Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কাঁঠালের গুরুত্ব ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা

কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম
কাঁঠাল (ইংরেজি নাম-
Jackfruit)) পৃথিবীর ফলসমূহের মধ্যে আকারে বৃহত্তম। ভারতীয় উপমহাদেশ বিশেষত বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ কাঁঠালের উৎপত্তি স্থান হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার এটি অতি আদিম ফল। এ ছাড়া নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, চায়না, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কাঁঠালের চাষ হয়। পূর্ব আফ্রিকার উগান্ডা ও তানজানিয়া এবং সমগ্র ব্রাজিল ও ক্যারিবীয় দীপপুঞ্জের জ্যামাইকাতে কাঁঠাল পাওয়া যায়। বাংলাদেশের সর্বত্রই কাঁঠাল পরিদৃষ্ট হয়। সাধারণত লালচে মাটি ও উঁচু এলাকায় এটি বেশি দেখা যায়। তবে মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং পার্বত্য এলাকায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭৬ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হচ্ছে এবং মোট উৎপাদন ১৭ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৪৯ টন (সূত্র : উদ্যানতত্ত¡ অনুবিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর)। বিশ্বে কাঁঠাল উৎপাদনে শীর্ষে ভারত, এরপরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
কাঁঠাল পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী।
কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ নিতান্ত কম। এ ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কম।
কাঁঠাল পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
পাকা কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ আছে, যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
কাঁঠালের অন্যতম উপযোগিতা হলো ভিটামিন ‘সি’। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাঢ়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন ‘সি’।
কাঁঠালের বিদ্যমান আইসোফ্লাভোনস, এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস আলসার, ক্যান্সার, উচ্চরক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ, যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কাঁঠালে বিদ্যমান ভিটামিন বি৬ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং আয়রন দেহের রক্তাল্পতা দূর করে। ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয় এবং অন্যদিকে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ ফল আঁশালো বিধায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
সাংস্কৃতিক গুরুত্ব : কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। দেশের আনাচে-কানাচে কাঁঠালের সহজলভ্যতা বা প্রাপ্তিই এর প্রধান কারণ। গ্রামের শ্রমজীবী আপামর জনসাধারণের কাছে কাঁঠালের গুরুত্ব অপরিসীম। কাঁঠালের মতো এত বেশি পুষ্টি উপাদান আর কোনো ফলে পাওয়া যায় না। তাছাড়া কাঁঠালের দাম অন্যান্য ফলের তুলনায় কম হওয়াতে গরিব মানুষ এটা খেতে পারে। তাই কাঁঠালকে গরিবের ফল বলা হয়। তাই তো গ্রাম বাংলায় প্রচলিত আছে, ‘কাঁঠাল আর মুড়ি, হয় না এমন জুড়ি’। আবার ইচরে পাকা প্রবাদটি অপরিপক্ব কাঁঠাল পাকানো থেকেই এসেছে। গ্রাম বাংলায় পান্তা, দুধ, চিঁড়া বা খইয়ের সাথে পাকা কাঁঠাল কিংবা সিজা কাঁঠাল বা সিদ্ধ কাঁঠাল খাওয়ার প্রচলন আজও বিদ্যমান। ভারতের তামিলনাড়–– রাজ্যে উৎপাদিত ৩টি ফল আম ও কলার পাশাপাশি কাঁঠালও অন্যতম ফল হিসেবে বিবেচিত। উচ্চমাত্রায় শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ হওয়ায় শ্রীলঙ্কায় কাঁঠাল ধান বৃক্ষ (জরপব ঃৎবব) কিংবা গরিবের ফল নামে সুপরিচিত। নেপালে কিছু কিছু হিন্দু পরিবারের বিয়ে অনুষ্ঠানে মাংসের পরিবর্তে কাঁচা সবুজ কাঁঠালের সবজি পরিবেশন করা হয়ে থাকে।
