ততির সময় শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন প্রয়োগ করতে হবে।   
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
মোঃ রহমত আলী,  গ্রাম: দূর্গাপুর, উপজেলা: সাভার, জেলা: ঢাকা
প্রশ্ন : কবুতরের মুখে ঘা, গায়ে বসন্তের মতো গুটি উঠেছে। কী করব ?
উত্তর :  কবুতরের বসন্ত রোগের জন্য টিকা দিতে হয়। তাহলে এ রোগ হওয়ার আশক্সক্ষা থাকে না। পরবর্তীকালে কবুতরের বাচ্চাকে বসন্তের টিকা দিবেন। আর বর্তমানে আপনি ফ্রা সি ১২ পাউডার ২ গ্রাম ১ লিটার পানিতে, রেনামাইসিন ট্যাবলেট ১ টা ৩ লিটার পানিতে এবং রেনা সি পাউডার ১ গ্রাম ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৩ থেকে ৫ দিন খাওয়াবেন। আশা করি উপকার পাবেন।
মোঃ আশরাফুল ইসলাম, গ্রাম: ভরতের কান্দি, উপজেলা:   শিবপুর, জেলা: নরসিংদীী
প্রশ্ন : মুরগির সর্দি লেগেছে। নাক দিয়ে পানি পড়ে। ঘড় ঘড় শব্দ করে। কখনো ব্যঙের মতো করে ডাকে। কী করব ?
উত্তর : মুরগির মাইকো প্লাজমোলাইসিস  রোগ এর লক্ষণ। এ রোগ হলে মুরগির ভেতরে কফ জমে গিয়ে নিঃশ^াস নিতে পারে না। তাই ঘড় ঘড় শব্দ করে বা কখনো ব্যাঙের মতো ডাকে। এ রোগের প্রতিকার হিসেবে ১ লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম টাইলোসেফ পাউডার, ১ গ্রাম ডক্সিভেট পাউডার ও ১ গ্রাম নিউএক্সেল পাউডার মিশিয়ে ২ বেলা করে খাওয়াতে হবে।
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, ফোন নং: ০২-৫৫০২৮৪০০, ই-মেইল:taufiquedae25@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আয়েশা সুলতানা

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: তুহিন, উপজেলা : পিরগঞ্জ, জেলা : রংপুর।
প্রশ্ন : ফুলকপির আগাম জাত সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে উদ্ভাবিত বা আমদানিকৃত ফুলকপির বিভিন্ন আগাম জাত রয়েছে। তার মধ্যে বারি ফুলকপি-২ অন্যতম। প্রতিটি ফুলকপির গড় ওজন ৭৫০-৮০০ গ্রাম। বীজ বপন থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে ফুলকপি খাওয়ার উপযুক্ত সময়। ভাদ্র থেকে মধ্য কার্তিক রোপণ করা যায়। ফলন ২৫ টন/হেক্টর হয়। এ ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিকৃত হাইব্রিড বীজসমূহ মধ্য শ্রাবণ থেকে মধ্য ভাদ্র মাসে বপন করা যায়।
মো: কামাল, উপজেলা : হাজীগঞ্জ, জেলা : চাঁদপুর।
প্রশ্ন :  পেয়ারার ফলে অসমান কালো দাগ দেখা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : সাধারণত কলেটোট্রিকাম সিডি নামক ছত্রাক পেয়ারার এ রোগের কারণ। একে এ্যানথ্রাকনোজ রোগ বলে। এ রোগের আক্রমণে পেয়ারার গায়ে ছোট বাদামি দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে পেয়ারার গায়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। অনেক সময় ফল ফেটে যায় এবং ফলের শাঁস শক্ত হয়ে যায়। এ রোগের প্রতিকারে গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। গাছে ফুল ধরার পর টপসিন-এম প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ৩-৪ বার ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
 মো: রহিম, উপজেলা : হাতিবান্ধা, জেলা : লালমনিরহাট।
প্রশ্ন : পাটের কা- পচা রোগে করণীয় কী?
উত্তর : ম্যাক্রোফোমিনা ফেসিওলিনা ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগটি হয়ে থাকে। এ রোগের প্রতিকার ব্যবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে রোগমুক্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে ফেলতে হবে। বীজ বপনের পূর্বে প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম হারে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে। সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করতে হবে। রোগ দেখা দিলে ম্যানকোজেব (২ গ্রাম) অথবা প্রোপিকোনাজল (০.৫ মিলি) অথবা হেক্সাকোনাজল/টেবুকোনাজল ২ মিলি/লিটার হারে স্প্রে করতে হবে। উল্লেখ্য, ফসল কাটার পর শস্য অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে।
মো: আরমান, উপজেলা : খেতাবগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : তুলার উন্নত জাত ও বপন সময় সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল যেমন- সিবি ১৬, সিবি ১৭, সিবি ১৮, সিডিবি তুলা এম-১, সিবি হাইব্রিড-১ জাতের তুলা মধ্য জুলাই থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত বপন করা যেতে পারে।
মো: জনি, উপজেলা : বাগমারা, জেলা : রাজশাহী।
প্রশ্ন : আমের বোঁটা পচা রোগে করণীয় কী?
উত্তর :  লেসিওবট্রিডিপ্লোডিয়া প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা এ রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকে। এ রোগের প্রতিকারে পরিষ্কার ও বৃষ্টিহীন দিনে আম সংগ্রহ করতে হবে, আম পাড়ার সময় একটু (১ সেমি.) বোটাসহ গুদামজাত করতে হবে। ৫২০ সে. তাপমাত্রায় পানিতে ১০ মিনিট ডুবানোর পর গুদামজাত করতে হবে। বাগানে এ রোগটি হয় জানা থাকলে সালফার জাতীয় যেকোন ছত্রাকনাশক ২০ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে গুলে ১৫ দিন অন্তর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মো: রুবেল, উপজেলা : ফুলপুর, জেলা : ময়মনসিংহ।
প্রশ্ন : আমন মৌসুমে চাষ উপযোগী ধানের কি কি উন্নত জাত আছে?
উত্তর : চলতি আমন মৌসুমে ব্রি ধান১০৩, ব্রি ধান৯৫, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯১, ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৭৯, ব্রি ধান৭৮, ব্রি ধান৭৭, ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৭৩, ব্রি ধান৭২, ব্রি ধান৭১, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৬৬, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৫৪, ব্রি ধান৫৩, ব্রি ধান৫২ ব্রি হাইব্রিড ধান৬, ব্রি হাইব্রিড ধান৪ বিনা ধান-২৩, বিনা ধান-২২, বিনা ধান-১৭, বিনা ধান-১৬, বিনা ধান-১১, বিনা ধান-৭, সহ আরও অনেক জাত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আপনার এলাকায় চাষ উপযোগী যেকোন জাত আপনি চাষ করতে পারেন।                
মো: মাহবুব ইসলাম, উপজেলা : মঠবাড়িয়া, জেলা : পিরোজপুর।
প্রশ্ন :  বরবটির ফল ছিদ্র করে ভেতরে পোকা থাকছে, কী করতে পারি?
উত্তর : ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে এ লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। এ পোকা দমন ব্যবস্থাপনায় আক্রান্ত ফল ও ফুল কীড়াসহ সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলতে হবে এবং মাটিতে পড়ে যাওয়া পাতা ও আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে; গাছের কা- ও পাতায় ছাই ছিটিয়ে দিতে হবে। রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা হিসেবে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ মিলি হারে মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
মো: নোমান, উপজেলা : সিলেট সদর, জেলা : সিলেট।
প্রশ্ন :  চালকুমড়ার পাতায় গোলাকার সাদা পাউডারের মতো দাগ দেখা যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : ঙরফরঁস ংঢ়ঢ় গ্রুপের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগ প্রতিকারে সঠিক মাত্রায় সার ও সেচ প্রয়োগ করতে হবে। ম্যানকোজে + মেটালেক্সিল ২ গ্রাম অথবা হেক্সাকোনাজল প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি বা কার্বেন্ডাজিম প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে স্প্রে করতে হবে।
মো: মোত্তালিব, উপজেলা : গৌরনদী, জেলা : বরিশাল।
প্রশ্ন : পানের পাতা পচা রোধে করণীয় কী?
উত্তর : কলেটোট্রিকাম পিপারিস ছত্রাকের আক্রমণে পাতায় পানি ভেজা বিক্ষিপ্ত দাগের সৃষ্টি হয়। এ রোগের প্রতিকারে সুষম সার ব্যবহার প্রথম শর্ত। এ ছাড়াও রোগমুক্ত লতা বপন করতে হবে। আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ১% বোর্দোমিশ্রণ বা ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে বিকাল বেলা স্প্রে করতে হবে।
মো: জাহিদ, উপজেলা : শাহজাহানপুর, জেলা : সিরাজগঞ্জ।
প্রশ্ন : ভুট্টার পাতা ধূসর বর্ণের দাগ হয়ে সমস্ত পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর :  রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ, ঝরা পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত জমিতে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে প্রোপিকোনাজল/হেক্সাকোনাজল/টেবুকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মো: সুলতান, উপজেলা : বিজয় নগর, জেলা : ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
প্রশ্ন : পুঁইশাকের পাতায় কালো গোল দাগ হচ্ছে, কী করতে পারি?
উত্তর : সারকোস্পোরা প্রজাতির ছত্রাকের আক্রমণে পুঁইশাকে এই পাতায় দাগ রোগ হয়। এ রোগের প্রতিকারের জন্য রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে; আক্রান্ত পাতাগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে; প্রোভ্যাক্স/কার্বেন্ডাজিম প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। এ ছাড়াও রোগ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ২/৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী, উপজেলা : দৌলতপুর, জেলা : কুষ্টিয়া।
প্রশ্ন : কলাপাতা কিনারা হলুদ হয়ে পুড়ে যাওয়ার মতো দেখাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : ঈবৎপড়ংঢ়ড়ৎধ সঁংধব এ রোগের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়ে ফেলতে হবে; কলার জমিতে পানি নিস্কাশনের সুব্যবস্থা করতে হবে; কলা পাকার এক মাস আগ পর্যন্ত প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কার্বে-াজিম অথবা প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি ডাইফেনোকোনাজল অথবা প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হেক্সাকোনাজল স্প্রে করতে হবে।

