Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

প্রশ্নোত্তর কৃষিকথা-১৪২১

দিপংকর রায়
ঠাকুরগাঁও সদর, ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : বীজতলার ধানের চারা  গাছ হলুদ হয়ে যায়। কুশির বাড়-বাড়তি কমে যাচ্ছে। কী করণীয়।
উত্তর : বোরো মৌসুমে চারা অবস্থায় শৈত্যপ্রবাহ হলে কুশির  বাড়-বাড়তি কমে যায় ও গাছ হলুদ হয়ে যায়।
 
তীব্র শীতে করণীয় : ১। ঠাণ্ডা থেকে ধানের বীজতলা রক্ষা করার জন্য সকাল ১০ টা থেকে সূর্য ডোবা পর্যন্ত স্বচ্ছ পলিথিন ছাউনি দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে যাতে বীজতলার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
 
২। তীব্র শীতের সময় গভীর নলকূপের পানি গরম থাকায় বীজতলায় চারার গোড়ায় ৩-৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখলে চারা মারা যাবার সম্ভাবনা কম থাকে।
৩। বীজতলায় শীতের সকালে দুইপাশে দড়ি ধরে বীজতলায় চারার ওপর দিয়ে হালকা ধরে টেনে পাতার শিশির সরিয়ে দিলে সূর্যের আলো পাতায় সরাসরি পড়ায় চারা কিছুটা সতেজ থাকে।
৪। রোপণের জন্য কমপক্ষে  ৩৫-৪৫ দিনের চারা ব্যবহার করতে  হবে।
 
ইযেবুল হক
খানসামা, দিনাজপুর
প্রশ্ন : রসুনের পাতার ডগা শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিকার কী?
উত্তর : পাতা ঝলসানো রোগের ফলে পাতার উপর ছোট ছোট সাদাটে গোল দাগ দেখা যায়। এসব রোগ দমনের জন্য বর্দোমিশ্রণ (তুঁতে: চুন : পানি=১:১:১) বা ডাইথেন এম-৪৫ অথবা রোভরাল ২ গ্রাম প্রতি  লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর স্প্রে করতে হবে। অনেক সময় পটাসিয়ামের অভাবে রসুনের ডগার পাতা শুকিয়ে  যায়।
 
শ্যামল চন্দ্র রায়
দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়
প্রশ্ন :আলু গাছের পাতা, ডগা ও কাণ্ড বাদামি বর্ণ ধারণ করছে, গাছ হলদে হয়ে মরে যাচ্ছে। প্রতিকার জানাবেন।
উত্তর : এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে আলু গাছে এ রোগ হয়ে থাকে।
সুষম সার প্রয়োগ  করতে  হবে এবং সময়মত সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রোভরাল মিশিয়ে ৭-১০ দিন  পর পর স্প্রে করতে হবে। আক্রমণের পূর্বে ডাইথেন এম-৪৫ ০.২% হারে স্প্রে করলে এ রোগের আক্রমণ  থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আগাম জাতের আলু চাষ করতে হবে।
 
নাজমুল হোসেন
যশোর
প্রশ্ন : সরিষার পাতা হলুদ হয়ে ঝলসে যায়। ভালো হওয়ার উপায় কী?
উত্তর : প্রাথমিক অবস্থায় সরিষা গাছের নিচে বয়স্ক পাতায় এ রোগের রক্ষণ দেখা যায়।

প্রতিকার : ১। রোগমুক্ত বীজ বপন করতে হবে।
২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতের সরিষার চাষ করতে হবে। বারি সরিষা-৭, বারি সরিষা-৮ ইত্যাদি জাত কিছুটা পাতা ঝলসানো রোগ সহনশীল।
 
৩। বীজ বপনের পূর্বে (প্রোভেক্স-২০০ অথবা ক্যাপ্টান (২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক/ কেজি বীজ) দিয়ে বীজ  শোধন করে বপন করতে হবে।
 
এ রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে রোভরাল-৫০ ডব্লিউপি ০.২% হারে (প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম) পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে।
 
সবুজ মাহমুদ
যশোর
প্রশ্ন : আম গাছের শোষক পোকা দমনের উপায় কী ?
উত্তর : শোষক পোকা অন্য সব পোকার চেয়ে আমের বেশি ক্ষতি করে থাকে। সারা বছর আম গাছে এই পোকাগুলো দেখা যায়।
 
১। আম বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২। গাছের ডালপালা যদি খুব ঘন থাকে তবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ছাঁটাই করতে হবে যাতে গাছের মধ্যে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে।

৩। আমের মুকুল যখন ৮/১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় তখন একবার এবং আম মটরদানার মতো হলে আর একবার প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
 
৪। আমের হপার পোকার কারণে শুটিমোল্ড রোগের আক্রমণ অনেক সময় ঘটে তাই শুটিমোল্ড দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম করে সালফার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার্য কীটনাশকের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
 
