Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

জীবনের উৎস মাটি ও পানি

জীবনের উৎস মাটি ও পানি
হাছিনা আকতার

প্রকৃতির তিনটি প্রধান অমূল্য সম্পদ হচ্ছে- বাতাস, পানি ও মাটি। এই তিনটি উপাদান না থাকলে হয়তো পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বই থাকত না। জীবন ও সভ্যতা শুরু হয় মৃত্তিকা ও পানির আন্তঃসম্পর্কের ক্রিয়াবিক্রিয়ার ফলে। তাই মাটির স্বাস্থ্য ও পানির গুণগত মান ও প্রাপ্যতা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। যেখানে মাটি ও পানির সমন্বয় নেই-সেখানে জীবন নেই, সভ্যতাও নেই, জীবনের কোলাহল নেই। আমাদের ৯৫ শতাংশ খাদ্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আসে মাটি থেকেই। আর একটি আদর্শ মাটিতে প্রায় ৪৫% খনিজ পদার্থ, ৫% জৈব পদার্থ, ২০-৩০% বাতাস এবং ২০-৩০% পানি থাকে; যাতে- মাটি, পানি এবং বাতাস এই তিনটি উপাদানেরই সমন্বয় ঘটেছে। এতে যে কোন একটি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। মাটি ও পানি হলো সেই মাধ্যম যেখানে গাছপালা বেড়ে উঠে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে। অনুপযুক্ত মাটি এবং পানি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিগুলো মাটির ক্ষয়, মাটির জীববৈচিত্র্য, মাটির উর্বরতা এবং পানির গুণমান এবং পরিমাণকে প্রভাবিত করে। মাটিতে বসবাসকারী জীব নিয়ে গঠিত হয়েছে বিশাল মৃত্তিকা জীববৈচিত্র্য জগৎ। জাতিসংঘের দেওয়া (ওয়ার্ল্ড সয়েল ডে, ২০২২ ওয়েবপেজ) হিসাব অনুযায়ী এক টেবিল চামচ পরিমাণ উর্বর মাটিতে বসবাস করে ৮০০ কোটিরও বেশি জীব। কাজেই মাটিকে শুধু নিরেট জড় পদার্থ হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (যুক্তরাষ্ট্র) বিখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী প্রফেসর উইলিয়াম হার্সবার্গার সায়েন্স পত্রিকায় ‘মাটি, এক জীবন্ত জিনিস’ শিরোনামে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি অনুর্বর মাটিকে মৃত এবং উর্বর মাটিকে জীবন্ত বলে উল্লেখ করেছিলেন। অতএব, যার জীবন আছে, তাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদও রয়েছে।

মাটিকে জীবন্ত বা উর্বর রাখার জন্য মৃত্তিকা জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যময় উপস্থিতি প্রয়োজন। ভারসাম্যময় অবস্থায় প্রতিনিয়ত এ সব জীব-অণুজীব তাদের জীবন প্রবাহে মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থ ডিকম্পোজ করে- মাটি তৈরি, মাটির গঠন উন্নয়ন, পুষ্টি চক্র তৈরি, পানি ধরে রাখা ও তাকে বিশুদ্ধ করা, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ, মৃত্তিকা দূষণ প্রতিকার, ওষুধের উৎস, জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ইত্যাদি করে থাকে। এভাবে এক বর্গ সেন্টিমিটার মাটি তৈরি হতে ২০-১০০০ বছর সময় লাগে। বলা হয়ে থাকে, মৃত্তিকা জীববৈচিত্র্য আছে বলেই পৃথিবীর জীব-ভূরাসায়নিক চক্র বজায় আছে এবং এর ফলে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকে আছে। কিন্তু মাটি ও পানির অবক্ষয় মাটির জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে। আসলে বাংলাদেশে মেরুদ-ী প্রাণী ছাড়া অমেরুদ-ী প্রাণী কিংবা অন্যান্য আণুবীক্ষণিক প্রাণী বা জীব সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত খুবই অপ্রতুল। অথচ এরাই জীববৈচিত্র্যের ৮০ শতাংশেরও বেশি। সব ধরনের বাস্তুতন্ত্রের জন্য এরা অপরিহার্য জীব। বাংলাদেশে এদের বেশির ভাগ সদস্য অনাবিষ্কৃত। সমুদ্রের পর বিশ্বব্যাপী মৃত্তিকা হচ্ছে দ্বিতীয় বড় কার্বন আধার। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাব অনুযায়ী, মাটির ওপর থেকে ৩০ সেমি. নিচ পর্যন্ত বায়ুম-লের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি কার্বন আছে অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর মৃত্তিকা বায়ুমন্ডল থেকে কার্বনকে আলাদা করে কার্বনের আধার হিসেবে কাজ করে। আর এই কার্বন জমাকরণে মাটিতে থাকা অণুজীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতিসংঘ মাটিকে অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। কারণ মাটির অবনয়ন (ডিগ্রেডেশন) যত দ্রুত ঘটে থাকে, তত দ্রুত মাটি তৈরি হতে পারে না। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বব্যাপী মাটি ও পানির অবক্ষয় ঘটেছে ব্যাপকভাবে। এফএওর হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীর ৩৩ শতাংশ মাটির অবনয়ন ঘটেছে অর্থাৎ অনুর্বর হয়ে পড়েছে। পৃথিবীতে বছরে এক কোটি ২০ লাখ হেক্টর অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ২৩ হেক্টর ভূমির অবনয়ন ঘটছে। ভূমিক্ষয়ের কারণে প্রতি বছর দুই হাজার ৪০০ টন উর্বর মাটি হারিয়ে যাচ্ছে। 
বাংলাদেশে বর্তমানে ফসলি জমি প্রায় ৭.২৯ মিলিয়ন হেক্টর। পৃথিবীর মোট ভুখ-ের প্রায় ১০ শতাংশ জায়গায় ফসল আবাদ হলেও বাংলাদেশের মোট আয়তনের প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার দক্ষতা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। নিবিড় চাষাবাদের হিসাবে বাংলাদেশ বিশ্বে একেবারে প্রথম সারিতে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও নগরায়নের জন্য মাটির উপর চাপ বেড়েই চলেছে। আমাদের আবাদী জমি কমে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে।
দেশের দক্ষিণের ১৯ জেলার অর্ধেক চাষের জমি লবণাক্ততার শিকার বলে জানা যাচ্ছে (কালের কণ্ঠ, ১৯ নভেম্বর ২০২২)। উদ্ভিদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ১৭টি রাসায়নিক পুষ্টি উপাদানের ১৪টি উপাদানই পেয়ে থাকে মাটি ও পানির সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। বাকি ৩টি উদ্ভিদ গ্রহণ করে পানি ও বাতাস থেকে। বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) থেকে প্রকাশিত (২০২০ খ্রি:) একটি গ্রন্থে ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, দেশের কৃষি জমিতে অম্লত্ব বেড়েছে। অন্যদিকে ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, জিংক, বোরন ইত্যাদির পরিমাণ কমেছে। এই অবস্থা নির্দেশ করছে যে, বাংলাদেশের মাটি ক্রমাগতভাবে অবনয়ন হচ্ছে। মাটিতে ৩-৫% জৈব পদার্থ থাকা বাঞ্ছনীয়। তবে বাংলাদেশের মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ গড়ে ১% এর কাছাকাছি। মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ০.৮% এর নিচে চলে গেলে সে মাটি আর কোন কৃষি কাজের উপযোগী থাকে না।