লেখক : অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা, কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি। সংযুক্ত : কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৮৬৫৩২৫৫; ই- মেইল : ayesha_sultana07@yahoo.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন। 
আবু বক্কর সিদ্দিকী, উপজেলা : হাতীবান্ধা, জেলা : লালমনিরহাট
প্রশ্ন : ঢেঁড়সের পাতায় হলুদ-সবুজ রঙের দাগ পড়েছে এবং শিরাগুলো স্বচ্ছ হয়ে যাচ্ছে, কী করণীয়?
উত্তর : ঢেঁড়সের পাতার মোজাইক ও শিরা স্বচ্ছতা রোগ ণবষষড়ি াবরহ পষবধৎরহম সড়ংধরপ ারৎঁং এর আক্রমণে হয়। এর ফলে সব পাতা হলুদ ও সবুজ রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। পাতার শিরাগুলো স্বচ্ছ ও হলুদ হয়ে যায়। গাছের পাতা ছোট ও খর্বাকৃতি হয়। ভাইরাসের বাহক পোকা সাদা মাছি এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে নষ্ট অথবা পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। বাহকপোকা (জ্যাসিড/সাদা মাছি) দমনের জন্য অনুমোদিত বালাইনাশক যথা: ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রুপের টিডো বা এডমায়ার ০.৫ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ৩ বার ১০ দিন পরপর।
রেজাউল ইসলাম, উপজেলা : ডিমলা, জেলা : নীলফামারী
প্রশ্ন : তরমুজের পাতায় কালো কালো দাগ দেখা যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : তরমুজের এ্যানথ্রাকনোজ রোগ পড়ষষবঃড়ঃৎরপযঁস ংঢ়. ছত্রাকজনিত রোগ। পাতায় বাদামি  থেকে কালো দাগ দেখা যায়। এ  রোগের আক্রমণে পাতার বোটা, কা- ও ফলে কালো দাগ দেখা যায়। এ রোগ তাড়াতাড়ি বিস্তার লাভ করে এবং গাছ ও ফল সমূহের ক্ষতি করে। এরোগ দমনে ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। রোগাক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। বীজ বপনের পূর্বে প্রোভেক্স বা ভিটাভেক্স ২.৫ গ্রাম বা ব্যাভিস্টিন-২ গ্রাম দ্বারা প্রতি কেজি বীজ শোধন করতে হবে। রোগের আক্রমণ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের (ব্যাভিস্টিন) ১ গ্রাম বা ম্যানকোজেব গ্রুপের (ডাইথেন এম ৪৫) ছত্রাকনাশক ২.৫ গ্রাম প্রতিলিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
জহুরুল ইসলাম, উপজেলা : বোদা, জেলা : পঞ্চগড়
প্রশ্ন : চিচিঙ্গার পাতায় আঁকা বাঁকা রেখার মতো  দাগ পড়েছে, কী করতে হবে?
উত্তর : চিচিঙ্গার পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকার কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকাবাঁকা রেখার মতো দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝরে যায়। আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করে বা পুড়ে ফেলতে হবে। আঠালো হলুদ ফাঁদ স্থাপন  করতে হবে। সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক (কট ১০ ইসি বা রিপকর্ড) ১ মিলি./লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ৩ বার। স্প্রে  করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাওয়া যাবে না বা বিক্রি করা যাবে না।
নাঈম হোসেন, উপজেলা : সিরাজগঞ্জ সদর, জেলা: সিরাজগঞ্জ
প্রশ্ন : পাট চাষের জন্য বীজ হার ও সারের পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : পাটের বীজ ছিটিয়ে বুনলে ৬.৫-৭.৫ কেজি/ হেক্টর, লাইন করে বুনলে ৩.৫-৫.০০ কেজি/ হেক্টর। লাইন করে বুনলে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৩০ সেমি. বা একফুট এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৭-১০ সেমি. বা ৩-৪ ইঞ্চি হতে হবে। ভালোভাবে প্রস্তুতকৃত জমিতে বপনের ২-৩ সপ্তাহ আগে হেক্টরপ্রতি ৩.৫ টন গোবর সার মিশিয়ে দিতে হবে। বপনের দিন ১৫ কেজি ইউরিয়া, ১৭ কেজি টিএসপি ও ২২ কেজি এমওপি সার জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। অতঃপর বীজবপনের ৬-৭ সপ্তাহ পর ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার  ও চারা পাতলা করে হেক্টরপ্রতি ১০০ কেজি ইউরিয়া সার জমিতে পুনরায় ছিটিয়ে দিতে হবে।
আব্দুর রহিম, উপজেলা : রাজারহাট, জেলা : কুড়িগ্রাম
প্রশ্ন : পুঁইশাকের শিকড়ে গিট দেখা যাচ্ছে, কী করণীয়?
উত্তর : পুঁইশাকের শিকড়ে কৃমির আক্রমণে ছোট ছোট গিট দেখা যায়। গিটগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়। আক্রান্ত গাছ ছোট, দুর্বল ও হলদে হয়ে যায়। রোগাক্রান্ত শিকড়ে সহজেই পচন ধরে। একসময় গাছ মরে যায়। এ রোগ দমনে কার্বোফুরান হেক্টরপ্রতি ৪৫ কেজি হারে ব্যবহার করতে হবে। একই জমিতে বারবার পুঁইশাক চাষ করা যাবে না। চারা উৎপাদনের আগে বীজতলায় ৬ সেমি. পুরু স্তরে কাঠের গুঁড়া বিছিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে কৃমি ও অন্যান্য রোগজীবাণু দমন করতে হবে। বীজ বা চারা লাগানোর তিন সপ্তাহ আগে হেক্টর প্রতি আধা পচা মুরগির বিষ্ঠা ৫-১০ টন ও সরিষার খৈল ৩০০-৬০০ কেজি প্রয়োগ করে জমিতে পচালে কৃমি দমন করা যায়।
জনাব সবুজ, উপজেলা : মধুখালী, জেলা : ফরিদপুর
প্রশ্ন : টমেটোর পাতায় ভেজা কালচে দাগ দেখা যাচ্ছে।  করণীয় কী?
উত্তর : এটি টমেটোর নাবী ধসা রোগ ঐধষরপ ঋমংঃ রহভবংঃড়হং নামক ছত্রাক দ্বারা এই রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত পাতায় প্রথমে ফ্যাকাশে অথবা ফিকে সবুজ গোলাকার বা এলোমেলো পানি ভেজা দাগ পড়ে। পরবর্তীতে তা কালচে থেকে বাদামি রং ধারণ করে। বেশি আক্রমণে কা- ও আক্রান্ত হয় এবং গাছ ঝলসে মারা যায়। ম্যানকোজেব+মেটালিক্সিল গ্রুপের রিডোমিল গোল্ড/করমিল/ মেটারিল ২ গ্রাম অথবা ম্যানকোজেব+ফেনামিডন গ্রুপের সিকিউর ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
জনাব মেহেদি, উপজেলা : পার্বতীপুর, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : কাঁকরোলের গায়ে ছিদ্র দেখা যায়। কারণ ও প্রতিকার কী?
উত্তর : এটি কাঁকরোলের ফল ছিদ্রকারী পোকা। এ পোকার কীড়া কচি ফল ও ডগা ছিদ্র করে ভেতরের শাস খায়। ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। থায়ামিথক্সাম+ ক্লোরানট্রানিলিপ্রলি জাতীয় কীটনাশক যেমন-ভলিয়ম ফ্লেক্সি ০.৫ মিলিলিটার অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক যেমন-ওস্তাদ ২ মিলিলিটার বা ম্যাজিক  ১ মিলিলিটার বা কট ১ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বা স্প্রে করতে হবে।
জনাব আরাফাত, উপজেলা : গফরগাঁও, জেলা : ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : তিল গাছের কা-ে খয়েরি রঙের দাগ পড়েছে। কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : এটি তিলের কা- পচা রোগের লক্ষণ। ম্যাক্রোফোমিনা ফ্যাসিওলিনা নামক ছত্রাকের কারণে এ রোগ হয়। এ রোগের আক্রমণে প্রথমে কা-ে পানিভেজা, ছোট, লম্বা ও আঁকাবাঁকা খয়েরি ও কালচে পড়া দাগ দেখা যায়। পড়ে দাগগুলো বড় হয় ও পুরোগাছে ছড়িয়ে পড়ে এবং এক সময় গাছ মারা যায়। কপার অক্সিক্লোরাইড জাতীয় ছত্রাকনাশক চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম/লিটার পানিতে বা বিটক্স ৪ গ্রাম/ লিটার পানিতে অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম/লিটার পানিতে অথবা ম্যানকোজেব গ্রুপের ডাইথেন এম ৪৫ ২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
উত্তম কুমার, উপজেলা : শেরপুর, জেলা : বগুড়া
প্রশ্ন : কাঁঠালের মুচি কালো হয়ে ঝরে পড়ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি কাঁঠালের মুচি পচা রোগ। ৎযরুড়ঢ়ঁং ংঢ়. নামক ছত্রাক ধারা এ রোগ হয়। এ ছত্রাকের আক্রমণের ফলে বাদামি দাগ পড়ে দাগগুলো কালচে হয় ও মুচি পচে যায়। পচা অংশে অনেক সময় সাদা মাইসেলিয়াম দেখা যায়। ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ডাইথেন এম-৪৫ বা ইন্সেফিল এম- ৪ ২ গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক এমকোজিম ২ গ্রাম অথবা প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে দশ (১০) দিন পর পর ২-৩ বার শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।
জনাব সজল, উপজেলা : মঠবাড়িয়া, জেলা : পিরোজপুর
প্রশ্ন : শসার পাতা ও ফলে কালো কালো দাগ দেখা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি শসার এনথ্রাকনোজ রোগ। পড়ষষবঃড়ঃৎরপযঁস ংঢ়. নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত পাতা ও ফলে ছোট ছোট কালো পচা দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে দাগগুলো একত্র হয়ে গাছ ও ফল পচে যায়। কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের নোইন ১ গ্রাম অথবা প্রোপিকোনাজল গ্রুপের টিল্ট ০.৫ মিলিলিটার বা কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম হারে স্প্রে করতে হবে ৭ দিন পরপর ৩ বার।
শরিফ, উপজেলা : নড়িয়া, জেলা : শরীয়তপুর
প্রশ্ন : আদা পাতার মাঝে ডিম্বাকৃতির দাগ দেখা যাচ্ছে। দাগগুলোর মাঝে সাদা বা ধূসর রং দেখা যায়। এই সমস্যা থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পেতে পারি?
উত্তর : আদার পাতায় দাগ পড়া একটি ছত্রাকবাহিত রোগ। পড়ষষবঃড়ঃৎরপযঁস ংঢ়. নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগের বিস্তার ঘটে। এ রোগের আক্রমণ দেখা দিলে ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক ডাইথেন এম ৪৫ ২ গ্রাম বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক ব্যাভিস্টিন বা নোইন প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধক জাত ও রোগমুক্ত গাছ থেকে কন্দ ব্যবহার করতে হবে।
আব্দুর রহিম, উপজেলা : আত্রাই,  জেলা : নওগাঁ
প্রশ্ন : বরবটি গাছে এক ধরনের পোকা পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলেছে। এই পোকা কিভাবে দমন করতে পারি?
উত্তর : বরবটি গাছে বিছা পোকার আক্রমণ হয়েছে। এ পোকার আক্রমণ দেখা দিলে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের রিপকর্ড ১ মিলি অথবা ফেনিট্রোথিয়ন গ্রুপের সুমিথিয়ন ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ৩ বার। এ ছাড়া পোকার ডিম ও বাচ্চা হাত দিয়ে বাছাই করতে হবে।
হুমায়ুন শেখ, উপজেলা : শ্রীপুর, জেলা : গাজীপুর
প্রশ্ন : কলাগাছের পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যাচ্ছে। দাগগুলো ক্রমশ বড় হয়ে বাদামি রং ধারণ করে এবং পাতা পুড়ে যাচ্ছে। কিভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি?
উত্তর : এটি কলাগাছের সিগাটোকা রোগ নামে পরিচিত। পবৎপড়ংঢ়ড়ৎধ সঁংধব নামক ছত্রাক দ্বারা ও রোগের বিস্তার ঘটে। প্রতিকার হিসেবে প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে ৩ বার। এ ছাড়া আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়ে ফেলতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২; ই-মেইল : aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আয়েশা সুলতানা

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: ফজলুল হক, উপজেলা : কিশোরগঞ্জ, জেলা : নীলফামারী।
প্রশ্ন : ধানের ছড়ার গায়ে কালো দাগ হয় এবং ছড়া খোলের মধ্যে আটকে থাকে। করণীয় কী?
উত্তর : ধানের খোলপঁচা রোগের কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে।Sarocladivm oryzac নামক জীবাণু দ্বারা এ রোগের বিস্তার ঘটে। কার্বোডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- দ্বারা বীজ শোধন করে নিলে সুফল পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি কেজি বীজের জন্য ৩ গ্রাম হারে ১ লিটার পানিতে গুলে এক রাত ভিজিয়ে রাখতে হয়। এ রোগের আক্রমণ হলে পরিমিত পরিমাণ ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হবে। জমির পানি শুকিয়ে আবার পানি দিতে হবে। প্রয়োজনে আক্রমনকালে ছত্রাকনাশক যেমন প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতিলিটার পানিতে ২ মিলি হারে বিকাল বেলা স্প্রে করতে হবে। পরবর্তীতে আবাদের জন্য এবং অন্য ফসলে রোগ আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ফসল কাটার পর ক্ষেতের নাড়া পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
মো: সাইফুল ইসলাম, উপজেলা : নলছিটি, জেলা : ঝালকাঠি।
প্রশ্ন :  চালকুমড়া গাছের কা-ে এবং পাতায় সাদা পাউডারের মতো দাগ দেখা যায়। প্রতিকার কী?
উত্তর : Oidium spp ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের প্রতিকারে সঠিকমাত্রায় সার ও সেচ প্রয়োগ করতে হবে। আক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম সালফার ৭-১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে অথবা ম্যানকোজেব + মেটালেক্সিল ২ গ্রাম/হেক্সাকোনাজল ১ মিলি/কার্বেন্ডাজিম ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে বিকাল বেলা স্প্রে করা যেতে পারে। পরবর্তী ফসলের আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য গাছের পরিত্যক্ত অংশ কেটে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
মো: মিঠুন মল্লিক, উপজেলা : চৌগাছা, জেলা : যশোর।
প্রশ্ন : বেগুনের কচি ডগা ঢলে পড়ে মারা যায়। কী করতে পারি?
উত্তর : বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এ পোকা দমনে প্রতিরোধ সহনশীল লম্বাজাত বেগুন চাষ করা যেতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার আক্রান্ত ডগা ও ফল ছিঁড়ে ধ্বংস করতে হবে এবং জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পুরুষ মথ ধরে এদের বংশ কমানো যেতে পারে। আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে কার্বোসালফান ৩ মিলি/কারটাপ ২.৫ গ্রাম/থারইপার মেথ্রিন ১ মিলি হারে স্প্রে করতে হবে।
মো: দুলাল, উপজেলা : নওয়াবগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : কচি নারিকেল কালো হয়ে ঝরে পড়ে। করণীয় কী?
উত্তর : Phytopthors palmivora নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের প্রতিকারে আক্রান্ত গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে সানডিট ৪ গ্রাম বা ডাইথেন এম-৪৫ ২.৫ গ্রাম বা বর্দোমিকচার (১%) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আক্রান্ত নারিকেল সংগ্রহ করে পুঁতে ফেলতে হবে।
মোহাম্মদ আলী, উপজেলা : মান্দা, জেলা : নওগাঁ।
প্রশ্ন : পটলে পানি ভেজা নরম পচা রোগ দেখা যায়, পরবর্তীতে পটল গাছসহ পটল নষ্ট হয়ে যায়। এর সমাধান কী?
উত্তর : Rhizoctonia sp নামক এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে। একে পটলের গোড়া ও ফল পচা রোগ বলা হয়। ফলে বা গাছে এ রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত গাছ বা পটল সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ সহনশীল জাত ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতি বছর পটল চাষ  না করে শস্য পর্যায় অনুসরণ করতে হবে। অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। পটলের শাখা ২ গ্রাম ব্যাভিষ্টিন/নোইন প্রতি লিটার পানিতে ভিজিয়ে শোধন করে লাগাতে হবে। রোগের আক্রমণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি প্রপিকোনাজল/২ গ্রাম কমপ্যানিয়ন/১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম/২ গ্রাম ম্যানকোজেব+ মেটালেক্সিল মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।
মো: আনোয়ার হোসেন, উপজেলা : মির্জাপুর, জেলা : টাঙ্গাইল।
প্রশ্ন :  পেঁপের মোজাইক রোগ সম্পর্কে জানতে চাই?
উত্তর :Apis gossypi  হচ্ছে এ রোগের বাহক। পেঁপে গাছের যে কোন বয়সে এ রোগ হতে পারে। পাতার উপর হালকা হলুদ ও গাড় সবুজ রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। গাছের ফল কম হয় এবং বিকৃত ও ছোট হয়। এ রোগের প্রতিকারে আক্রান্ত গাছ তুলে পুঁতে বা নষ্ট করতে হবে। ভাইরাসের বাহক জাব পোকা ও সাদা মাছি ডাইমেথয়েড ০.২% /ইমিডাক্লোরোপ্রিড ০.২% হারে ১০-১৫ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

