Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর (১৪২৬)

কৃষিবিদ মো. তৌফিক আরেফীন
কৃষি বিষয়ক
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য আপনার ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ দমনে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করুন।
চিত্রালী রায়, গ্রাম: মৌতলা, উপজেলা: কালিগঞ্জ, জেলা: সাতক্ষীরা
প্রশ্ন: মুগডালের পাতায় পাউডারের মতো দাগ দেখা যায় এবং পাতাগুলো কালোও দেখায়। এ অবস্থায় কি করণীয়?   
উত্তর: এ ধরনের রোগকে পাউডারি মিলডিউ বলে। আমাদের দেশে খরিফ-২ মৌসুমে এটি বেশি দেখা যায়। এ রোগে পুরো পাতা আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে পাতা, কাÐ ও ফুল-ফলে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। পাতার উপরে সাদা পাউডার ধীরে ধীরে ছাই রঙ ধারণ করে। এ রোগের কোনো প্রতিরোধী জাত নেই। তবে ভাদ্র মাসের শুরু থেকে আশি^ন মাসের ১ম সপ্তাহে বোনা ফসলে এ রোগের পরিমাণ কম হয়। এ রোগ দমনে  প্রপিকোনাজল গ্রæপের যেমন টিল্ট/প্রাউড প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যায়।
মৃন্ময়, গ্রাম: করোলিয়া, উপজেলা: তেরখাদা, জেলা: খুলনা
প্রশ্ন: করলা গাছের কচি পাতায় এক ধরনের পোকা পাতার রস চুষে খায়। ফলে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। কি করব?  
উত্তর:  সাধারণত করলার জাব/জ্যাসিড পোকার আক্রমণ হলে এ সমস্যা হয়ে থাকে। এ পোকা দমনের জন্য জৈব       বালাইনাশক যেমন বাইকাও ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া পোকার আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রæপের এমিটাফ/টিডো/এডমায়ার ০.৫ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে উপকার পাবেন।  
মো: ইছাহাক আলী, গ্রাম: কেরাদারি, উপজেলা: রাজারহাট, জেলা: কুড়িগ্রাম
প্রশ্ন:  এক প্রকার রোগের কারণে মরিচ গাছ এক পাশে বা সম্পূর্ণ গাছ ঢলে পড়ে। এমনকি গাছও মারা যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধান জানাবেন।   
উত্তর:  এ রোগে আক্রান্ত মরিচ গাছ সম্পূর্ণ তুলে ফেলে নষ্ট করতে হবে। তবে সুস্থ গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করলে এ সমস্যা কমে যায়। আর মরিচ গাছ লাগানোর আগে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন/নোইন বা প্রোভেক্স ২০০ ডবিøউপি মিশিয়ে চারা শোধণ করা যায়। তাহলে এ ধরনের সমস্যা দূর হবে।      
মো: খাইরুল আলম, গ্রাম: এলাইগা,  উপজেলা: পীরগঞ্জ, জেলা: ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন:  লেবু গাছে এক ধরনের পোকা পাতায় আঁকাবাঁকা সুরঙ্গ তৈরি করে। এ পোকা দমনে কি করণীয় ?