উক্ত গ্রন্থে নাইট্রোজেন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ক্রমাগতভাবে এই উপাদানও  হ্রাসমান। নাইট্রোজেন মাটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। নাইট্রোজেন গাছের গ্রহণ উপযোগী করার জন্য এমোনিয়াম অথবা নাইট্রেটে রূপান্তর করতে হয়। এ রূপান্তরের জন্য প্রয়োজন হয় ইউরেজ নামক এনজাইম, যা তৈরিতে মাটিতে বিদ্যমান অণুজীব প্রধান ভূমিকা পালন করে। মাটির ঘাটতি পূরণের জন্য নাইট্রোজেন সার দেয়া হয়। কিন্তু সে সার ফসলের ব্যবহার উপযোগী করার জন্য প্রয়োজীয় অণুজীব মাটিতে না থাকায় প্রয়োগকৃত সারের মাত্র ৩৫% গাছ গ্রহণ করতে পারে, বাকি ৬৫% বাতাসে উড়ে যায় অথবা পানিতে ভেসে যায়। ফলে দূষিত হচ্ছে বাতাস এবং নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-জলাশয়ের পানি। ফলে গাছে নাইট্রোজেনের ঘাটতি থেকেই যায়। ঘাটতি জনিত লক্ষণ প্রকাশ পায়। আরো বেশি পরিমাণ নাইট্রোজেন প্রয়োগ করা হয়। মাটিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন বিষের মতো কাজ করে। মাটি দূষণের ফলে সকল অণুজীব মারা যায়। ফলশ্রুতিতে বেড়ে যাচ্ছে মাটির অম্লত্ব এবং তৈরি হচ্ছে শক্ত কর্ষণস্তর। এছাড়া অণুজীবের ক্রিয়ার দ্বারা তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড যেমন: হিউমিক এসিড, ফালবিক এসিড, কার্বনিক এসিড ইত্যাদি যা সারের সকল উপাদানকে গাছের জন্য গ্রহণোপযোগী করে তোলে। এতে সার প্রয়োগের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং অপচয় কম হয়।
 মাটির ক্ষয় এবং দৃঢ়ীকরণ (পড়সঢ়ধপঃরড়হ) মাটির পানি সঞ্চয়, নিষ্কাশন এবং ফিল্টার করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে এবং বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্বাস্থ্যকর মাটি  প্রাকৃতিক ফিল্টার হিসাবে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এটি মাটিতে অনুপ্রবেশের সাথে সাথে পানিকে বিশুদ্ধ করে এবং সংরক্ষণ করে। 
মৃত্তিকা ও পানি অবক্ষয়ের প্রাকৃতিক কারণগুলো হচ্ছে-বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, যার ফলে উপকূল অঞ্চলের মাটিতে সমুদ্রের লবণ পানির অনুপ্রবেশ ঘটছে এবং ভূগর্ভস্থ পানিতেও লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণেও বাঁধ ভেঙে বা বাঁধ উপচে লবণ পানি কৃষি জমিতে ঢুকে জমির লবণাক্ততা বাড়িয়ে স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত করছে। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে পানির সাথে লবণ উপরে উঠে আসে। বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২৮.৬ লক্ষ হেক্টর উপকূলীয় এলাকার মধ্যে প্রায় ১০.৫৬ লক্ষ হেক্টর এলাকা বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্ততা কবলিত। মৃত্তিকা ও পানি অবক্ষয়ের জন্য প্রাকৃতিক কারণগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলো অধিকতর দায়ী। যেমন: নিম্নমানের সেচ ও নিষ্কাশন পদ্ধতি, ঘেরে লোনাপানি প্রবেশ করিয়ে চিংড়ি চাষ, সমুদ্রের পানি আটকে রেখে লবণ চাষ, পাহাড় কেটে ধ্বংস করা, পাহাড়ের ঢালে জুম চাষের মাধ্যমে আদা, হলুদ চাষ, নির্বিচারে বনায়ন ধ্বংস করা, ভূগর্ভস্থ পানির অধিক ব্যবহার যাতে করে ভারি ধাতুগুলো দ্বারা মৃত্তিকা ও পানি দূষিত হয়, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, ফসলের অবশিষ্টাংশ জমিতে মিশতে না দেওয়া, শিল্প-কলকারখানা ও ই-বর্জ্য  মাটি ও পানিতে ফেলা, অধিক পরিমাণে প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার, শস্য আবর্তন অনুশীলন না করে বার বার একই ফসলের চাষ, জমির অধিক কর্ষণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
যেহেতু মাটি ও পানি খাদ্য উৎপাদন, বাস্তুতন্ত্র এবং মানুষের কল্যাণের জন্য ভিত্তি প্রদান করে, তাই তাদের অমূল্য ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সম্পদগুলোকে সুরক্ষিত করার জন্য আমরা যে সমস্ত সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে পারি; তা হচ্ছে-
টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা
-অধিক পরিমাণে জৈব পদার্থের ব্যবহার, জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর মৃত্তিকা পানি ধারণ ও প্রাপ্যতা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-মানসম্পন্ন পানির দক্ষ ব্যবহার, উপযুক্ত সেচ পদ্ধতি ব্যবহার, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতিকরণ, পাম্পিং নিয়ন্ত্রণ, মাটি ও লবণাক্ততার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা।
-মৃত্তিকা পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা এবং কীটনাশক এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
-বৃষ্টির পানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানোর মাধ্যমে সবুজ কৃষির অনুশীলন করা।
-শস্য আবর্তন অনুসরণ করা এবং ফসলের অবশিষ্টাংশ মাটিতে মিশতে দেওয়া।
-মাটিকে যতদূর সম্ভব কম কর্ষণ করা বা শূন্য কর্ষণ অনুশীলন করা।
- উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাহাড়ে চাষাবাদ, আচ্ছাদনযুক্ত ও বহুবর্ষজীবী ফসল চাষ করা।
টেকসই বন ব্যবস্থাপনা
টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা ও টেকসই কৃষির পাশাপাশি টেকসই বনায়ন সংরক্ষণ অপরিহার্য। গাছের সুরক্ষা না থাকলে জমি শুকিয়ে যায় এবং ক্ষয় হতে থাকে। অতএব, দূষণের হাত থেকে মাটিকে বাঁচাতে টেকসই বনায়ন বা গাছ কাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরিষ্কার করা
পরিবেশগত প্রতিকারের মধ্যে রয়েছে মাটি, ভূগর্ভস্থ পানি বা ভূপৃষ্ঠের পানি থেকে দূষণ অপসারণ। বায়োরিমিডিয়েশন (অণুজীব) এবং ফাইটোরিমিডিয়েশন (উদ্ভিদ) দূষণকারীকে বিশুদ্ধ পণ্যে রূপান্তর করতে ব্যবহার করা।
সঠিক বর্জ্য নিষ্পত্তি
শিল্প-কলকারখানা বা গৃহস্থালির বর্জ্য দক্ষ বর্জ্য নিষ্পত্তি ভূমি দূষণ রোধের অন্যতম কার্যকর উপায়। এটি বিশেষ করে বিষাক্ত ও বিপজ্জনক বর্জ্য নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। উদাহরণস্বরূপ, বিপজ্জনক উপাদান দ্বারা জমি ভরাট করা মাটি দূষণের কারণ হতে পারে। এই আবর্জনা দ্বারা ভূগর্ভস্থ জলও দূষিত হতে পারে।
“৩ জং” (জবফঁপব,জবঁংব,জবপুপষব) নিয়ম ও শিক্ষা
নন-বায়োডিগ্রেডেবল পণ্যের ব্যবহার কমানোর(জবফঁপব) ফলে প্লাস্টিক দূষণ কমবে এবং ভূমি দূষণের উপর প্রভাব ফেলবে। এই জন্য প্রতিটি সম্ভাব্য পণ্য পুনঃব্যবহার (জবঁংব) এবং পুনর্ব্যবহার (জবপুপষব) করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভূমি দূষণ থেকে পরিবেশ রক্ষার প্রচেষ্টায় শিক্ষাকেও  প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, নীতিনির্ধারক, খাদ্য উৎপাদনকারী, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিজ্ঞানী, এনজিও, সুশীলসমাজ, ভূমি ব্যবহারকারী এবং আদিবাসীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়, শিল্প এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিসহ সকল স্তরের বিস্তৃত অংশগ্রহণই পারে এ অমূল্য সম্পদগুলোকে সংরক্ষণ করতে। এছাড়া শুধু দিবস পালন নয়, আগামীর দক্ষ মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হলে, যাদের নিবিড় স্পর্শে মৃত্তিকাকে করে তোলে আরো উর্বর, আরো সুফলা, অভিজ্ঞ মৃত্তিকা ব্যবস্থাপক বাংলার সেই মহান কৃষককে ফসলের মাঠে রাখতেই হবে।

লেখক : প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক গবেষণাগার, গোপালগঞ্জ, মোবাইল: ০১৯১১৬২১৪১৫, ইমেইল: যধংরহধংৎফর@মসধরষ.পড়স