লেখক : অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা, কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি। সংযুক্ত : কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৮৬৫৩২৫৫; ই- মেইল : ayesha_sultana07@yahoo.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
তামিম, উপজেলা : বীরগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : নারিকেল গাছের ছোট ছোট নারিকেল ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এর সমাধান কী?
উত্তর : নারিকেল গাছের ছোট নারিকেল ঝরে পড়ার মূল কারণসমূহ হলো ফুলে পরাগ সংযোগ না হওয়া, পোকার আক্রমণ হলে, মাটিতে পটাশ সারের অভাব হলে। এ জন্য একাধিক গাছ লাগাতে হবে যাতে পরাগায়ন হয়। নারিকেল গাছে পটাশ সার তুলনামূলক বেশি লাগে। এ ছাড়া বোরন স্প্রে করতে হবে। পূর্ণবয়স্ক গাছে ২ কেজি পটাশ ও বোরন ২ মিলি প্রতি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে দিয়ে স্প্রে করতে হবে। মাটিতে মাকড়ের আক্রমণে সালফার (কুমুলাস পাউডার স্প্রে করতে হবে)।
সোহেল, উপজেলা : বাকেরগঞ্জ, জেলা : বরিশাল
প্রশ্ন : টমেটো গাছের পাতা ও কা- ঢলে পড়ে এবং পরবর্তীতে গাছ মারা যায়। করণীয় কী?
উত্তর : রালস্টোনিয়া নামক মাটিবাহিত ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে টমেটো গাছের পাতা ও কা- ঢলে পড়ে এবং গাছ মারা যায়। এই রোগ দমনে প্রতিকার অপেক্ষা প্রতিরোধ শ্রেয়। মাটিবাহিত রোগ বিধায় রোগের জীবাণু মাটিতে থাকে। তাই প্লাবন সেচ দেয়া যাবে না। জমি চাষের সময় ব্লিচিং পাউডার ১৫-২০ কেজি প্রতি হেক্টরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে মাটিতে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। রোগাক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে এবং সেখানকার মাটি সরিয়ে নতুন মাটি দিয়ে নতুন গাছ লাগাতে হবে। লাগানোর আগে ব্যাকটেরিয়ানাশক দ্রবণে ১৫-২০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে লাগাতে হবে। এ ছাড়া বিসমার্থিওজল গ্রুপের ব্যাকট্রোল/ব্যাকট্রোবান/অটোব্যাক ২ গ্রাম প্রতি লিটারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
যাকারিয়া, উপজেলা : ভেড়ামারা, জেলা : কুষ্টিয়া
প্রশ্ন : ধানের পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে যায় ও পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। করণীয় কী?
উত্তর : ধান উৎপাদনে যে সব পোকার আক্রমণ হয় তার মধ্যে ক্ষতিকারক পোকা হচ্ছে পাতামোড়ানো পোকা। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকা পাতার মধ্যশিরার কাছে ডিম পাড়ে। কীড়াগুলো পাতার সবুজ অংশ খায় এবং বড় হওয়ার সাথে সাথে তারা পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে নলের মতো করে। মাটিতে অতিরিক্ত মাত্রায় নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করলে এই আক্রমণ হয়। এ ছাড়া বৃষ্টির পর টানা ২-৩ দিন প্রখর রৌদ্র হলেও আক্রমণ বাড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছ থেকে পোকার ডিম বা কীড়াসহ পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা যায়। আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে দমন করা যায়। ডালপালা পুঁতে পার্চিং এর ব্যবস্থা করে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে পূর্ণবয়স্ক মথ ধ্বংস করা যায়। আগাছামুক্ত রাখতে হবে চারা রোপণের পর ৪০ দিন পর্যন্ত। এ ছাড়া শতকরা ২৫ ভাগ পাতা আক্রান্ত হলে ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্লোপাইরিফস জাতীয় কীটনাশক (ডারসবান ২০ ইসি), ম্যালাথিয়ন জাতীয় কীটনাশক (ফাইফানন ২৫ মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার বিকেলে স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
হেমায়েত উদ্দীন, উপজেলা : হাটহাজারী, জেলা : চট্টগ্রাম
প্রশ্ন : আম গাছে কী পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হয়?
উত্তর : আম গাছের বয়স অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। আম গাছে সাধারণত বছরে ২ বার সার দিতে হবে। বর্ষার আগে ও বর্ষার পরে (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় ও আশি^ন মাসে)। সারের পরিমাণ সারণি দ্রষ্টব্য।
উল্লেখিত সার ২ ভাগ করে প্রথম ভাগ জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে এবং ২য় ভাগ আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। জিপসাম ও জিংক সালফেট ১ বছর পর পর প্রয়োগ করলেই চলবে।
জুলহাস, উপজেলা : দেওয়ানগঞ্জ, জেলা : জামালপুর
প্রশ্ন : শীতকালীন টমেটোর জাত কী কী?
উত্তর : বর্তমানে টমেটো সারা বছর উৎপাদন করা যায়। শীতকালীন টমেটো তিন রকমের জাত দেখা যায়।
আগাম জাত : জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে রোপণ করা হয়। এতে আগাম ফল আসে। বারি টমেটো ৪, বারি টমেটো ৫, টিপু সুলতান, নিউ রূপালী এফ ১ ইত্যাদি।
ভরা মৌসুম জাত : অক্টোবর-নভেম্বর মাসে রোপণ করা হয়। মানিক, রতন, বারি টমেটো ৩, বারি টমেটো ৬, বারি টমেটো ৭, বারি টমেটো ৯, বারি টমেটো ১৮, বারি টমেটো ২১, বিনা টমেটো ১০, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি।
নাবি শীত মৌসুমী জাত : জানুয়ারিতে বোনা হয়। ফল আসে মার্চ-এপ্রিল মাসে। এদের মধ্যে বাহার, রাজা, সুরক্ষা অন্যতম।
শফিক, উপজেলা : শিবগঞ্জ, জেলা : বগুড়া
প্রশ্ন : সবুজ পাতা (বিলাতি) ধনিয়া পাতার জন্য কোন মাসে বীজ বপন করতে হবে। ধনিয়ার সাথে কী কী সাথী ফসল করা যায়?
উত্তর : ধনিয়া দৈনন্দিন খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তোলে। ধনিয়া পাতা সালাদসহ সব তরকারিতেই ব্যবহার করা যায়। সবুজ পাতার জন্য সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ বপন করা যায়। শাক, সবজি (ওলকপি), আখ, আলু, ডালজাতীয় ফসলের সাথে ধনিয়া সাথী ফসল করা যায়।
ফাহিম, উপজেলা : বদরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : কলাগাছে কী পরিমাণ সার দিতে হয়?
উত্তর : কলা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি পুষ্টিকর ফল। নিয়মিত কলা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। পাকা কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। কলা এনার্জি বাড়াতে এর কোন জুরি নেই।                                                                                         
কলাগাছের সার ব্যবস্থাপনা
১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম জিপসাম জমি তৈরির সময় এবং বাকি অর্ধেক গোবর সার ও টিএসপি, জিপসাম ও ১৫০ গ্রাম পটাশ গর্তে দিতে হবে। রোপণের ২ মাস পর ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া ও ১৫০ গ্রাম পটাশ সার জমিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এর ২ মাস পরপর গাছপ্রতি ৫০ গ্রাম পটাশ ও ৭৫ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। ফুল আসার পর এই পরিমাণ দ্বিগুন করতে হবে।  
রিপন, উপজেলা : পবা, জেলা : রাজশাহী
প্রশ্ন : কচুর পাতায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাল মাকড়ের আক্রমণ। করণীয় কী?  
উত্তর : সবজি হিসেবে কচু বেশ পরিচিত ও পুষ্টিকর। সাধারণত সবজি ও ঔষধি হিসেবে কচু ব্যবহৃত হয়। পাতার নিচে লাল রং এর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাকড়ের আক্রমণ হয়, যা হাত দিয়ে নষ্ট করা যায়। এ ছাড়া কীটনাশক হিসেবে এবামেকটিন গ্রুপের ভার্টিমেক ১.৫ মিলি, প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর অথবা সালফার গ্রুপের কুমুলাস পাউডার ২ গ্রাম প্রতি লিটারে মিলিয়ে ১০ দিন পরপর বিকেলে স্প্রে করতে হবে।
হিরা, উপজেলা : সদর, জেলা : কুমিল্লা
প্রশ্ন : লটকনের ফল ছোট অবস্থায় ফলের খোসা ছিদ্র করে ডিম পাড়ে এবং শাঁস খেয়ে ফেলে। করণীয় কী?
উত্তর : লটকন বাংলাদেশের সুপরিচিত একটি অপ্রচলিত ফল। টক-মিষ্টি স্বাদ যুক্ত। লটকন ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ একটি ফল। ১ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে পারফেকথিয়ন বা লিবাসিড ৫০ ইসি মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
আব্দুর রহিম, উপজেলা : গফরগাঁও, জেলা : ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : ঢেঁড়সের শিকড়ের গিঁট রোগ, পাতা ছোট এবং গাছ খর্বাকৃতি হয়। করণীয় কী?
উত্তর : মেলোয়ভোগাইন প্রজাতির কৃমির আক্রমণে ঢেঁড়সের শিকড়ের গিট রোগ হয় এবং পাতা ও গাছ খর্বাকৃতির হয়। তাই আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে। প্রতিকার হিসেবে একই জমিতে বার বার একই ফসল চাষ করা যাবে না। জমি গভীরভাবে চাষ দিতে হবে। চারা রোপণের ৮-১০ দিন পূর্বে ট্রাইকো কম্পোস্ট ২.৫ টন প্রতি হেক্টরে প্রয়োগ করতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখা গেলে কার্বোফুরান গ্রুপের ফুরাডান ৫ জি, ৪০ কেজি প্রতি হেক্টর মাটিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে হালকা সেচ দিতে হবে।
এছাড়াও কৃষি বিষয়ক তথ্য জানতে কল করুন কৃষি তথ্য সার্ভিসের ১৬১২৩ নম্বরে।

লেখক : তথ্য অফিসার (পিপি), কৃষি তথ্য সার্ভিস,
খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২;
ই- মেইল : aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মো: সৌরভ, উপজেলা : ডুমুরিয়া, জেলা : খুলনা।
প্রশ্ন : চলতি আমন মৌসুমে কোন জাতের ধান চাষ করতে পারি?
উত্তর : চলতি আমন মৌসুমে আমরা ব্রি ধান৮৭, ব্রি ধান৭৫, ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৫১ ও ব্রি ধান৫২ জাতের ধান চাষ করতে পারি। জলমগ্নতা সহনশীল জাত ব্রি ধান৫১ ও ব্রি ধান৫২। স্বল্পজীবনকাল সম্পন্ন জাত ব্রি ধান৬২ ও ব্রি ধান৭৫। অলবণাক্ত জোয়ারভাটা অঞ্চলে চাষযোগ্য জাত ব্রি ধান৭৬, ব্রি ধান৭৭। এ ছাড়া উচ্চফলনশীল জাত হিসেবে ব্রি ধান-৮৭ চাষ করতে পারি।
মো: ইমরান, উপজেলা : চৌদ্দগ্রাম, জেলা : কুমিল্লা।
প্রশ্ন : পাটের কা-ে কালচে দাগ পড়েছে, এখন আমরা কী করতে পারি?
উত্তর : আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়ে নষ্ট করতে হবে। সুষম রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। ২ গ্রাম/কেজি হারে ব্যাভিস্টিন দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম, একরোবেস্ট ২ গ্রাম, এপ্রিকোনাজল-১ মিলি প্রতি মিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: আলআমিন, উপজেলা : বিরল, জেলা : দিনাজপুর।
প্রশ্ন : আমের বোঁটার কাছ থেকে পচন শুরু হয়েছে, করণীয় কী?
উত্তর : আম পারার সময় আঘাত না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আম সংগ্রহের পর ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ মিনিট পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। গাছে আক্রমণ হলে এপিকোনাজল বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ওষুধ ১ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: ফিরোজ শেখ, উপজেলা : গলাচিপা, জেলা : পটুয়াখালী।
প্রশ্ন : আমন ধানের চারা রোপণের জন্য চারার বয়স কত হতে হবে?
উত্তর : আমন ধানের চারা রোপণের জন্য চারার বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন হতে হবে।
মো: আকরাম, উপজেলা : পাকুন্দিয়া, জেলা : কিশোরগঞ্জ।
প্রশ্ন : শসার পাতায় সাদা পাউডারের মতো দেখা যায়, করণীয় কী?
উত্তর : রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন জাত ব্যবহার করতে হবে। পরিত্যক্ত পাতা সংগ্রহ করে নষ্ট করে পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত গাছে সালফার (থিওভিট)-২ গ্রাম/মিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: মাহাবুব, উপজেলা : রংপুর সদর, জেলা : রংপুর।
প্রশ্ন : বেগুনের গোড়া পচা রোগ শুরু হয়েছে, করণীয় কী?
উত্তর : রোগাক্রান্ত গাছের গোড়ায় ছাই মিশ্রিত পটাশ সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে এপিকোনাজল গ্রুপের ওষুধ গাছের গোড়ায় স্প্রে করলে আক্রমণ কম হয়। এ ছাড়া গাছের গোড়ায় বর্দোপেস্ট লাগানো যেতে পারে।
মো: এনামুল, উপজেলা : সাদুল্লাপুর, জেলা : গাইবান্ধা।
প্রশ্ন : মিষ্টি কুমড়া গাছের পাতা খেয়ে যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : পাতার উপর ছাই ছিটিয়ে দিলে সাময়িকভাবে দমন করা যায়। চারা বা মাদার চারদিকে ২-৫ গ্রাম দানাদার কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে সাইপারসেথ্রিন-১ মিলি, মিপসিন, সপসিন-২ গ্রাম, সেভিন-২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা প্রয়োজন।
মোছা: তানজিমা, উপজেলা : মান্দা, জেলা : নওগাঁ।
প্রশ্ন : বরবটি গাছের পাতা খেয়ে যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : আক্রমণ বেশি হলে সাইপারসেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: ছামাউল কবীর, উপজেলা : গোদাগাড়ি, জেলা : রাজশাহী।
প্রশ্ন : বেগুনের কচি ডগা ঢলে পড়ে শুকিয়ে যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : বেগুনের জমিতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। সুষম সার ব্যবহার করা বিশেষ করে পটাশ সার ব্যবহারে গাছের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বালাইনাশক হিসেবে প্রতি লিটার পানিতে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের ১ মিলি হারে ওষুধ মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: জুয়েল, উপজেলা : কুমারখালী, জেলা : কুষ্টিয়া।
প্রশ্ন : ধানের গাছের গোড়ায় প্রচুর পরিমাণে ছোট ছোট পোকা দেখা যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত ব্যবহার করতে হবে। অতিমাত্রায় ইউরিয়া ব্যবহার পরিহার করা উচিত। আক্রমণ প্রতিরোধে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা, কার্বোসালফান অথবা ফেনিট্রথিয়ন গ্রুপের যে কোন একটি বালাইনাশক শুধুমাত্র আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বি. দ্র. : কৃষিবিষয়ক যে কোন সমস্যা সমাধান পেতে কৃষি তথ্য সার্ভিসের কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩ নম্বরে যেকোন মোবাইল অপারেটর থেকে ফোন করুন। অথবা প্রশ্ন লিখে ডাকযোগে রড়ঢ়ঢ়@ধরং.মড়া.নফ ই-মেইলে প্রেরণ করতে পারেন।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল : iopp@ais.gov.bd