উত্তর:  এ পোকাকে লিফ মাইনার পোকা বলে। লেবুজাতীয় ফসলের জন্য এ পোকা মারাত্মক। এ পোকার আক্রমণ বেশি হলে পাতা কুঁকড়ে যায় ও বিবর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে। এমনকি আক্রান্ত পাতায় ক্যাংকার হয়ে গাছ দুর্বল হয় এবং গাছের বাড়বাড়তি কমে যায়। এ পোকা দমনে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করা দরকার। আর প্রাথমিক অবস্থায় লার্ভাসহ আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। তারপরও যদি পোকার আক্রমণ বেশি হয় তবে ১ লিটার পানিতে ০.২৫ মিলি এডমায়ার বা ২ মিলি কিনালাক্স ২৫ ইসি মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার কচি পাতায় স্প্রে করতে হবে। তবেই আপনি উপকার পাবেন।   
মো. কবির হোসেন, গ্রাম: সাকোয়া  উপজেলা: বোদা, জেলা: পঞ্চগড়
প্রশ্ন:  মার্চ-এপ্রিল মাসে জায়ান্ট মিলিবাগ দমন সম্পর্কে জানাবেন।
উত্তর: মার্চ-এপ্রিল মাসে জায়ান্ট মিলিবাগ পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী পোকা ধ্বংস করার জন্য আক্রান্ত গাছসমূহে ফেব্রæয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ হতেই গোড়ার মাটি থেকে ১ মিটার উঁচুতে ৩-৪ ইঞ্চি চওড়া পিচ্ছিল র‌্যাপিং টেপ গাছের চতুর্দিকে আবৃত করে দিতে হয়। এতে করে পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী পোকা ডিম পাড়ার জন্য গাছের উপর থেকে নেমে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং র‌্যাপিং টেপের উপরের অংশে জমা হয়। এ অবস্থায় এদের একসাথে করে  মেরে ফেলতে হয় অথবা জমাকৃত পোকার উপর জৈব বালাইনাশক পটাশিয়াম সল্ট অব ফ্যাটি এসিড যেমন ফাইটোক্লিন, প্রতি লিটার পানিতে ৮-১০ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২ থেকে ৩ বার বা সংস্পর্শ কীটনাশক ক্লোরপাইরিফস প্রতি লিটার পানিতে ৩ মিলি হারে ৭ থেকে ৮ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার বা কার্বারাইল প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ৭ থেকে ৮ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করে দমন করা যায়। গাছে আক্রমণকালীন যে কোন সময় উল্লেখিত জৈব বালাইনাশক, ফাইটোক্লিন দিয়ে পোকাটি দমন করা যায়। জৈব বালাইনাশকের পরিমাণ কমানোর জন্য কেবলমাত্র উক্ত পোকার শরীরে জৈব বালাইনাশক স্প্রে করা দরকার।  
মোছা: রতœা বেগম, গ্রাম: মামুদপুর, উপজেলা: ক্ষেতলাল সদর, জেলা: জয়পুরহাট
প্রশ্ন: পুদিনা পাতা পোড়া রোগ দমন করব কিভাবে?
উত্তর: রোগাক্রান্ত পাতা পুড়ে ফেলতে হবে। পুদিনা পাতায় পাতা পোড়া/ঝলসানো রোগ দেখা দিলে ডাইফেনোকোনাজল ও এ্যাজোক্সিস্ট্রবিন গ্রæপের ছত্রাকনাশক যেমন-এমিস্টার টপ ৩২৫ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ৩-৪ বার গাছে ¯েপ্র করতে হবে। তাহলেই আপনি উপকার পাবেন।
মৎস্য বিষয়ক
মোঃ দেলোয়ার হোসেন, গ্রাম: চরপাড়া, উপজেলা: নান্দাইল, জেলা: ময়মনসিংহ
প্রশ্ন: মাছ পেট ফুলে মারা যাচ্ছে। কি করব ?
উত্তর: অ্যারোমনাডস জাতীয় ব্যাকটেরিয়া এ রোগের কারণ। এ রোগে মাছের দেহের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে পানি সঞ্চালনের মাধ্যমে মাছের পেট ফুলে উঠে। ফলে মাছ ভারসাম্যহীনভাবে চলাফেরা করে ও পানির উপর ভেসে থাকে। ফলে অচিরেই মাছ মারা যায়। আক্রান্ত মাছকে প্রতি কেজি খাবারের সাথে মেট্রোনিডাজল/অক্সিটেট্রাসাইক্লিন গ্রæপের ওষুধ মিশিয়ে সাত দিন খাওয়াতে হবে। অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ২০ থেকে ১০০ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে পাঁচ দিন ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।   
মো. সিহাব অধিকারী, গ্রাম: ফুলবাড়ি, উপজেলা: গোবিন্দগঞ্জ, জেলা: গাইবান্ধা
প্রশ্ন: কাতলা মাছের ফুলকার উপর বাদামি গুটি দেখা যাচ্ছে ও ফুলকা পচে যাচ্ছে। কিছু মাছ মারাও যাচ্ছে। কি করব ?
