রাঙ্গামাটিতে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৬ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার প্রদান করছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চল, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা এবং সদর উপজেলা এর আয়োজনে গত ১৫/১০/২০১৬ খ্রি: তারিখে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৬ উপলক্ষে এক আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুন্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ কে এম হারুন-অর-রশিদ, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি অঞ্চল। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, জেলা প্রশাসক, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক ‘সর্বনাশা ইঁদুর’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শণ করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক ইঁদুরের জীবনচক্র, স্বভাব এবং জনজীবনে ইঁদুরের বিভিন্ন ক্ষতির ধরন বিস্তারিত তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রমনী কান্তি চাকমা তার বক্তব্যে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৬’র প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সমন্বিত ইঁদুর দমন অভিযান সফল করতে এগিয়ে আসুন’র আলোকে সকলকে একযোগে মাঠের ও বসতবাড়ির ইঁদুর নিধনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, প্রতিবছর ফসল উৎপাদনে কৃষক যে সকল প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, ইঁদুরের উপদ্রব তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে ১৯৮৩ সাল থেকে ইঁদুর নিধন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তিনি জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৬ সফল করতে সর্বস্তরের জনগনের সম্পৃক্ততা এবং সমন্বিত দমন কৌশল ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, ইঁদুরের সমস্যা আমাদের একটি অন্যতম জাতীয় সমস্যা। ইঁদুর একক প্রানী হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ফসল, সম্পদ ও পরিবেশের সর্বাধিক ক্ষতি করে থাকে। তাই প্রতিবছর সমন্বিত ইঁদুর দমন ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ গ্রামে, শহরে, জমিতে সবখানে একযোগে ইঁদুর নিধন করা বিশেষ প্রয়োজন। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন ইঁদুর যেখানে যে অবস্থায় থাকে সেখানেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ফসল, সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে। এ জন্য একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সকলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে ইঁদুর নিধন করা জরুরি। তাছাড়া অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার আপ্রু মারমা, কৃষক রিপন চাকমা বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৫ এর কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে রাঙ্গামাটি অঞ্চল পর্যায়ে ২ জন কৃষক, ৩ জন উপসহকারী কৃষি অফিসার, ১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রাঙ্গামাটি সদর উপজেলাকে বেশী সংখ্যক ইঁদুর নিধনের জন্য ক্রেষ্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, কৃষক-কৃষানী, জনপ্রতিনিধি, কৃষি উপকরণ বিক্রেতা, কৃষিগবেষক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সম্প্রসারণ কর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।