 

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন। সায়মা সরকার, উপজেলা : রামগতি, জেলা : লক্ষ্মীপুর
প্রশ্ন : অতিরিক্ত ঠা-ায় বীজতলার যত্ন ও পরিচর্যার সঠিক নিয়ম স¤পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : বোরো মৌসুমে শীতের জন্য চারার বাড়-বাড়তি ব্যাহত হয়। শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ সাদা পলিথিন দিয়ে সকালে চারার পাতার উপরের শিশির শুকিয়ে গেলে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দিলে বীজতলার পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিলে ও চারার উপরে শিশির ঝড়িয়ে দিলে চারা ঠা-া থেকে রক্ষা পায়। বীজতলায় সবসময় নালা ভর্তি পানি ধরে রাখতে হবে। বীজ গজানোর ৪-৫ দিনপর বেডের উপর ২-৩ সেমি. পানি রাখলে আগাছা ও পাখির আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চারাগাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গমিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া প্রয়োগের পর ও চারা সবুজ না হলে গন্ধকের অভাব হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। তখন প্রতি বর্গমিটারে ১০ গ্রাম জিপসাম সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগের পর বীজতলায় পানি ধরে রাখা উচিত।
নুরুল হক, উপজেলা : শিবালয়, জেলা : মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : জিংক সমৃদ্ধ আধুনিক গমের জাত সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : বারি গম ৩৩ গমের প্রথম ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জিংক সমৃদ্ধ জাত। জাতটির উচ্চতা মাঝারি (১০০-১০৫) সেমি.। কুশির সংখ্যা ৩-৫টা। শীষ বের হতে ৬০-৬৫ দিন এবং বোনা থেকে পাকা ১১০-১১৫ দিন সময় লাগে। জাতটি ব্লাস্ট রোগ, পাতার দাগ রোগ ও মরিচা রোগ প্রতিরোধি। জাতটি স্বল্পমেয়াদি ও তাপ সহনশীল হওয়ায় দেরিতে বপনের জন্য উপযোগী। বীজ বপনের সময় (১৫-৩০ নভেম্বর) বীজ হার ১৩০ কেজি/ হেক্টর। দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ত এলাকা ছাড়া দেশের সর্বত্র আবাদের উপযোগী। হেক্টরপ্রতি ফলন ৪০০০-৫০০০ কেজি। দানার রং সাদা, চকচকে মাঝারি (হাজার দানার ওজন ৪৫-৫২ গ্রাম)। মাড়াই করার পর ৩-৪ দিন হালকা রোদে শুকিয়ে বীজের আর্দ্রতা ১২% তার নিচে নামিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
রফিক উদ্দিন, উপজেলা : বীরগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : আলুর জমিতে এক ধরনের পোকা গাছের পাতা, কা- ও ডগার রস চুষে খাচ্ছে। গাছের পাতা হলুদ বর্ণ ও কুঁকড়ে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান কী?
উত্তর : জাব পোকার আক্রমণে এই ধরনের সমস্যা জমিতে হয়ে থাকে। প্রতিকার হিসেবে প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ডায়াজিনন গ্রুপ বা ইমিডাক্লোরপিড গ্রুপের এডমায়ার বা টিডো ০.৫ মিলি মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে ৩ বার। এ ছাড়াও জাবপোকার আক্রমণ বেশি হলে আলুর উত্তোলনের শেষের দিকে গাছ কেটে বা উপড়ে দিতে হবে।
লিটন আহমেদ, উপজেলা : পীরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : ক্ষিরা গাছের পাতায় ও ফলে কালো কালো দাগ দেখা যাচ্ছে ও ক্ষিরা পচে যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি ক্ষীরার এনথ্রাকনোজ রোগ। ঈড়ষষবঃড়ঃৎরপযঁস ংঢ় নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ রোগের বিস্তার ঘটে। এ রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে প্রোপামোকার্ব গ্রুপের দুদু ২ গ্রাম বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের (নোইন ১ গ্রাম) বা প্রোপিকোনাজল গ্রুপের টিল্ট ০.৫ মিলি বা কপার হাইড্রোঅক্সাইড গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম করে ১০ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে ৩ বার। এছাড়া আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে।  রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে ও সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।
রাজীব শিকদার, উপজেলা : রাজাপুর, জেলা : ঝালকাঠি
প্রশ্ন : ধানের জমিতে জৈবসার হিসেবে মুরগির বিষ্ঠা প্রয়োগের কার্যকারিতা/ উপকারিতা কী কী?
উত্তর : জৈসসারকে মাটির উর্বরতা শক্তির চালক হিসেবে গণ্য করা হয়। বোরো মৌসুমে প্রতি বিঘায় ৮০০ কেজি মুরগীর বিষ্ঠা (পোলট্রি লিটার) রাসায়নিক সারের সাথে ব্যবহার করলে রাসায়নিক সার কম লাগবে। মুরগীর বিষ্ঠায় চাহিদা অনুসারে ফসফরাস বিদ্যমান থাকায় জমিতে ঐ মৌসুমে টিএসপি/ ডিএপি সার ব্যবহার করার প্রয়োজন নাই। তবে নাইট্রোজেনের অভাব পরিলক্ষিত হলে পরিমিত মাত্রায় ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করলে আরও ভাল ফলন পাওয়া যায়। মুরগির বিষ্ঠা টাটকা/২৫-৩০ দিন পচানো দুই অবস্থায়ই ব্যবহার করা যায়। তবে টাটকা ব্যবহার করলে মাটিতে প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে। তা না হলে রোপণের পর কিছু চারা মারা যেতে পারে। সেজন্য চারা রোপণের পর অন্তত ১৪ দিন পর্যন্ত জমিতে পানি ধরে রাখতে হবে। অপরদিকে ২৫-৩০ দিনের পচানো বিষ্ঠা প্রয়োগ করলে সাথে সাথে চারা রোপণ করা যায়। এতে চারা মারা যায় না।
শফিক হোসেন, উপজেলা : জলঢাকা, জেলা : নীলফামারী
প্রশ্ন : ধানের চারার পাতা হলুদ হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে খড়ের মতো হয়ে যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি ধানের পাতা পোড়া রোগ নামে পরিচিত এবং এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি রোগ। বোরো মৌসুমে ধানের অন্যতম প্রধান রোগ পাতা পোড়া চারা এবং বয়স্ক গাছ দুই ক্ষেত্রেই দেখা যায়। চারার বাইরে পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে খড়ের রঙে পরিণত হয় ফলে নতুন পাতাও শুকিয়ে যায় এবং চারা নেতিয়ে পড়ে। চারা গোড়ায় হাত দ্বারা চাপ দিলে পুঁজের মতো দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ বের হয়। বয়স্ক গাছে প্রথমে পাতার কিনারায় ও আগায় ছোট ছোট জলছাপের মতো দাগ দেখা যায়। পরে এই দাগগুলো বড় হয়ে অগ্রসর হতে থাকে এবং অক্রান্ত অংশ ধুসর বাদামি বর্ণে পরিণত হয় যা ঝলসানো বা পাতা পোড়া বলে মনে হয়। এই রোগ দেখা দেওয়ার পর পরই ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় ৬০ গ্রাম এমওপি, ৬০ গ্রাম থিওভিট ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। থোড় বের হওয়ার আগে রোগ দিলে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এই সময় জমির পানি শুকিয়ে ৭-১০ দিন পর আবার পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করলে রোগের প্রকোপ কম হবে। এছাড়া কপার অক্সি ক্লোরাইড (ংঁহারঃ) ৪ গ্রাম বা কপার হাইড্রোক্সাইড গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে ৭-১০ দিন পরপর ৩ বার। প্রয়োজনে ১% বর্দ্দোমিকচার ব্যবহার করা যেতে পারে।
জলিল ভূঞা, উপজেলা : গদখালী, জেলা : যোশর
প্রশ্ন : বরবটি গাছের চারা হঠাৎ করে নেতিয়ে পড়ে মারা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : বরবটির চারা নেতিয়ে পড়া একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এই রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত গাছ নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। বপনের পূর্বে বীজ শোধন (প্রোভেক্স ২.৫ গ্রাম বা ব্যাভিষ্টিন-২ গ্রাম/প্রতি কেজি বীজ) করতে পারলে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়। চারা গজানোর পরে অতিরিক্ত সেচ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এ রোগের আক্রমণ দেখা দিলে প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম কমপ্যানিয়ন  (ম্যানকোজেব+কার্বেনডাডিম) গ্রুপের বা কপার হাইড্রোক্সাইড গ্রুপের ২ গ্রাম চ্যাম্পিয়ন ব্যবহার করতে হবে ৭ দিন পরপর ৩ বার। এছাড়া মাদার মাটি শোধন করা যেতে পারে। মাদায় ট্রাইকোডার্মা ভিডিডি ৩০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম গোবরের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আবু তাহের, উপজেলা : রামগতি, জেলা : লক্ষ্মীপুর
প্রশ্ন : পোকা বাঁধাকপির পাতা খেয়ে ফেলছে। কী করতে হবে?
উত্তর :  লেদাপোকার কীড়া কপির বর্ধনশীল অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে কপির মাথা নষ্ট হয় এবং খাওয়ার অনুপযোগী হয়। পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে। পোকার ডিম ও লেদা হাত দ্বারা বাছাই করতে হবে। ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ( যেমন ওসতাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২-৩ বার।
মো: সাহারুল ইসলাম, উপজেলা : চকোরিয়া, জেলা : কক্সবাজার
প্রশ্ন : পেঁয়াজের কা- পচে যাচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : পেঁয়াজের কা- পচা রোগ (ঝপষবৎড়ঃরঁৎস ৎড়ষভংরর) ছত্রাকজনিত রোগ। আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় ও ঢলে পড়ে। আক্রান্ত গাছ খুব সহজেই মাটি থেকে কন্দসহ উঠে আসে। আক্রান্ত স্থানে পচন ধরে। আক্রান্ত জমিতে প্রতি বছর পেঁয়াজ চাষ করা যাবে না। আক্রান্ত পেঁয়াজ গাছ তুলে নষ্ট করতে হবে। প্রতি কেজি বীজে ২ গ্রাম (কার্বেন্ডাজিম) প্রুপের ব্যাভিস্টিন দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। চারা আক্রান্ত হলে ২.৫ গ্রাম প্রোভেক্স (কার্বাক্সিন+থিরাম) গ্রুপের ২০০ বা ২ গ্রাম ব্যাভিষ্টিন বা (কার্বেন্ডাজিম) গ্রুপ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে চারার গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
রিফাত, উপজেলা : ঠাকুরগাঁও, জেলা : পীরগঞ্জ
প্রশ্ন : ছোলার গাছ হলুদ হয়ে যায়, ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায় এবং টান দিলে সহজেই উঠে আসে না। লম্বালম্বিভাবে কাটলে কা-ের মাঝখানের অংশ কালো দেখা যায়। এটার প্রতিকার কি?
উত্তর : সাধারণত মাটির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ও যথেষ্ট পরিমাণ আর্দ্রতা থাকলে এ রোগের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। বীজ শোধক দিয়ে বীজ বপনের পূর্বে বীজ শোধন করলে ছোলার উইল্ট রোগ দমন করা যায়,  (কার্বাক্সিন+থিরাম) গ্রুপের প্রোভেক্স অথবা ভিটাভেক্স ২০০ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। মাঠে ঢলে পড়া রোগ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম (ব্যভিস্টিন ডি এফ অথবা নোইন) অথবা কার্বাক্সিন+থিরাম গ্রুপের প্রোভেক্স-২০০ ডব্লিউ পি ১ গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে বিকালে গাছের গোড়ায় ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
রোগ প্রতিরোধী জাত, যেমন বারি ছোলা-৫ এবং বারি ছোলা-৯ এর চাষ করতে হবে। ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈবসার ব্যবহার করতে হবে।
রেজা, উপজেলা : বীরগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : সূর্যমুখীর ধূসর বা গাঢ় বাদামি বর্ণের অসম আকৃতির দাগ পড়ে। পরে দাগ মিশে গিয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে।  অবশেষে সম্পূর্ণ পাতা ঝলসে যায়।
উত্তর :  রোগ সহনশীল বারি সূর্যমুখী ২ জাত চাষ করতে হবে। রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে (ইপোড্রিয়ন) গ্রুপের রোভরাল ৫০ ভব্লিউপি (২ গ্রা. হারে) পানির সাথে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২-৩ বার পাতায় প্রয়োগ করলে রোগের প্রকোপ কমে যায়। ফসল কাটার পর  গাছের পরিত্যক্ত অংশ নষ্ট করলে বা পুড়িয়ে ফেললে ও রোগের উৎস নষ্ট হয়ে যায়।
সাইফুল, উপজেলা : বাকেরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : ভুট্টার মোচা ও দানায় সাদা সাদা আবরণ দেখা যাচ্ছে ও পচে  যাচ্ছে। করণীয় সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : এটি ভুট্টার মোচা ও দানা পচা রোগ। এটি উরঢ়ষড়ফরধ সধুফরং ও ঋঁংধৎরঁস সড়হষরঃধৎড়হ নামক ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ণ হয়, দানা পুষ্ট হয় না, কুঁচকে অথবা ফেটে যায়, এবং পচে কালো হয়ে যায়। একই জমিতে বার বার ভুট্টা চাষ করা যাবে না। চকচকে প্লাস্টিকের ফিতা ফসলের উপর টাঙানো, ভুট্টা পেকে গেলে দেরি না করে দ্রুত কেটে ফেলা। ফসলের দানা শক্ত হওয়ার সময় প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক (টিল্ট/প্রাউড) ২ মিলি. প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