উত্তর: এ রোগের নাম মিক্সোবলিয়াসিস। মিক্সোবলাস প্রজাতির এক ধরনের এককোষী প্রাণী রুইজাতীয় মাছের বিশেষ করে কাতলা মাছের ফুলকার উপর সাদা বাদামি গুটি তৈরি করে। এতে করে ঐ গুটির প্রভাবে ফুলকায় ঘা দেখা যায় ও ফুলকা খসে পড়ে। শ^াস প্রশ^াসের ব্যাঘাত ঘটার কারণে মাছ অস্থিরভাবে ঘোরাফেরা করে ও শেষ রাতের দিকে ব্যাপক মড়ক দেখা যায়। অদ্যাবধি এ রোগের কোন চিকিৎসা সরাসরি আবিষ্কৃত হয়নি। তারপরও শতকপ্রতি ১ কেজি হারে চুন দিলে পানির অ¤øত্ব দূর হয়ে পরজীবীগুলো অদৃশ্য হয়ে যায় ও মাছ নিষ্কৃতি লাভ করে।
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক
বাহার মজুমদার, গ্রাম: বাইয়ারা, উপজেলা: সোনাইমুড়ি, জেলা: নোয়াখালী
প্রশ্ন: আমার ছাগলের বয়স ২ বছর। ছাগল প্রথমে দাঁড়ানো অবস্থায় চর্তুদিকে ঘুরছিল। শরীর কাঁপছিল, পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। পেটব্যথার কারণে শুয়ে পা ছোড়াছুড়ি করছিল এবং কিছু সময় পরেই মারা গেল। এ অবস্থায় কি করণীয় ?
উত্তর: যেহেতু এ রোগ হলে হঠাৎ করে মারা যায়। সেজন্য সাধারণত কোনো চিকিৎসা করা যায় না। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ শনাক্ত করা গেলে এট্টোফিন সালফেট ইনজেকশন ৩ মিলি ৬ ঘণ্টা পর পর এবং শিরায় স্যালাইন দিলে অনেক ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অসুস্থ ছাগলকে সুস্থ ছাগল থেকে আলাদা করে রাখা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত দানাদার খাদ্য সরবরাহ না করা।
মোঃ আতিউর রহমান, গ্রাম: হজরতপুর, উপজেলা: ফুলবাড়ি, জেলা: দিনাজপুর
প্রশ্ন: আমার লেয়ার মুরগিগুলো নিজেদের মধ্যে খুব ঠোকরাঠুকরি করছে এবং দেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় কি করণীয়?    
উত্তর: এদেরকে ঠোঁট কাটতে হবে অর্থাৎ ডিবিকিং। খামারে যথাযথ আলো ও প্রাকৃতিক বাতাস প্রবেশ করা নিশ্চিত করতে হবে। বাচ্চার ৬ থেকে ১০ দিন বয়সে ঠোঁটকাটা, ঘরে লাল আলো ব্যবহার, আলোর তীব্রতা কমানো ও প্রতিটি মুরগির জন্য পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ইলেকট্রোলাইট ও মিনারেলের ঘাটতি দূর করার জন্য ইলেকট্রোমিন পাউডার ও ক্যালপি পাউডার খাওয়াতে হবে। য়                        
(মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশ্ন কৃষি কল সেন্টার হতে প্রাপ্ত)

উপপ্রধান তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল নং ০১৭১১১১৬০৩২, ঃ

taufiquedae25@gmail.com