মোস্তাক রহমান
গ্রাম: সানি ডুবুরি, ইউনিয়ন: সাতনেড়া, জেলা+ উপজেলা : ঠাকুরগাঁও
প্রশ্ন : কী ধরনের খাবার খাওয়ালে মাছের বৃদ্ধি ভালো হয়।
উত্তর : মাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য মাছকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সম্পূরক খাবার দেয়ার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যেন পুকুরে প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক খাবার বিদ্যমান থাকে। পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনের জন্য প্রতি শতকে ৫-৬ কেজি গোবর, ১০০-১৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০-৭৫ গ্রাম  টিএসপি সার ব্যবহার করতে হবে। ১০-১৫ দিন অন্তর পানিতে প্রাকৃতিক খাবারের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে।
 
এ ছাড়াও সম্পূরক খাবার হিসেবে চালের কুড়া, সরিষার খৈল, ভুট্টার গুঁড়া, শুঁটকি মাছের গুঁড়া ইত্যাদি মিশ্রণের ব্যবহার করা যেতে পারে। মাছকে প্রতিদিন দুই বেলা (সকাল ও বিকেল) মাছের দেহের ওজনের ৩৫% হারে এই খাবার দিতে হবে। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি পরীক্ষা করতে হবে।

সৈয়দ মশিউর রহমান
গ্রাম : বারড়া, ইউনিয়ন: নূরুল্লাহগঞ্জ, উপজেলা: ভাঙ্গা, জেলা: ফরিদপুর
প্রশ্ন : শীতকালে মাছের খাবার দেয়া বন্ধ করে দেয়া কি ঠিক?
উত্তর : শীতকালে মাছ স্বাভাবিক ভাবেই খাবার গ্রহণ করা কিছুটা কমিয়ে দেয়। এতে তার দেহের বৃদ্ধি কিছুটা কম হয়। তাই বলে খাবার খাওয়া কিন্তু বন্ধ করে দেয় না। তাই খাবার বন্ধ করে দেয়া কখনোই উচিত নয়। তবে এ সময় নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে মাছের খাবার সরবরাহের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে হবে। নয়ত অতিরিক্ত খাবার পুকুরের পানিকে দূষিত করবে। শীতের সময় যেহেতু মাছের রোগবালাই একটু বেশি হয় তাই এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন  করতে হবে এবং পুকুরের পানি ও পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
 
মোহাম্মদ হাফিজ
জামালপুর
প্রশ্ন : গরুর আঁচিল হয়েছে। কী করণীয় ?
উত্তর : অটোজেনাস ভ্যাকসিন এ রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর।
ভ্যাকসিন তৈরির পদ্ধতি: ত্বকের আঁচিল ও তার চারপাশ পরিষ্কার করে ৫ গ্রাম আঁচিল কোষ কেটে নিয়ে সাথে ১০ মিলিলিটার সাধারণ স্যালাইন মিশিয়ে মর্টারে ভালোভাবে পিষিয়ে নিতে হবে এবং ফিল্টার পেপারে ছেঁকে নিয়ে ১ ফোঁটা ফরমালিন দিতে হবে। পরবর্তীতে এন্টিবায়োটিক (যেমন-০.৫ গ্রাম স্ট্রেপটোপেন) নিয়ে সাথে ১০ মিলিলিটার পরিশ্রুত পানি মিশিয়ে ৭ দিন পর পর চামড়ার নিচে ৩ বার ইনজেকশন দিতে হবে।
 
পাশাপাশি অটোহিমোথেরাপি করলে এ রোগ দ্রুত ভালো হয়।

পদ্ধতি : আক্রান্ত পশুর নিজের রক্ত ১৫ মিলিলিটার ৪৮ ঘণ্টা পর পর ৪-৬ বার শিরায় ইঞ্জেকশন করতে হবে।
 
মজিদুল হাসান
ফরিদপুর
প্রশ্ন : গরুর গলা ফুলে গেছে। কী করণীয়?
উত্তর : সালফোনামাইডস প্রথম দিন ডবল ডোজ শিরায় এবং পরের দিন থেকে অর্ধেক ডোজ করে ৩-৪ দিন মাংসপেশীতে ইনজেকশন দিতে হবে। যে কোনো একটি অ্যান্টিহিস্টামিনিক ওষুধ মাংসপেশীতে দিতে  হবে। নরমাল স্যালাইন দেয়া যেতে পারে।
 
জামাল হোসেন
দিনাজপুর
প্রশ্ন : গরুর এলার্জি হয়েছে। কী করণীয় ?
উত্তর : ভাই জামাল হোসেন আপনার গরুর এলার্জি হয়েছে এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্থানীয় পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আর এলার্জি হয়েছে বলে যদি নিশ্চিত হন তা হলে অ্যান্টিহিস্টামিনিক ওষুধ মাংসপেশীতে ইনজেকশন দিতে হবে।
 
আক্রান্ত পশু দুর্বল থাকলে ভিটামিন মিনারেল ইনজেকশন দিতে হবে অথবা প্রিমিক্স খাদ্যের সাথে দিতে হবে।
 
 
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ
* কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল : ০১৫৫২৪৩৫৬৯১