মাসুম বিল্লাহ, উপজেলা : নগরকান্দা, জেলা : ফরিদপুর
প্রশ্ন : ভুট্টা গাছের পাতায় ছোট ছোট হালকা সবুজ রঙের পোকা দেখা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : এটি ভুট্টার গাছের জাবপোকা। এ পোকার পূর্ণাঙ্গ ও বাচ্চা উভয়েই ভুট্টার পাতা, কা- ও ডগা থেকে রস চুষে খায়। ফলে পাতা কুঁকড়ায় যায় ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে। সাধারণত ভুট্টাগাছে টাসেল আসার সময় এ পোকার আক্রমণ বেশি হয়। এ পোকা এক পাতার উপরে শ্যুটি মোল্ড নামক এক ধরনের ছত্রাক নি:সরণ করে। যা পরবর্তীতে পাতা উপরে কালো দাগের সৃষ্টি করে। এ জন্য উন্নত জাতের ভুট্টা বপন করতে হবে। পরভোজী পোকা যেমন লেডিবার্ড বিটল জমিতে ছেড়ে দেওয়া। আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরাপিড গ্রুপের কীটনাশক অ্যাডমায়ার/টিডো/ এসাটফ ০.৫ মিলি/লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার স্প্রে করা।

লেখক : তথ্য অফিসার (পিপি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২; ই-মেইল :  aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

আবদুল মোতালেব

সিরাজগঞ্জ

প্রশ্ন : লিচু গাছে কখন সেচ দিতে হবে?
উত্তর : চারা গাছের বৃদ্ধির জন্য শুকনো মৌসুমে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় সম্পূর্ণ ফুল ফোঁটা পর্যায়ে একবার, ফল মটর দানার মতো হলে একবার এবং ১৫ দিন পর তার একবার মোট তিনবার সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। সার প্রয়োগের পর সেচ দেয়া একান্ত দরকার। আবার বর্ষার সময় যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে তার জন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা নিতে হবে।
 
সাগর
পঞ্চগড়
প্রশ্ন : মরিচের পাতা কুঁকড়ে গেছে, গাছ খাটো হয়ে গেছে। করণীয় কী?
উত্তর : ভাইরাস দ্বারা মরিচ গাছ আক্রান্ত হলে পাতা কুঁকড়ে যায় এবং শুরু হয়। গাছ খর্বাকৃতির হয়।
প্রতিকার : ১. আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ২. সাদা মাছি এ রোগের বাহক। তাই সাদা মাছি দমনের জন্য ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা রগর ২ মিলি. প্রতি লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

মো. ইলিয়াস
সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন : পেঁপে গাছ লাগাতে প্রতি গর্তে কী পরিমাণ সার দিতে হবে।
উত্তর : চারা রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন আগে বেডের মাঝ বরাবর ২ মিটার দূরত্বে ৬০x৬০x৪৫ সেমি. আকারের গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্ত প্রতি ১৫ কেজি পচা গোবর, ৫০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম জিপসাম, ২০ গ্রাম বরিক এসিড এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মেশাতে হবে। সার মিশ্রিত মাটি দ্বারা গর্ত পূরণ করে সেচ দিতে হবে।
 
প্রশ্ন : বেগুন গাছ পাতায় ছোট ছোট চক্রাকারে দাগ দেখা যায়, ফল পচে যায় ও গাছ মরে যায়। প্রতিকার কী?
উত্তর : এক ধরনের ছত্রাক এর আক্রমণে বেগুন গাছে এ রোগ দেখা দেয়। পুষ্টির অভাবে এবং শুষ্ক গরম আবহাওয়ায় এ রোগ বেড়ে যায়।
 
প্রতিকার : ১. সুস্থ রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। ২. সেচ বা বৃষ্টির পর গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হবে। ৩. রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন/নোইন গুলিয়ে গাছের গোড়ায় মাটি ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। ৪. ফসল সংগ্রহের পর মুড়ি গাছ না রেখে সব গাছ, ডালপালা, পাতা ইত্যাদি একত্র করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
 
মোসা. লাকী খাতুন
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
প্রশ্ন : গোলাপ ফুলে বিছা পোকা পাতা ও ফুলের পাঁপড়ি খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। প্রতিকার কী?
উত্তর : বিছা পোকার আক্রমণে পাতা, ফুল শুকিয়ে ঝরে যায়। আংশিক আক্রান্ত ফুলের বাজার মূল্য কম হয়।
১. আক্রমণের প্রথম পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা, ফুল কীড়াসহ সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে।
২. আক্রমণ বেশি হলে কুইনালফস ২৫ ইসি/কিনালক্স ২৫ ইসি বা ফেনিট্রোথিয়ন জাতীয় কীটনাশক ২.০ মিলি./লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে।
 
মো. শাহাজাহান
লালমনিরহাট
প্রশ্ন : গমের ক্ষেতে প্রচুর ইঁদুর আক্রমণ হচ্ছে। ইঁদুরে হাত থেকে গম ফসল রক্ষার উপায় কী?
উত্তর : ইঁদুর গমের একটি প্রধান শত্রু। গম ক্ষেতে বিশেষ করে শিষ আসার পর ইঁদুরের উপদ্রব বেশি দেখা যায়।
প্রতিকার : ১. ইঁদুরের গর্তে পানি ঢেলে মেরে ফেলা।
২. ফাঁদ পেতে ইঁদুর মারা।
৩. ছোট ছোট কাগজের টুকরার মধ্যে ১ গ্রাম করে জিংক ফসফাইড জাতীয় ইঁদুরনাশক ভর্তি করে ইঁদুরের গর্তের মুখের সামান্য ভেতরে প্রয়োগ করে গর্তের মুখ মাটি দিয়ে আলতোভাবে বন্ধ করে দেয়া।
৪. ইঁদুর চলাচলের পথে কাগজে ল্যানিরেট বা অন্য কোনো ইঁদুরনাশক রেখেও ইঁদুর দমন করা যায়।

মো. রফিকুল ইসলাম
ময়মনসিংহ
প্রশ্ন : মনোসেক্স তেলাপিয়া নার্সিংয়ের পদ্ধতি কী?
উত্তর : নার্সিং পুকুরের আয়তন ১০ থেকে ১২ শতাংশ এবং পানির গভীরতা ১ মিটার রাখা আবশ্যক। পুকুর শুকিয়ে সব রাক্ষুসে মাছ ও মৎস্যভূক প্রাণী নির্মুল করতে হবে। নিষ্কাশন সম্ভব না হলে মিহি ফাঁসের জাল টেনে অবাঞ্ছিত প্রাণী দূর করা যেতে পারে। পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের ১ সপ্তাহ পরে প্রতি শতাংশে ৩ থেকে ৪ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া  ও ১০০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে। নার্সারি পুকুরের প্রতি শতাংশে ১২০০ থেকে ১৫০০ টি হারে পোনা মজুদ করা যেতে পারে। মজুদকৃত পোনাকে ৬ সপ্তাহ নার্সারি পুকুরে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে (২৫ থেকে ১০% প্রতি সপ্তাহে কমবে)। এভাবে ৬ সপ্তাহ লালনের পর পোনা যখন ১৫ থেকে ২০ গ্রাম ওজনের হবে তখন তা বিক্রি বা চাষের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
 
মো. সুমন মিয়া
যশোর
প্রশ্ন : ঘেরের প্রস্তুত প্রণালি সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : ঘের শুকিয়ে তলদেশের  পচা কাদা অপসারণ এবং তলদেশ সমান করতে হবে। পাড় উঁচু করে বাঁধতে হবে। ঘেরের পাড়সহ তলায় চুন ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে প্রতি শতকে ১ কেজি হারে। ঘেরের তলদেশ চাষ দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। ছোট মেসসাইজের নাইলন জাল দিয়ে ঘেরের চারপাশের বেড়া (৩ ফুট উঁচু) দিতে হবে। পানি প্রবেশ পথ ও জরুরি পানি নির্গমন পথ করতে হবে এবং তাতে স্ক্রিন বা বানা (বাঁশের পাটা ও নাইলনের জাল দিয়ে তৈরি) দিতে হবে। চুন প্রয়োগের ৫ থেকে ৭ দিন পরে প্রয়োজনমতো পানি প্রবেশ করিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম/শতক, টিএসপি ৭৫ থেকে ১০০ গ্রাম/শতক হারে। এরপর ব্লিচিং পাউডার সব ঘেরে ছিটিয়ে দিয়ে পানি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অনেক সময় ঘেরের এককোণায় বাঁশের ফ্রেমের সঙ্গে একটি নার্সারি তৈরি করতে বলা হয়। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা বা গোবর ব্যবহার করা যাবে না।
 
বিজয় কুমার
লালমনিরহাট
প্রশ্ন : পুকুর নির্বাচনে প্রয়োজনীয় শর্তগুলো কী কী?
উত্তর : * পুকুরের পাড় আগাছা ও ঝোপঝাড় মুক্ত হবে, যাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সূর্যের আলো পুকুরে পড়তে পাড়ে। * আয়তন ১০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং গভীরতা ৬ থেকে ৯ ফুট হতে হবে (প্রাকৃতিক পানি  ৬/৭ মাস থাকে)। * পুকুর বাড়ির কাছে একক মালিকানার হতে হবে। *পানির সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো থাকতে হবে। *পুকুরের মাটি দোআঁশ ধরনের সর্বোত্তম।
 
আতাউর রহমান
রংপুর
প্রশ্ন : গরুর পেট ফেঁপে গেছে। কী করণীয় ?
উত্তর : তৎক্ষণাৎ আধা কেজি পরিমাণ আদা ভাঙা বাটা দিয়ে খাওয়াতে হবে।
গ্যাসনাশক যেমন অ্যান্টিজাইমোটিক/ কারমিনেটিভ জাতীয় ওষুধ সরাসরি রুমেনে প্রয়োগ (তীব্র হলে) অথবা মুখ দিয়ে খাওয়াতে হবে। অক্সিটেট্টাসাইক্লিন ইনজেকশন মাংসপেশিতে দিলে ভালো কাজ করে। তীব্র প্রকৃতির ক্ষেত্রে বাম দিকের প্যারালাম্বার ফোসা ছিদ্র করে গ্যাস বের করা যায়।
 
জাহিদ হোসেন
শেরপুর
প্রশ্ন : গরুর কাঁধে ঘা হয়েছে। কী করণীয়?
উত্তর : * আইডারমেকটিন (Ivermection) ০.২ মি. গ্রাম/ কেজি হিসেবে চামড়ার নিচে ২৮ দিন অন্তর দুইবার ইনজেকশন দিতে হবে।*নেগুভন ১-২% সলুসন দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে দিতে হবে।          
*পাশাপাশি যে কোনো একটি অ্যান্টিহিস্টাসিনিক ইনজেকশন দিলে ভালো কাজ করে।
*দ্বিতীয় পর্যায়ের জীবাণু সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সালফার ড্রাগ অথবা অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হবে।

 
রাকিব রায়
দিনাজপুর
প্রশ্ন : ইউএমএস তৈরির পদ্ধতি জানতে চাই।
উত্তর : ইউএমএস তৈরির প্রথম শর্ত হলো সর্বদা এর গঠন সঠিক রাখতে হবে। ১০০ কেজি ইউএমএস তৈরি করতে হলে ৮২ কেজি শুকনা খণ্ড, ১৫ কেজি চিটাগুড় ও ২ থেকে ৩ কেজি ইউরিয়া মিশাতে হবে। খড়গুলো পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর মাঝারিভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। বালতিতে ৫ লিটার পানির সঙ্গে ৩ কেজি ইউরিয়া মিশিয়ে নিতে হবে। এবার মিশ্রণটি খড়ের ওপর অর্ধেক ছিটিয়ে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে মিশ্রণ যেন কোনোভাবেই পলিথিনে আটকে না থাকে। এভাবে তৈরি ইউএমএস ৩ দিনের বেশি সংরক্ষণ না করাই ভালো।
 
