Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কবিতা ১৪২৮ (পৌষ)

সপ্তর্ষীর অ্যাম্বুস
মোছলেহ উদ্দিন সিদ্দিকী

মাঘী পূর্ণিমার রাত
কুয়াশার চাদরে ঘেরা জ্যোৎস্নার ভরা যৌবন
ঢেলেছে শিশিরসিক্ত পত্র-পল্লব ’পরে।
নীরব নিস্তব্ধ বনবীথি-
তারি বুক চিরে বনোপথ চলে গেছে বহুদূর
এই পথে আজি রাতে পার হবে হায়েনা শকুন
এমন সংবাদ নিশ্চিতে, অ্যাম্বুস পেতে
মুক্তিসেনার দল অপেক্ষার প্রহর গুনে।  
ওরা বয়সে তরুণ, সবাই কৃষাণ
মাতৃভূমি রক্ষায়
লাঙলের হাল ছেড়ে বারুদের গন্ধ মাখে গায়
মেশিনগান রাইফেল তাক করে বসে আছে নির্ভুল নিশানায়।

তারেক-তুষার-পরিমল-জুলফিকার
রতন-দেবাশীষ, পরশ গোমেজ
সাতজন তাই, সপ্ত ঋৃষির দীপ্ত শপথে
ধর্মের বাঁধভুলে সব একাকার
এক পরিচয় জঙ্গের ময়দানে
সন্তান এই বাংলার।

দলনেতা জুলফিকার বয়সে সবার বড়
দেবাশীষ চাকমা নির্ভীক পাহাড়ি জোয়ান
তারেক তুষার যমজ দুই ভাই,
পরশ গোমেজ পড়শী এক খ্রিষ্টান।
এখন সবে এক আত্মা- এক প্রাণ
হাঁড়ির খবর ভাগাভাগী হয়
কেউ যেন কারো পর নাহি রয়।
দেবাশীষ লুকায়না ছবি আর
প্রেমিকা চয়নিকা চাক্মার।
তারেক তুষার চায় জোড়া শেরোয়ানি
পরশ গোমেজ পাবে হাঁড়ি চারখানি।
বধূর ভূষণ হবে পতাকার রঙে
জাতির পিতাও রবেন সেই আয়োজনে
সব আবদার মিটাবেন তার
ক্যাপ্টেন জুলফিকার।

রাত দ্বিপ্রহর
নিস্তব্ধতার পাঁজর ভেঙে কঁকিয়ে কাঁদে
কোন এক বিহঙ্গ নিশাচর।
দূরে, আরো দূরে বনের গহিনে
খেঁকশিয়ালের ডাক
অপেক্ষার যেন নাই শেষ ...

ধবল প্রহর,
বুটের আওয়াজ শোনা যায়
মৃদু থেকে ক্রম উচ্চে, কাছাকাছি পাক হায়েনার দল
অর্ধশত হায়নার নিশ্চিন্তে প্রবেশ অ্যাম্বুস মাঝে
গর্জে উঠে মেশিনগান, রাইফেল, গ্রেনেড
মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত বনভূমি।
লাশের পর লাশ, শত্রুসেনা সবি কুপোকাত
বিনিময়ে স্বপ্তর্ষীর দুই নক্ষত্রের বিদায়, একটি যাওয়ার অপেক্ষায়।
ভোরের আলো ফুটেছে গোলাপের শুভ্রতা নিয়ে
বুকের পাঁজর ছিঁড়ে গেছে তুষার, পরিমলের
ক্যাপ্টেনের কোলে মাথা রেখে মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরায় আহত দেবাশীষ চাকমা।
সহযোদ্ধারা ঘিরে আছে শূন্যদৃষ্টি মেলে, ঝাঁপসা হয়ে আসে দেবাশীষের চোখ
আঁকড়ে ধরা চয়নিকার ছবি রক্তে লাল।
ক্ষণিকের মাঝে দেবাশীষও চলে যায় শূন্যতার গহিনে।
উন্মাদ চিৎকারে ফেটে পড়ে সহযোদ্ধারা
রতনের রাইফেল গর্জে উঠে শূন্যে গুলি ছুড়ে
ক্যাপ্টেন জুলফিকার বুকে চেপে ধরে রাখে কায়াহীন দেবাশীষ দেহ
মায়ার আলিঙ্গনে, ভেজাচোখ তার ফিরে বারবার
দৃষ্টি শূন্যতার পানে।

মুজিব চিরঞ্জীব
মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু

যৌবনে ৪৩’র দুর্ভিক্ষে ছুটেছো গ্রাম থেকে গ্রাম
তাড়না ছিল খাদ্যের অভাবে
যেতে দিবে না নতুন কারও প্রাণ;
তাইতো তুমি বুভুক্ষুর মুখে তুলে দিতে আহার
সংগ্রহ করেছ প্রয়োজনীয় ত্রাণ আর খাবার।

দেশ মাতৃকা ও জনতার উন্নয়নে
সদা জাগরূকের মতো আচ্ছন্ন থেকে
অর্ধাহারে-অনাহারে শত নির্যাতন সয়ে
কাটিয়েছো দীর্ঘ সময় রাজবন্দী হয়ে
জীবন নিয়ে কত হুমকি ধমকি
সয়েছ কতসব অসহ্য যন্ত্রণা!
তবুও সজোরে বলেছ তুমি
আমি মুজিব, মরণে ভয় করি না।

ভাষা আন্দোলনে করেছ শুরু
স্বাধীনতার যুদ্ধে শেষ
ছিনিয়ে এনেছ কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা
নাম দিয়েছ বাংলাদেশ।
রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে বুকে
বুঝিয়েছ পুরো বিশ্বকে
তালবাহানা যতই করো
পরাধীনতার এখানেই হোক শেষ।

কৃষক শ্রমিক মেহনতী  আপামর জনতা
সবাইকে শুনিয়েছ তুমি সাম্যের বার্তা
তোমার পদাংক অনুসরণে
দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ
তোমার কন্যা নিয়েছে শপথ
রাখবেনা বাঙালির, কোন আকাক্সক্ষা অপূর্ণ।

প্রবাসী আয় আর ডিজিটাল সভ্যতায়
নেতৃত্বে রয়েছি আমরা অগ্রসেনার ভূমিকায়
সীমান্ত কিংবা সমুদ্র জয়ে
সবখানে সফল দৃঢ় হাসিনায়,
উন্নয়ন অগ্রযাত্রার মহাসড়কে
রয়েছ মুজিব অনুপ্রেরণা হয়ে।
নগর থেকে দেবালয়ে
সাগর কিংবা হিমালয়ে
বাজছে সুরেলা ধ্বনি
মুজিব মুজিব রব উঠেছে
তুমি যার শিরোমণি
সারা বিশ্বের বিশালতায়
তুমি রয়েছ চিরঞ্জীব
জন্মশতবর্ষে শুভেচ্ছা তোমায়
প্রিয়, শেখ মুজিব।

লেখক: ১ফিল্ম প্রোডাকশন অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৫৫৬৩৩২৯৬৯
ই-মেইল :smoslahuddin@yahoo.com
২সহকারী সম্পাদক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭৫৪৫৪৫৯১০, ই-মেইল : mithushah910@gmail.com