মো: দেলোয়ার হোসেন
গত ৩০ জুলাই/২০১৯ নওগাঁ জেলার ধামুইরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ৩ দিন ব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলার উদ্বোধনী ও আলোচনা সভা উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, “পরিকল্পতি ফল চাষ, যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার” ।
ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব গনপতি রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৪৭-নওগাঁ-২ (ধামুইরহাট ও পতœীতলা) আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ্ব মো: শহীদুজ্জামান সরকার এম পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মো: আজাহার আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মো: দেলদার হোসেন এবং ধামুইরহাট এম এম ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো: শহীদুল ইসলাম।
আলোচনা সভার শুরুতে সুধীবৃন্দের শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সেলিম রেজা। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশী ফলের চাষ বৃদ্ধির জন্য জনগণকে কার্যকর ভাবে উদ্ধূদ্ধ করাই হলো ফলদ বৃক্ষ মেলার প্রধান উদ্দেশ্য। কৃষক তথা সকল স্তরের জনগন এই ঐতিহ্যবাহী মেলার মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ফলদ বৃক্ষের অবদান ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে প্রযুক্তিগত ধ্যান-ধারণা পাওয়া সম্ভব। তিনি আরোও বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের বৃক্ষ রোপনের কোন বিকল্প নাই। তাই তিনি উপস্থিত প্রত্যেককে ৩টি করে ফলদ বৃক্ষ চারা রোপন করার অনুরোধ জানান।
প্রধান অতিথি মহোদয় তার বক্তব্যে বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জন করেছে। এখন প্রয়োজন পুষ্টি চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে বেশী করে দেশী জাতের ফলদ বৃক্ষের চারা রোপন করা যেন সারা বছর বিভিন্ন রকমারী ফল পাওয়া যায়। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুস্থ ও নির্মল রাখতে গাছের ভূমিকা অপরিহার্য। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, আসবাবপত্র, যানবাহন, কৃষি যন্ত্রপাতি, ওষুধ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ছায়া ও জ্বালানী কাঠ প্রভৃতির যোগান দিয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ বৈশ্বিক উষ্ণতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে বন্যা-খরা, ঝড়-ঝান্ডা, আবহাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের পরিমান কম, সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধি প্রভৃতি কারনে উত্তরাঞ্চলে মরু বিস্তারের আশংকা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সত্যিকারের দেশ প্রেমের মনোভাব নিয়ে তথা জাতীয় স্বার্থে ও দেশের কল্যানে বেশী বেশী করে বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষনে ব্রতী হতে হবে। তিনি আরো বলেন, পতিত জমি, রাস্তার পার্শে¦, স্কুল ও কলেজ মাঠে আগে বৃক্ষ রোপনের উপর গুরুত্বারুপ করতে হবে। এজন্য সকল স্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারী, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, মজুর-শ্রমিক,আবাল-বৃদ্ধ বনিতাসহ সকল জনসাধারণকে মেলা প্রাঙ্গন থেকে বৃক্ষের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির আশে-পাশে ফাঁকা জায়গায় অন্তত ৩টি করে হলেও বৃক্ষের চারা রোপণ করার উদাত্ব আহবান জানান।
৩দিন ব্যাপী মেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বন বিভাগ, বিএমডিএ ও ব্যাক্তিমালিকানাধীন নার্সারীসহ ৩০ টি স্টল অংশ গ্রহন করে। বৃক্ষ রোপনে উদ্ধূদ্ধকরণ র্যালি শেষে মেলার উদ্বোধন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের মাঝে বিনামুল্যে বারি আম-৪ জাতের চারা বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী ছাড়াও প্রায় ৮০০ জন কৃষক/কিষাণী উপস্থিত ছিলেন। মেলায় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্ব সাধারনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি অফিসার মো: আবু সাঈদ।