লেখক :
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ
* কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, ই-মেইল : masum.maroof@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন। 
জনাব মো: জামাল হোসেন, উপজেলা : বাকেরগঞ্জ, জেলা : বরিশাল
প্রশ্ন : ড্রাগন গাছে কখন কিভাবে ট্রেনিং প্রুনিং করা হয়?
উত্তর : ড্রাগন ফল দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং মোটা শাখা ডগা তৈরি করে। এক বছরের একটি গাছ ৩০টি পর্যন্ত শাখা তৈরি করতে পারে এবং ৪ বছর বয়সী একটি ড্রাগন ফলের গাছ ১৩০টি পর্যন্ত প্রশাখা তৈরি করতে পারে। তবে শাখা-প্রশাখা উৎপাদন উপযুক্ত ট্রেনিং ও ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, বাংলাদেশের ১২-১৮ মাস পর একটি গাছ ফল ধারণ করে। ফল সংগ্রহের পর ৪০-৫০টি প্রধান শাখায় প্রত্যেকটিতে ১/২টি সেকেন্ডারি শাখা অনুমোদন করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রের টারসিয়ারি ও কোয়াটারনারী প্রশাখা কে অনুমোদন করা হয় না। ট্রেনিং ও প্রুনিং করার পর অবশ্যই যে কোন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বিভিন্ন প্রকার রোগবালাই আক্রমণ করতে পারে।
জনাব আব্দুল করিম, উপজেলা : চিরিরবন্দর, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : কাকরোল গাছের পাতায় হলুদ থেকে বাদামি রঙের দাগ দেখা যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। করণীয় কি?
উত্তর : এটি কাকরোলের ডাউনি মিলডিউ রোগ নামে পরিচিত এবং এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। বয়স্ক পাতায় এই রোগ প্রথম দেখা যায়। আক্রান্ত পাতার গায়ে সাদা বা হলদে  থেকে বাদামি রঙের তালির মতো দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে এই দাগ অন্যান্য পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত হলে গাছের আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে এবং পানি নিষ্কাষণের ভাল ব্যবস্থা রাখতে হবে। (ম্যানকোজেব ((৪%)+ মেটালেক্সিল (৮%)) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন : মেটারিল  বা রিডোমিল গোল্ড এমজেড ৬৮ ডব্লিউপি অথবা (ম্যানকোজেব (৫০%) ফেনামিডন (১০%)) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন : সিকিউর ২ গ্রাম/লিটার হারে অথবা সালফার গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন :  কুমুলাস ২ কেজি/ হেক্টর হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে  করতে হবে। স্প্রে করার ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাওয়া বা বিক্রি করা যাবে না। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আগাম বীজ বপন, সুষম সার ব্যবহার, রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন : বারি উদ্ভাবিত/ অন্যান্য  উন্নত জাত চাষ করে অনেকাংশে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
জনাব আমজাদ মিয়া, উপজেলা :  কোটচাঁদপুর, জেলা : ঝিনাইদহ
প্রশ্ন : লিচুর ফলের বোটার কাছে পোকা ছিদ্র করে ভেতরে ঢোকে এবং সম্পূর্ণ বীজ নষ্ট করে ফেলছে। এ অবস্থায় করণীয় কি?
উত্তর : এটি লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকা। এই পোকা ফলের বোটার কাছে ছিদ্র করে এবং বীজকে আক্রমণ করে। পরে ছিদ্রের মুখে বাদামি রঙের এক প্রকার করাতের গুঁড়ার মতো মিহি গুঁড়া উৎপন্ন করে।  এতে ফল নষ্ট হয় এবং বাজারমূল্য কমে যায়। লিচু বাগান নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত ফল সংগ্রহ  করে নষ্ট বা পুঁতে ফেলতে হবে। লিচু গাছতলায় শুকনো খড়ে আগুন দিয়ে তাতে ধুপ দিয়ে ধোঁয়া দিতে হবে। এতে এ পোকার মথ বা কীড়া বিতাড়িত হবে। এর ফলে পোকা লিচুর ভেতরে ডিম পারবে না। বোম্বাই জাতে এ পোকার আক্রমণ বেশি হয় তাই আক্রমণ প্রবণ এলাকায় চায়না ৩ জাত রোপণ করতে হবে। এছাড়া নিমতেল ২ মিলি/লিটার পানিতে গুলে স্প্রে করে দেয়া যেতে পারে। আক্রমণ বেশি হলে সাইপারমেথ্রিন ১ মিলি বা সুমিথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার  পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
জনাব মো: ফারুক শিকদার, উপজেলা : কালিয়াকৈর, জেলা : গাজীপুর
প্রশ্ন : পটোল গাছের গোড়া ও পটোলে পানি ভেজা নরম পচা রোগ দেখা দিয়েছে। কী করণীয়?
উত্তর : পটোল গাছের গোড়া ও ফল পচা রোগের কারণে কা- ও পটোলের গায়ে সাদা সাদা মাইসেলিয়াম দেখা যায় এবং গাছের গোড়া, শিকড় ও পটোলে পানি ভেজা নরম পচা রোগ দেখা যায় পরবর্তীতে পটোল  গাছসহ পটোল নষ্ট হয়ে যায়। গাছ বাদামি বর্ণ ধারণ করে ডগা ও ফল পচে যায়। চযুঃড়ঢ়যঃযড়ৎধ ঢ়ধৎধংরঃরপধ নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত গাছ ও পটোল গুলো সংগ্রহ করে নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। প্রতি বছর পটোল চাষ না করে  শস্যপর্যায় অনুসরণ করতে হবে। রোগের আক্রমণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কম্প্যানিয়ন, ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম ও ২ গ্রাম ম্যানকোজেব+ মেটালেক্সিল একত্রে মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।
জনাব মো: মাসুদ, উপজেলা : পোরশা, জেলা : নওগাঁ
প্রশ্ন : করলার পাতার উপরে ছোট ছোট হলুদ এবং পতার নিচে গোলাপী ছত্রাক দেখা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : করলার ডাউনি মিলডিউ রোগের কারণে পাতার উপরে ছোট ছোট হলুদ এবং পাতার নিচে গোলাপী ছত্রাক দেখা দেয়। চংবঁফড়ঢ়বৎবহড়ংঢ়ড়ৎধ পঁনবহংরং নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত গাছের বয়স্ক পাতা মারা যায়। আক্রান্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। গাছের রোগ দেখা দিলে  প্রতি লিটার পানিতে ১-২ গ্রাম সিকিউর বা  ম্যানকোজেব ২ গ্রাম বা ম্যানকোজেব+ মেটালেক্সিল ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
জনাব মো: রিপন, উপজেলা : পাকুন্দিয়া, জেলা :  কিশোরগঞ্জ
প্রশ্ন : মুগ গাছের পাতা কীড়া দলবদ্ধভাবে সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে ঝাঝরা করে দিচ্ছে। এর প্রতিকার কী?
উত্তর :  বিছাপোকার আক্রমণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। এর প্রতিকার হিসেবে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের রিপকর্ড ১ মিলি. বা ডায়াজিনন গ্রুপের  রাজধান ১০জি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া কীড়াগুলো সংগ্রহ করে কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে নষ্ট করতে হবে।
জনাব মো: আজিজুল মালিথা, উপজেলা : ঈশ্বরদী, জেলা : পাবনা
প্রশ্ন : আমের খোসায় কালো দাগ দেখা যাচ্ছে, ভেতরে কালো দাগ এবং ছোট ছোট কীড়া দেখা যাচ্ছে। করণীয় কী?
উত্তর : সাধারণ আমের মাছি পোকার জন্য এ সমস্যা হয়ে থাকে। মাছি পোকা ফল  পরিপক্ব হওয়ার সময় অভিপজিটর ঢুকিয়ে তাতে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হওয়ার পর থেকেই মাংসল অংশ খেতে থাকে। এবং ফলের ভেতরের অংশ পচে যায়। এ সমস্যা  সমাধানে ফল ব্যাগিং করতে হবে। আক্রান্ত ফল বাগান থেকে অপসারণ করতে হবে। ১০০ গ্রাম পাকা আমের রস+৫ গ্রাম ভিটামিন+১০০ মিলি পানি মিশিয়ে বিষটোপ বানিয়ে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেরোমন ফাঁদ (যেমন : ব্যাকট্রো ডি ৮০টি লিউর/হেক্টর হারে) ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেনিট্রোথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক যেমন : সুমিথিয়ন ২.৪ মিলি/লি. হারে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে। তাছাড়াও বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ফল সংগ্রহের পর মরা ডালপালা, ফলের বোঁটা, রোগাক্রান্ত  ডালপালা, অতিঘন ডালপালা ছাঁটাই করে দিতে হবে। পরিষ্কার করার পর একটি ছত্রাকনাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। বাগান নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে এবং কোনো সমস্যা দেখামাত্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
জনাব মো: সানোয়ার, উপজেলা : বড়াইগ্রাম, জেলা : নাটোর
প্রশ্ন : কুমড়া জাতীয় ফসলের হাত পরাগায়ন কীভাবে করব?
উত্তর : বেশির ভাগ কুমড়াজাতীয় ফসলে স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল আলাদা হয়। ফলে পরাগায়নের জন্য কীটপতঙ্গের প্রয়োজন হয়। কীটপতঙ্গের মাধ্যমে পরাগায়ন ঠিকমতো না হলে ফুল শুকিয়ে পচে যায় বা ঝরে গিয়ে প্রায় ৯৫% ফলন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তখন হাত পরাগায়নের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে পরাগায়ন করিয়ে দিতে হয়। সাধারণত সকাল ৮-১০টার মধ্যে, যতক্ষণ রোদের তাপ কম থাকে তখন হাত পরাগায়ন করতে হয়। লাউয়ের  ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর আবছা আলো থাকা পর্যন্ত পরাগায়ন ভালো হয়। পুরুষ ফুলের পাপড়িগুলো আস্তে আস্তে টেনে ছিঁড়ে ফেলে পরাগদ-টি উন্মুক্ত করতে হবে। স্ত্রী ফুলের পাপড়িগুলো আলতো করে নিচের দিকে চেপে রাখতে হবে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এরপর পুরুষ ফুলটি স্ত্রী ফুলের গর্ভদ-ের মাথায় নিয়ে সংম্পর্শ ছাড়াই টোকা দিতে হবে। এতে পরাগদ- থেকে পরাগরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমু-ে পড়বে এবং পরাগায়ন সম্পন্ন হবে। সাধারণ ১টি পুরুষ ফুল দিয়ে ১০-১২টি স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন সম্ভব হয়।
সতর্কতা : মাটিতে প্রয়োজনীয় রসের যোগান অবশ্যই থাকতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদ- দিয়ে স্ত্রী ফুলের গর্ভমু- কখনোই ঘষে দেয়া ঠিক নয়। সংস্পর্শ না করে টোকা দিয়ে পরাগরেণু গর্ভমু-ে ফেলতে হবে। অবশ্যই সকালের মধ্যে পরগায়ন সম্পন্ন করতে হবে। রোদ বাড়তে থাকলে পরাগরেণু শুকিয়ে যেতে থাকে। হাত পরাগায়নের মাধ্যমে ৩০-৩৫ ভাগ পর্যন্ত ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
জনাব মঞ্জুরুল ইসলাম, উপজেলা : পলাশবাড়ি, জেলা : গাইবান্ধা
প্রশ্ন : পেয়ারা গাছের পাতায় সাদা তুলোর মতো যার কারণে পেয়ারা নষ্ট হয়ে যায়। করণীয় কী?
উত্তর : আক্রমণের মাত্রা কম থাকা অবস্থায় আক্রান্ত স্থান পাতলা কাপড় কেরোসিন বা পেট্রোল দিয়ে মুছে দিলে এ পোকার আক্রমণ রোধ করা যায়। আক্রান্ত পাতা, ডগা, ফুল ও ফল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলে এ পোকা দমন করা যায়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে ডায়াজিনন ৬০ ইসি ২ মিলি/লি: হারে পানির সাথে মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করে অতি সহজেই এ পোকা দমন করা যায়।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২; ই-মেইল : ধশষরসধফধব@মসধরষ.পড়স

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
পারভেজ মোশারফ, গ্রাম: পো: পিরগাছা, উপজেলা : নলডাঙ্গা, জেলা : নাটোর।
প্রশ্ন : পেঁয়াজের পাতায় লম্বাটে সাদা দাগ দেখা যাচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : এই জমিতে পেঁয়াজের থ্রিপস পোকার আক্রমণ হয়েছে। প্রথমে প্রতি লিটার পানিতে ৩-৫ গ্রাম সাবানের গুঁড়া মিশিয়ে স্প্রে করা। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ডাইমেথোয়েট ২মিলি., কট্্ ২০ ইসি সিপাসিন ২ গ্রাম ইত্যাদি বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মো: মতিয়ার রহমান, গ্রাম : হরিপুর, পো: দৌলতগঞ্জ, উপজেলা : জীবন নগর, জেলা : চুয়াডাঙ্গা।
প্রশ্ন : পেয়ারার গায়ে কালো/বাদামি দাগ।
উত্তর : অ্যান্থ্রাকনোজ নামক রোগের কারণে এমনটা হয়। গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা, ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ফলিকুর/নাট্রিজো নামক ছত্রাক নাশক ১ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৩/৪ বার ১৭ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।
শামীম আহমেদ, গ্রাম : বড়ইটুপি, পো: দূর্বাচারা, উপজেলা : কুষ্টিয়া সদর, জেলা : কুষ্টিয়া।
প্রশ্ন : আমের ঝাঁকড়া পুষ্প বা বিকৃতি বা ফুলের মতো পাতা বের হয়, করণীয় কী?  
উত্তর : - গাছের আক্রান্ত অসুস্থ অংশ ছাঁটাই করা।
- নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ইউরিয়া (১-২)% স্প্রে করতে হয়।
- মুকুল ধরার তিন মাস আগে ঘঅঅ ০.০২% স্প্রে করতে হবে।
- টিল্ট নামক ছত্রাকনাশক ১ লিটার পানিতে ০.৫ মিলি. দিয়ে স্প্রে করতে হবে।
কাজী হায়াত, গ্রাম : উ. দৌলতপুর, পো: মোহনগঞ্জ, উপজেলা : মোহনগঞ্জ, জেলা : নেত্রকোনা।
প্রশ্ন : লিচু গাছে মুকুল আসছে না এক্ষেত্রে করণীয় কী?
উত্তর : গাছের ডাল ছাঁটাই করতে হবে। চষধহঃ মৎড়ঃিয যড়ৎসড়হব ব্যবহার করতে হবে এবং সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।
আপন কুমার, পো : কামারাঙ্গীচড়, উপজেলা : মোহাম্মদপুর, জেলা : ঢাকা।
প্রশ্ন : পাথুরে চুন ও ব্লিচিং পাউডার জমিতে প্রয়োগের নিয়ম?
উত্তর : বিঘায় ৪-৫ কেজি চারা রোপণের ১ মাস আগে ব্যবহার করতে হবে।
মো: আতিকুর রহমান, পো : কিশোরগঞ্জ, উপজেলা : কিশোরগঞ্জ, জেলা : নীলফামারী।
প্রশ্ন : কীটনাশক ও রাসায়নিক সার একসাথে ব্যবহার করা যায় কী?
উত্তর : একত্রে স্প্রে করা যায় না। আলাদা দিনে, বিকেলে স্প্রে করতে হবে।
প্রশ্ন : করলা গাছের পাতাগুলো ছোট ছোট গুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে। করুন বড় হয় না, গাছের বৃদ্ধি নাই।  
উত্তর : আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে নষ্ট অথবা পুড়ে ফেলতে হবে। এটা করলার পাতার গুচ্ছ রোগ বা মাইকো প্লাজমা রোগ। ভাইরাসের মতো মাইকোপ্লাজমা রোগ বাহক পোকা দ্বারা বিস্তার লাভ করে। বাহক পোকা ধ্বংস করার জন্য ইমিডাক্লোসিড গ্রুপের ওষুধ ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।
মো: আতিকুজ্জামান, গ্রাম+পো : কিশোরগঞ্জ, উপজেলা : কিশোরগঞ্জ, জেলা : নিলফামারী।
প্রশ্ন : পোকা ধানক্ষেতের পাতার রস চুষে খায়। পোকাগুলো কা- ও খোলের মধ্যবর্তী জায়গায় থাকে?
উত্তর : এটা হপার পোকার আক্রমণ আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করে দিতে হবে। পোকা দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ৩ মিলি কার্বোসালফান গ্রুপের ওষুধ আক্রান্ত স্থানে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করে দিতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম, গ্রাম: নানদিয়া, পো : পাটিকাবাড়ি, উপজেলা : কুষ্টিয়া সদর, জেলা : কুষ্টিয়া
প্রশ্ন : ১০ কাঠায় গম বুনেছে। গমের জমিতে ঘাসমারা ওষুধ দিচ্ছেন ১৭ দিন বয়সে। ঘাসমারা ওষুধ আরো দিতে চাই। বাইতু ঘাস। আগাছানাশক দিতে চাচ্ছি আবার।
উত্তর : যদি গাছের বয়স ১০-১২ দিনের বেশি হয় তাহলে আগাছানাশক দেয়া যাবে না। হাত দিয়ে তুলে ফেলতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল: iopp@ais.gov.bd

