ঝালকাঠি সদরের কীর্তিপাশায় পানফসলের পোকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি শীর্ষক কৃষক মাঠ দিবস ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষকৃত গুরুত্বপূর্ণ ফল, পান, সুপারি ও ডাল ফসলের পোকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার কর্মসূচি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের (আরএআরএস) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রফি উদ্দিন। তিনি বলেন, জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে পানের রোগপোকা দমন সম্ভব। এতে পান বিশুদ্ধ থাকবে। গুণগত মানেরও কোনো পরিবর্তন হবে না। তাই পান ফসলে রাসায়নিক বালাইনাশক প্রয়োগ না করা জরুরি।
ভাসমান কৃষি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আরএআরএস’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলিমুর রহমান এবং উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রিফাত শিকদার।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কর্মসূচি পরিচালক ড. মো. মাহবুবুর রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা তপন কান্তি বেপারী প্রমুখ। মাঠ দিবসে ৮০ জন পানচাষি অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে পান ফসলের ১২ প্রজাতির পোকামাকড় সনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো : পানের কালো মাছি পোকা, পানের সাদা মাছি, পাতা খেকো লেদা পোকা, শামুক, ছাতরা পোকা , ক্ষুদ্র মাকড়, জাব পোকা, থ্রিপস পোকা, পানের শোষক পোকা এবং পানের উইপোকা। এসমস্ত পোকামাকড় দমন করার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই বাজার থেকে বিষাক্ত বালাইনাশক কিনে ফসল সংগ্রহের অপেক্ষাকাল উপেক্ষা করে অতিমাত্রায় ব্যবহার করে থাকেন। এক গবেষনায় দেখা গেছে, অতিমাত্রায় বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে বরিশালের পানে বিষাক্ত কীটনাশকের ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা মানুষের স্বাস্থের জন্য হুমকি স্বরুপ। তবে আশার কথা- এ প্রকল্পের মাধ্যমে পানের কালো মাছি পোকা দমনের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি শাক-সবজি এবং ফল ফসলের ক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষকের মাঠ পর্যায়ে উপযোগীতা পরীক্ষণ কাজও চলছে।