উদ্ভিদতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্য, জাত ও চাষবাস : আমাদের দেশে চাষকৃত কাঁঠালের প্রজাতি হচ্ছে অৎঃড়পধৎঢ়ঁং যবঃবৎড়ঢ়যুষষঁং। কাঁঠালের পাতার বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে যবঃবৎড়ঢ়যুষষঁং নামকরণ করা হয়েছে। কাঁঠাল পৃথিবীর বৃহত্তম ফল। কখনও কখনও ৩০Ñ৩৫ কেজি, এমনকি ৪০ কেজি ওজনের কাঁঠাল দেখতে পাওয়া যায়। কাঁঠাল যৌগিক ফল (গঁষঃরঢ়ষব ভৎঁরঃ) অর্থাৎ অনেকগুলো ফুলের সমন্বয়ে এর সৃষ্টি। রোপণের ৭-৮ বছর পরেই ফল ধরা শুরু হয়, তবে ষোড়শী গাছেই সবচেয়ে বেশি ফল ধরে। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ফুল আসে। সহবাসী উদ্ভিদ বিধায় একই গাছে পুরুষ ফুল (বোঁটা সরু ও দিঘল) ও স্ত্রী ফুল  (বোঁটা মোটা, খাটো ও গোড়ায় রিং আকৃতি) আলাদাভাবে ধরে। সাধারণত মূল কাÐ ও প্রধান শাখা কাÐে স্ত্রী ফুল এবং শাখা কাÐের শীর্ষে পুরুষ ফুল ধরে। পরাগায়নের পর গাছতলায় পুরুষ মুচি পড়ে থাকলে দেখে অনেকে আবার সব কাঁঠাল পড়ে যাচ্ছে বলে বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন।  একটি কাঁঠালের মধ্যে অসংখ্য কোষ বা কোয়া বা রোয়া থাকে, এগুলোই প্রকৃতপক্ষে একেকটি ফল। কোষের চারপাশে পাতলা ফিতার মতো চিটা বা চাকি থাকে। এই চিটা ও খোসাকে একত্রে ভুতি বা ভুতরো বা ছিবড়া বলে। খোসার ওপর ছোট বড় কাঁটা থাকে এবং কাঁটার সংখ্যা যত ফুলের সংখ্যাও তত হয়। স্থান ও জাতভেদে ফল পাকে মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর জার্মপ্লাজম সেন্টারে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ পর্যন্ত ৯১টি জার্মপ্লাজম সংযোজিত হয়েছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত¡ গবেষণা কেন্দ্র এ পর্যন্ত বারি কাঁঠাল-১, বারি কাঁঠাল-২ ও বারি কাঁঠাল-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল জাত অবমুক্ত করেছে। সর্বশেষ জাতটিতে অমৌসুমে অর্থাৎ অক্টোবর-মে পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। হাজারী কাঁঠাল নামে অতি জনপ্রিয় একটি জাত রয়েছে, ছোট ছোট অনেক ফল ধরে থাকে। বাংলাদেশে চাষকৃত জাতগুলোকে তিন ভাগে ভাগ যায় যথা- ১। খাজা বা চাউলা (কোষ আকারে বড় হয়, ফ্যাকাশে হলুদ, পাকার পর কম রসালো, অপেক্ষাকৃত শক্ত বা কচ্কচে হয়, চিপলে সহজে রস বের হয় না, কাঁঠাল পাকার পরও সবুজাভ থাকে), ২। গিলা বা রসা বা রসখাজা (কোষ অত্যন্ত কোমল, মিষ্টি, রসালো, স্বাদ টক-মিষ্টি, অপেক্ষাকৃত ছোট কোয়া ও কাঁঠাল পাকার পর একটু লালচে-হলুদাভ হয়) এবং ৩। দোরসা (খাজা ও গিলা কাঁঠালের মাঝামাঝি বৈশিষ্ট্য)। ফল পরিপক্ব হতে ৪-৫ মাস সময় লাগে। কাঁচা ফলে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ঠন ঠন শব্দ আর পাকা ফলে আঘাত করলে ড্যাব ড্যাব শব্দ হয়। বাংলাদেশে প্রতিটি গাছে গড়ে ২৫-২০০টি কাঁঠাল ধরে এবং প্রতিটি ফলের ওজন ৩-২৫ কেজি। কাঁঠালকে ১১-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ও ৮৫-৯০% আপেক্ষিক আর্দ্রতাযুক্ত ঘরে একে ৩-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
কাঁঠালের বহুবিদ ব্যবহার : কাঁঠাল গাছকে বহুবিদ ব্যবহার উপযোগী গাছ (গঁষঃরঢ়ঁৎঢ়ড়ংব ঃৎবব) বলা হয়। এ থেকে পাওয়া যায় খাদ্য, কাঠ, জ¦ালানি, গো-খাদ্য, ওষুধ ও শিল্প উপকরণ। কাঁঠালের ফল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। বসন্তকাল থেকে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত কাঁচা কাঁঠাল কান্দা বা এচোর সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। পাকা ফল বেশ পুষ্টিকর, কিন্তু এর গন্ধ অনেকের কাছে ততটা আকর্ষণীয় নয়। তবু মৃদু অ¤øযুক্ত সুমিষ্ট স্বাদ ও স্বল্পমূল্যের জন্য অনেকে পছন্দ করেন। কাঁঠালের আঁটি বা বীজ তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া হয় অথবা পুড়িয়ে বাদামের মতো খাওয়া হয়। এর একটি সুবিধা হলো আঁটি অনেক দিন ঘরে রেখে দেয়া যায়। পাকা ফলের কোষ মানুষসহ পশুপাখি খেয়ে থাকে। এই কোষ নিংড়ে রস বের করে তা শুকিয়ে আমসত্বের মতো ‘কাঁঠালসত্ব’ ও তৈরি করা যায়। কোষ খাওয়ার পর যে খোসা ও ভুতি  থাকে তা গবাদি প্রাণির একটি উত্তম খাদ্য। পাকা ফলের বোঁটার সাথে আঁঠালো অংশটি কুমড়াজাতীয় সবজির মাচায় ঝুলিয়ে দিলে ফলের মাছি পোকা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারে। ভুতি বা ছোবড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ পেকটিন থাকায় তা থেকে জেলি তৈরি করা যায়। এমন কি শাঁস বা পাল্প থেকে কাঁচা মধু আহরণ করার কথাও জানা গেছে। কাঁঠাল গাছের পাতা গবাদি প্রাণীর মজাদার খাদ্য। পাতা পিঠা তৈরিতে কাঁঠালের পাতার ব্যবহার বহুল প্রচলিত। সোনালি হলুদ গুঁড়ি থেকে তৈরি হয় মূল্যবান আসবাবপত্র, যা উঁই পোকা প্রতিরোধী এবং ছত্রাক-ব্যাকটেরিয়া রোগ পচনরোধী। সার কাঠের গুঁড়া বা টুকরো রঙ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। কাঁঠাল ফল ও গাছের আঁঠালো কষ কাঠ বা বিভিন্ন পাত্রের ছিদ্র বন্ধ করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
কাঁঠালের রকমারি খাবার : কাঁঠালের প্রাথমিক অর্থনৈতিক গুরুত্ব হচ্ছে এর ফল যা কি না কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থাতেই ব্যবহার হয়ে থাকে। কাঁচা (সবুজ) অবস্থায় এটিকে মুরগির মাংসের বুনটের সাথে তুলনা করা হয়। ফলে নিরামিষ ভোজীদের কাছে কাঁচা  কাঁঠাল মাংসের উত্তম বিকল্প। সত্যি বলতে কি কাঁচা  কাঁঠাল বিশ^বাজারে সবজি মাংস বা ঠবমবঃধনষব সবধঃ হিসেবে পরিচিত। একদম ছোট অবস্থায় অর্থাৎ কোষ ও আঁটি গঠন হয়নি এমন ধরনের ফল দিয়ে আচার বা সবজি তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে পরাগায়নের পর পুরুষ মুচিও ব্যবহার করা যেতে পারে। ভালোভাবে মসলা দিয়ে রান্না করলে মুরগির মাংসের মতোই লাগে। কোষ ও আঁটি গঠন শুরু হলে বিভিন্ন সবজির সাথে রান্না করার জন্য খুবই উপযোগী। কোষ ও আঁটি পরিপূর্ণ হলে অর্থাৎ পরিপক্ব ফল চিপ্স করার উপযোগী বা অন্যান্য তরকারির সাথে রান্না করা যায়। পাকা ফলের কোষ সরাসরি খাওয়া হয়। আবার পাকা ফলের কোষ বা পাল্প থেকে ক্যান্ডি, ফ্লেক্স, চকলেট, পাপড়, বরফি, পিঠা, আইসক্রিম, জ্যাম-জেলি, হালুয়াসহ রকমারি খাবার তৈরি করা যায়। কাঁঠালে আঁটি অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ। আঁটি রোদে শুকিয়ে নিয়ে ভেজে বা পুড়িয়ে বাদাম বা কাজু বাদামের মতো খাওয়ার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। মিশ্র সবজি রান্নায় কাঁঠালের আঁটি দিয়ে উপাদেয় খাবার তৈরি করা হয়। সিদ্ধ করে কাঁঠাল আঁটির ভর্তা অত্যন্ত মুখরোচক খাবার। উচ্চ প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ এবং পানি ও তেল শোষণ করার ক্ষমতা থাকায় কাঁঠালের আঁটি থেকে তৈরি করা আটা গমের আটার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
বাণিজ্যিক সম্ভাবনা : বর্তমানে ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, চায়না, ব্রাজিলসহ বিশে^র অনেক দেশ কাঁচা কাঁঠাল ফ্রেস কাট সবজি (সরাসরি রান্নার উপযোগী), শুকনা কাঁঠাল, হিমায়িত কাঁঠাল কোষ বা ক্যানজাত করে স্থানীয় বাজার বা সুপার শপে সরবরাহসহ জাপান, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারিত করছে। ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠেছে। এর ফলে বছরব্যাপী কাঁঠাল হতে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্য শুকনা আকারে বা ক্যানে পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দেশ থেকে পাকা কাঁঠাল সীমিত পরিসরে রপ্তানি হলেও ফ্রেস কাট সবজি হিসেবে বা ক্যানজাত করে স্থানীয় বাজার বা বিদেশে রপ্তানির কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বর্তমানে ফল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পরিস্থিতি খুবই দুর্বল। আমাদের উৎপাদিত কাঁঠালের সিংহভাগ সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হয়ে থাকে। যদিও সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই তবে ধারণা করা হয় ভরা মৌসুমে প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ ফল নষ্ট হয়। বিপুল সম্ভাবনাময় এ খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোক্তাগণ এগিয়ে এলে জাতীয় সমৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রাখতে পারবে। গ্রামীণ পর্যায়ে বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ হবে।
শেষকথা: আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে কাঁঠাল ওতোপ্রতভাবে জড়িত। সময় এসেছে কাঁঠাল রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আমাদের দেশে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে আয়বর্ধন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদনকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের যথেষ্ঠ সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে। কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাতকরণে ক্ষুদ্র বা মাঝারি বা ভারী শিল্প গড়ে তুলুন, আর্থিকভাবে লাভবান হউন এবং দেশের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখুন। য়