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর

কৃষিবিদ আকলিমা খাতুন

নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
হাসানুল করিম, উপজেলা : নলছিটি, জেলা : ঝালকাঠী
প্রশ্ন : ‘হপার বার্ন’ কিভাবে বুঝতে পারবো? প্রতিকার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : বাদামি গাছফড়িং/কারেন্ট পোকা ধানের একটি মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। এ পোকা ধান গাছের গোড়ায় বসে রস শুষে খায়। ফলে গাছ পুড়ে যাওয়ায় বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পোড়ার মতো হপার বার্নের সৃষ্টি হয়।
   আমন মৌসুমে আগস্ট মাসের শুরু থেকে নিয়মিত ধান গাছের গোড়া পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। পোকা থাকলে আক্রান্ত জমির পানি সরিয়ে দিয়ে ৭-৮ দিন জমি শুকনো রাখতে হবে।
    আক্রান্ত জমিতে ২-৩ হাত দূরে দূরে বিলিকেটে সূর্যের আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।
    সঠিক দূরত্বে (সারি থেকে সারি ২০-২৫ সেমি. ও গুছি থেকে গুছি ১৫-২০ সেমি. লাইনে চারা রোপণ ও পদ্ধতি (১০ লাইন পরপর ১ লাইন ফাঁকা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
    আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা ও পরবর্তীতে নাড়া পুড়ে ফেলতে হবে।
    জমির অধিকাংশ গাছে ৪টি ডিমওয়ালা পুর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকা বা ১০টি ছোট বাদামি গাছফড়িং দেখা গেলে অনুমোদিত কীটনাশক গাছের গোড়ায় দ্রুত স্প্রে করতে হবে।
    বাদামি গাছফড়িং দমনে কার্যকরী কীটনাশক পাইমেট্রোজিন গ্রুপের ওষুধ পাইরাজিন ৭০ ডব্লিউ জি ৪ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করা অথবা আইসোপোকার্ব ৭৫ ডব্লিউপি (সপসিন/মিপসিন) = ০.২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মো: বজলুল হক, উপজেলা : কসবা, জেলা : ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
প্রশ্ন : সরিষা চাষের উপযুক্ত সময় ও উন্নত জাত সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : সরিষা বাংলাদেশের প্রধান ভোজ্যতেল ফসল। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমিতে এর চাষাবাদ হয়। এটি একটি স্বল্পকালীন ফসল। বিভিন্ন জাতের সরিষা বীজে ৪০-৪৪% তেল থাকে। বিভিন্ন অঞ্চলের তারতম্য ও জমির জো অনুযায়ী যেসব জমিতে উফশী বোরো ধানের চাষ হয় সেসব জমিতে স্বল্পমেয়াদি সরিষা চাষ হয়। অধিকাংশ বীজ মধ্য আশ্বিন মধ্য কার্তিক মাস পর্যন্ত বপন করা যায়। সরিষার উন্নত জাতগুলো হলো বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৫, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৮ বিনা সরিষা-৪ ও বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা -১০। বারি সরিষা ১৮ পরিমিত সার ও সেচ প্রয়োগে হেক্টরপ্রতি ১৮ মে.টন ফলন পাওয়া যায়। বিনা-৪ জাতের সরিষা উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় হেক্টরপ্রতি ১.৮৮-২.৫৫ মে. টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বিনা সরিষা ৯ এর ফলন ১.৮ টন হেক্টর।
মো: নাজমুল, উপজেলা : শিবালয়, জেলা : মানিকগঞ্জ
প্রশ্ন : আনারসের জনপ্রিয় জাত এমডি-২ সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : ‘সুপার সুইট’ খ্যাত এমডি-২ আনারস ফিলিপাইনের একটি জাত। এটি অত্যাধিক চাহিদাসম্পন্ন অম্ল মধুর মিষ্টতায় (১৪% বিক্স)। দেশে প্রচলিত জাতের তুলনায় ৪ গুণ ভিটামিন ‘সি’ ছাড়াও ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘ কে’, ফসফরাস ও জিংক রয়েছে। বর্ষার পর অক্টোবর-নভেম্বর মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। এ জাতের মুকুট ভাসা থাকায় ভক্ষণশীল অংশের পরিমাণ বেশি। সাকারের আকার অনুযায়ী ১২-১৬ মাসে উৎপাদিত হয়। প্রতিটি আনারস ১.৫-২ কেজি ওজনের হয়। ফলন গড়ে ৪০০০-৪৫০০ কেজি প্রতি বিঘায় তবে উপযুক্ত সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ফলন প্রতি বিঘা ৮০০০-৯৫০০ কেজি হতে পারে।
মো: ইমরান হোসেন, উপজেলা : হরিরামপুর, জেলা : মানিকগঞ্জ।
প্রশ্ন : পুঁইশাকের পাতায় গোল গোল বাদামি দাগ পড়ে ও সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাই।   
উত্তর : এটি একটি বীজবাহিত রোগ। বাতাস, বৃষ্টি ও সেচের পানি দ্বারা রোগটির জীবাণুর বিস্তার ঘটে। এটি পুঁইশাক পাতার দাদ রোগ নামে পরিচিত ও পবৎপড়ংঢ়ড়ৎধ নবঃরপড়ষধ নামক ছত্রাক দ্বারা সংঘটিত হয়।
    আক্রান্ত পাতাগুলো তুলে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
    বপনের আগে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক (নোইন) দ্বারা শোধন করা প্রয়োজন। প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
    সুষম সার ব্যবহার ও পরিমিত সেচ প্রদান করতে হবে।
    ছত্রাকনাশক ব্যবহারের আগে অব্যশই খাওয়ার উপযোগী পাতা তুলে নিতে হয়। স্প্রে করার ১ সপ্তাহ পর খাওয়ার জন্য পাতা সংগ্রহ করতে হবে।
সাওফা ফাতেমা, উপজেলা : রূপপুর, জেলা : নারায়ণগঞ্জ।
প্রশ্ন : লাউ ফসলের কৃত্রিম পরাগায়ন ব্যবস্থাপনা কিভাবে করতে পারি?
উত্তর : লাউয়ের পরাগায়ন প্রধানত মৌমাছি দ্বারা সম্পন্ন হয়। প্রাকৃতিক পরাগায়নের জন্য হেক্টরপ্রতি দু’টি মৌমাছির কলোনি স্থাপন করা প্রয়োজন। নানা কারণে লাউয়ের সব ফুলে প্রাকৃতিক পরাগায়ন ঘটে না এবং ফলন কমে যায়। হাত দিয়ে কৃত্রিম পরাগায়ন করেও লাউয়ের ফলন ৩০-৩৫% বৃদ্ধি করা সম্ভব। লাউয়ের ফুল ঠিক মতো রোদ পেলে দুপুরের পর ফোটা শুরু হয়ে রাত ৭-৮টা পর্যন্ত ফোটে। কৃত্রিম পরাগায়ন ফুল ফোটার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং পরদিন সকাল পর্যন্ত করা যায়। তবে পর দিন সকালে পরাগায়ন করলে ফল কম ধরে। কিন্তু ফুল ফোটার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত যে কয়টা ফুলে পরাগায়ন হয় তার সবকটিতে ফল ধরে। কৃত্রিম পরাগায়নের নিয়ম হলো ফুল ফোটার পর পুরুষ ফুল ছিড়ে ফুলের পাঁপড়ি অপসারণ করা এবং ফুলের পরাগধানী (যার মধ্যে পরাগরেণু থাকে) আস্তে করে স্ত্রী ফুলের গর্ভমু-ে ঘষে দেয়া। একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ২-৪টি স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন করা যায়।
মো: আমজাদ মিয়া, উপজেলা : নবাবগঞ্জ, জেলা : ঢাকা।
প্রশ্ন : ফুলকপির চারার গোড়া কেটে দিচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : কাটুইন পোকা পোকা রাতের বেলা চারা মাটি বরাবর কেটে দেয়। কাটুই পোকার আক্রমণে সকাল বেলা চারা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ব্যবস্থাপনা  
   সকাল বেলা কেটে ফেলা চারার আশেপাশে মাটি খুঁড়ে পোকা বের করে মেরে ফেলতে হবে।
    কেরোসিন (২-৩ লি:/হে:) মিশ্রিত পানি সেচ দেয়া প্রয়োজন।
    জমি চাষ দিয়ে মাটি উলট-পালট করে পোকা নষ্ট করা যায়।
    পাখি বসার জন্য জমিতে ডাল পুঁতে দেয়া প্রয়োজন।
    জমিতে সন্ধ্যার সময় বিষটোপ ব্যবহার (১ কেজি চাউলের কুঁড়া/গমের ভুসির সাথে ২০ গ্রাম সেভিন কীটনাশক পানি/চিটাগুড়ের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
    প্রতি লিটার পানিতে ক্লোরোপাইরিফস (ডার্সবান) ১.৫ মিলি হারে গাছের গোড়ায় ১০ দিন পরপর ৩ বার ব্যবহার করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (পিপি), কৃষি তথ্য সার্ভিস,
খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫। মোবাইল : ০১৯১৬৫৬৬২৬২;
ই- মেইল : aklimadae@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।

 

শেফালি বেগম, গ্রাম: কেরাদারি, উপজেলা: রাজারহাট, জেলা: কুড়িগ্রাম
প্রশ্ন: মসুরের গাছের পাতা, শাখা-প্রশাখা ও ফলে হলুদ বা মরিচা রঙের ফোসকা পড়ে এবং পরবর্তীতে গাছগুলো শুকিয়ে যায়। এ সমস্যার সমাধানে কী করণীয়?
উত্তর: মসুরের এ রোগটি মসুরের মরিচা রোগ নামে পরিচিত। এ রোগ প্রতিকারে বারি মসুর-৪ ও বারি মসুর-৮ মরিচা রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করলে সুফল পাওয়া যায়। এছাড়া রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে প্রপিকোনাজল গ্রুপের যেমন- টিল্ট/রেমিডি/প্রাউড প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।

 

সাইমন, গ্রাম: পিরোজপুর, উপজেলা: মেহেরপুর সদর, জেলা: মেহেরপুর
প্রশ্ন: ছোলার ফল আসা শুরু হলে ছোলা গাছের ভেতরের পাতাগুলো হলুদ হয়ে যায় এবং আক্রান্ত পাতাগুলো শুকিয়ে ঝরে পড়ে। এ সমস্যায় এখন আমি কী করব জানাবেন?  
উত্তর:  ছোলা গাছের এ সমস্যাটিকে ছোলার বট্রাইটিস গ্রে মোল্ড রোগ বলে। এ রোগের আক্রমণ রোধে যেসব কর্মকা- করতে হয় তাহলো-গাছ ঘন হয়ে থাকলে পাতলা করে দিতে হয়; ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হয়; কার্বেনডাজিম গ্রুপের যেমন অটোস্টিন ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হয়। এছাড়া রোগ প্রতিরোধী জাত বারি ছোলা-১০ এর চাষ করলে এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

 

সাইফুল, গ্রাম: মৌতলা, উপজেলা: কালিগঞ্জ, জেলা: সাতক্ষীরা
প্রশ্ন:  সরিষা ক্ষেতে এক ধরনের আগাছার আক্রমণ যা সরিষার গাছের শিকড়ের সাথে যুক্ত। এখন আমি কি করব?
উত্তর: অরোবাংকি নামক পরজীবী উদ্ভিদ এর কারণে সরিষা ক্ষেতে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। বারবার একই জমিতে সরিষা ফসল চাষ করলে এ পরজীবী উদ্ভিদের বিস্তার হয়। এ সমস্যা দূরীকরণে ফুল আসার আগেই পরজীবী উদ্ভিদ জমি থেকে তুলে ধ্বংস করতে হবে। পরিমিত হারে টিএসপি সার ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া পূর্বে আক্রান্ত জমি গভীরভাবে চাষ করতে হবে। আর সব শেষ ব্যবস্থা হিসেবে আগাছানাশক যেমন-২,৪-ডি ছিটিয়ে পরজীবী উদ্ভিদ দমন করা যায়। আশাকরি এসব পদক্ষেপ নিলে আপনি উপকার পাবেন।  

    
আনজুআরা, গ্রাম: দক্ষিণ পাতাকাটা,  উপজেলা: বরগুনা সদর, জেলা: বরগুনা
প্রশ্ন: সূর্যমুখীর পাতা ঝলসানো রোগ কীভাবে দমন করব জানাবেন?
উত্তর : আমাদের দেশে সূর্যমুখীর রোগের মধ্যে পাতা ঝলসানো অন্যতম। এ রোগের আক্রমণ হলে পাতায় প্রথমে ধূসর বা গাঢ় বাদামি বর্ণের অসম দাগ পড়ে। পরে দাগগুলো মিশে গিয়ে বড় দাগের সৃষ্টি হয়। পরে পুড়ো পাতা ঝলসে যায়। এজন্য এ সমস্যা সমাধানে রোগ সহনশীল বারি সূর্যমুখী-২ জাত চাষ করতে হবে। এছাড়া রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে ইপ্রোডিয়ন গ্রুপের যেমন রোভরাল ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার পাতায় স্প্রে করলে এ রোগের প্রকোপ কমে যায়। এছাড়া ফসল কাটার পর পরিত্যক্ত অংশ নষ্ট বা পুড়িয়ে ফেললে এ রোগের উৎস নষ্ট হয়ে যায়।
আজাদ হোসেন, গ্রাম: তিনিশপুর, উপজেলা: নরসিংদী সদর, জেলা: নরসিংদী
প্রশ্ন:  ভুট্টার কাণ্ড পচারোধে কী করতে হবে?
উত্তর: খরিফ মৌসুমে এ রোগ বেশি হয়। এছাড়া জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি ও পটাশের পরিমাণ কম হলে এ রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। এ রোগে কাণ্ডের নিচের দিকে নরম ও পানি ভেজা দাগ পড়ে পাশাপাশি রোগের আক্রমণে গাছের কা- পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙে পড়ে। সুস্থ ও সবল বীজ বপন এবং সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ মাত্রা বাড়লে কার্বেনডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন অটোস্টিন অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম গ্রুপের প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করলে এ রোগ দমন করা যায়। এছাড়া  ডাইফেনোকোনাজল গ্রুপের  স্কোর ২৫০ ইসি এক লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করলে আপনি সুফল পাবেন।
তাবরিজ, গ্রাম: বিষকা, উপজেলা: তারাকান্দা, জেলা: ময়মনসিংহ
প্রশ্ন:  গ্লাডিওলাসের ঢলে পড়া রোগ দমনের সমাধান কী?
উত্তর:  এ রোগটি কন্দ, পাতা ও শিকড় সর্বত্রই লক্ষণ দেখা যায় এবং মাটির তলায় কন্দে পচন শুরু হয়। প্রথমে পুরনো পাতা ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে মরে যায়। পরবর্তীতে কন্দ পচে যায় ও আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে মারা যায়। রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করার পাশাপাশি শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে। রোগমুক্ত বীজ কন্দ ব্যবহার করতে হবে। এরপরও যদি জমিতে রোগ দেখা  দেয় তবে কার্বেনডাজিম গ্রুপের  যেমন-অটোস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় মাটিতে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। তবেই আপনি সুফল পাবেন বলে আশা করি।
মৎস্য বিষয়ক
মো: হাবিব, গ্রাম: দক্ষিণ মহেশপুর, উপজেলা: ফুলবাড়ি, জেলা: দিনাজপুর
প্রশ্ন: পিজি তৈরি করার ডোজ জানতে চাই?
উত্তর: এক কেজি স্ত্রী ও ১ কেজি পুরুষ মাছের কৃত্রিম প্রজননের জন্য ইনজেকশন দিতে হবে। এক কেজি স্ত্রী মাছের জন্য ৭০ মিলি গ্রাম পিজি ৭ সিসি পানিতে মিশাতে হবে। সিরিঞ্জের প্রতি ১ সিসি তে ১০ দাগ আছে, সেই হিসাবে ১০০ গ্রাম মাছের জন্য ৭ মিলিগ্রাম=৭ দাগ পিজি প্রয়োগ করতে হবে। অনুরূপভাবে, ১ কেজি পুরুষ মাছের জন্য ৩০ মিলিগ্রাম পিজি প্রয়োজন। ৩০ মিলিগ্রাম পিজি ৩ সিসি পানিতে গুলতে হবে (প্রতি ১ সিসি=১০ দাগ)। ১০০ গ্রাম মাছের জন্য ৩ মিলিগ্রাম=৩ দাগ প্রয়োগ করতে হবে।
গোলাম মোস্তফা, গ্রাম: কল্যাণপুর, উপজেলা: সাপাহার, জেলা: নওগাঁ
প্রশ্ন: পুকুরে মাছের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যাচ্ছে।              কী করব?
উত্তর:  পোনার পুকুরে বিভিন্ন এককোষী বাহ্যিক পরজীবী, উকুন, ফুলকা পচা, পাখনা পচা ইত্যাদি  রোগের বিস্তার ঘটে থাকে। ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধে পুকুরে ১,২ গ্রাম/শতাংশ/৩০ সেমি পানি হারে ম্যালাকাইট গ্রিন এবং উকুন রোধে ১২ গ্রাম/শতাংশ/৩০ সেমি পানি হারে ডিপটারেক্স/সাইপারমেথ্যিন গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
মো: ফারুক, গ্রাম: রনসিয়া, উপজেলা: পীরগঞ্জ, জেলা:  ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন: আমার মুরগির বাচ্চার বয়স ১০-১৫ দিন। ঝিমাচ্ছে, মাথা ঝুলে পড়েছে। লাইটের নিচে জড়ো হয়ে আছে। বুকের চামড়ার নিচে ফুলে আছে। কী করব পরামর্শ চাই?
উত্তর: অ্যামোক্সিসিলিন অথবা মোক্সাসিলিন অথবা কলিস্টিন গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতে হবে। ফুসিড ট্যাবলেট ১টা ২ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১ দিন খাওয়াতে হবে। স্যালাইন খাওয়াতে হবে। হ্যাচারির ইনকিউবেটরের মাধ্যমে আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোগের প্রতিরোধ ও বিস্তার রোধ করা সম্ভব।   

 

মোকসেদুর রহমান, গ্রাম: উমরগ্রাম, উপজেলা: গঙ্গাচরা, জেলা: রংপুর
প্রশ্ন: আমার টার্কির বাচ্চার বয়স ৪ সপ্তাহ। গায়ে জ্বর আছে, সাদা চুনের মতো ডায়রিয়া হচ্ছে। ঝিমাচ্ছে এবং এলোমেলোভাবে চলাফেরা করছে। কী করণীয়?
উত্তর: এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ যার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে যেহেতু এই রোগের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অন্যান্য রোগের সংক্রমণ খুব সহজেই হয়, তাই নিম্নলিখিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
সিপ্রোফ্লক্সিন গ্রুপের ওষুধ ১ লিটার পানিতে ১ মিলি মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এছাড়াও ভিটামিন সি ৩ লিটার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।   
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)
কৃষির যে কোনো প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান পেতে বাংলাদেশের যে  কোনো জায়গা থেকে যে কোনো মোবাইল থেকে কল করতে পারেন আমাদের কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ এ নাম্বারে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এবং কৃষি বিষয়ে সকাল ৭টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত। তাছাড়া কৃষিকথার গ্রাহক হতে বার্ষিক ডাক মাশুলসহ ৫০ টাকা মানি অর্ডারের মাধ্যমে পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫ এ ঠিকানায় পাঠিয়ে ১ বছরের জন্য গ্রাহক হতে পারেন। প্রতি বাংলা মাসের প্রথম দিকে কৃষিকথা পৌঁছে যাবে আপনার ঠিকানায়।

 

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল নং ০১৭১১১১৬০৩২, ঃtaufiquedae25@gmail.com

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নোত্তর
কৃষিবিদ মোঃ আবু জাফর আল মুনছুর
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
মোঃ হোসেন মিঞা, উপজেলা : বিজয়নগর, জেলা : ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রশ্ন : লাউ গাছের গোড়া থেকে কষ বের হয়, করণীয় কী?
উত্তর : এই রোগকে গামোসিস বা কষ বের হওয়া রোগ বলে। আক্রান্ত কা-ে বোর্দোপেস্ট (১০০ গ্রাম তুঁত + ১০০ গ্রাম চুন + ১ লিটার পানি) লাগানো যেতে পারে বা ১% বোর্দোমিকচার বা কপার অক্সিক্লোরাইড (০.৪%) স্প্রে করা যেতে পারে।
মোঃ শাহীন মাহমুদ, উপজেলা : দেওয়ানগঞ্জ, জেলা : জামালপুর
প্রশ্ন : ভুট্টার চারার কচি পাতা এবং গোড়া কেটে দেয়, সমাধান কী?
উত্তর : ভুট্টার কাটুই পোকা এ ক্ষতি করে। এ জন্য ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে। দানাদার বালাইনাশক কারটাফ ৬ কেজি/ হেক্টর বা কার্বোফুরান ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ক্লোরপাইরিফস ৫ মিলি./লি. অথবা ল্যামডাসাইহ্যালোথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ১.৫ মিলি./লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে/সন্ধ্যার পর গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা : হাতিবান্ধা, জেলা : লালমনিরহাট
প্রশ্ন : ফুল কপির গোঁড়া পঁচা রোগ হচ্ছে, করণীয় কী?
উত্তর : অতিরিক্ত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। আক্রমণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম কপার অক্সিক্লোরাইড বা ২ গ্রাম ম্যানকোজেব মিশিয়ে গাছের গোড়া ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মোঃ আবদুস সালাম, উপজেলা : বদলগাছী, জেলা : নওগাঁ
প্রশ্ন : লবণাক্ততা কিভাবে কমাতে হবে?
উত্তর : ধান চাষ করলে সব সময় পানি ধরে রাখতে হবে। বৃষ্টির পানি জমিতে আটকে রাখতে হবে। জমি একদিকে কিছুটা ঢাল করে রাখলে এবং উপর হতে সেচ দিলে ঢাল দিয়ে পানি বের করতে হবে।
জিপসাম সার ১০-১২ কেজি/বিঘা প্রতি প্রয়োগ করতে হবে।
মালচিং এবং সবুজ সার ব্যবহার করা ভালো। এছাড়াও সর্জান পদ্ধতিতে ফসল চাষ করা যেতে পারে।
মোঃ কফিল উদ্দিন, উপজেলা : বোচাগঞ্জ, জেলা : দিনাজপুর
প্রশ্ন : গৌরমতি আম সম্পর্কে বলুন।
উত্তর : এই আম নাবি জাতের। এই আমে টোটাল সলিউবল সুগার প্রায় ২৫ শতাংশ। এই আম ল্যাংড়া ও আশ্বিনার  প্রাকৃতিক পরাগায়নে নতুন এ জাতটির উদ্ভব হয়েছে। এটা আগস্টের ২য় সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত পাকে। প্রতিটি আমের ওজন প্রায় ৩৫০-৬০০ গ্রাম। সাধারণত ৩ বছর বয়সে গাছে ফল ধরে। এই আম স্বাদে, মিষ্টতায়, গন্ধে অতুলনীয়। এ সময় অন্য আম সহজলভ্য না হওয়ায় ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়।
মোছাঃ সালমা বেগম, উপজেলা : রাজপুর, জেলা : ঝালকাঠী
প্রশ্ন : কীটনাশক কখন ব্যবহার করবো?
উত্তর : সাধারণত সকাল ৯ টার পরে স্প্রে করতে হবে। অথবা শেষ বিকেলে। তবে কুয়াশা/শিশির ভেজা অবস্থায় দেয়া যাবে না। প্রচন্ড তাপ, গরমে স্প্রে করা যাবে না।
মোঃ নাজমুল হোসাইন, উপজেলা : উল্লাপাড়া, জেলা : সিরাজগঞ্জ
প্রশ্ন : ধানের জমিতে মরা ডিগ ও সাদা শীষ দেখা যাচ্ছে, এখন করণীয় কী?
উত্তর : ক্ষেতে ডাল বা কঞ্চি পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা। হাত জাল দিয়ে মাজরা পোকা ধরে মেরে ফেলা। জমিতে বেশি পরিমাণে আক্রমণ হলে হেক্টর প্রতি ক্লোরপাইরিফস ১.৫ লি., কার্বোসালফার (মার্শাল) ১.১৫ লি., কারটাপ (সুুসিটাপ) ১.২০ লি. যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
মোঃ আশরাফ, উপজেলা : রংপুর সদর, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : মরিচের জমিতে পাতা কুঁকড়ে যায়, করণীয় কী?
উত্তর : আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে নষ্ট করে ফেলা। ভাইরাসের বাহক পোকা সাদা মাছিকে বালাইনাশক দ্বারা দমন করা যেমন-ডায়াজিনন, সুমিথিয়ন, টাফগর, ইমিডাক্লোরপ্রিড (এভমায়ার, টিডো) ইত্যাদি ব্যবহার করা।
মোঃ তোফাজ্জল, উপজেলা: হোসেনপুর, জেলা : কিশোরগঞ্জ
প্রশ্ন : ডালিমের ফুল ঝড়ে পড়ার জন্য সমাধান কী?
উত্তর : সলিউর বোরন সার গাছে স্প্রে করে দিতে হবে যদি ফুল বা ফল শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে। তবে ফলের নিচের অংশে যদি পচন ধরে তারপর পড়ে যায় তাহলে রিডোমিল গোল্ড দিতে হবে।
মোঃ রেজাউল, উপজেলা : পীরগঞ্জ, জেলা : রংপুর
প্রশ্ন : পটলের কা- ও গায়ে সাদা সাদা থাইসেলিয়াম দেখা দেয়। তার পর গাছের গোড়া, শিকড় ও পটলে পানি ভেজা নরম পচা রোগ দেখা দিলে করণীয় কী?
উত্তর : পটলের শাখা কলম শোধন করে নিতে হবে। রোগের আক্রমন দেখা দিলে ১ লিটার পানিতে ০.৫ মিলি. টিল্ট বা কমপ্যানিয়ন ১০-১২ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

লেখক : তথ্য অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৪১০৪৮৫৩; ই-মেইল : iopp@ais.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon