ঢাকা, ০৭ জুলাই ২৪
‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’-২০২১ সম্মাননা পেয়েছেন ২২জন। কৃষিকাজ করে সিআইপির আদলে এরকম জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ায় অভিভূত হয়েছেন সম্মাননা প্রাপ্তগণ।
রবিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুস শহীদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা প্রদান করেন। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী।
এআইপিপ্রাপ্ত গুণী ব্যক্তিদের ‘ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ’ উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এমন ত্যাগী ব্যক্তিদের অবদানে আমাদের কৃষি এগিয়ে চলেছে। কৃষকের সামাজিক সুনাম ও সম্মান বাড়ানোর জন্যই এআইপি সম্মাননা। এআইপি সম্মাননা প্রদান তাঁদেরকে কৃষিকাজে আরো উৎসাহিত করবে এবং কৃষির চলমান অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন করছে, একইসঙ্গে কৃষকের সম্মানও বৃদ্ধি করছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষকের কল্যাণ ও কৃষির উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন। বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত বাজেট বরাদ্দ প্রদানে যত সমস্যাই থাকুক না কেন, সবসময়ই প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষিকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী সবসময় বাজেটে কৃষিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে কৃষিকাজের জন্য তাগিদ দেন, এবং তিনি নিজেও গণভবনে কৃষিকাজ করেন। আমরা শাইখ সিরাজ সাহেবের অনুষ্ঠানে তা দেখেছি। এই সরকার কৃষিকে প্রাধান্য দিয়েই দেশ পরিচালনা করছে।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪৫ জন ব্যক্তিকে এক বছর মেয়াদের জন্য এআইপি হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ রয়েছে। নীতিমালাতে উল্লিখিত শর্তসমূহ পূরণ সাপেক্ষে চারটি পর্যায়ে নিবিড় যাচাই বাছাই এর মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ২২ জনকে এবার এআইপি সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৯ সালে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। তার আলোকে প্রথমবার ২০২০ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে এ সম্মাননা। ২০২০ সালে এআইপি পেয়েছিলেন ১৩জন। এআইপি সম্মাননা প্রাপ্তগণ সিআইপিদের মতো সুযোগসুবিধা পেয়ে থাকেন।
চার দশকের বেশি সময় কৃষি নিয়ে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ এআইপি সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, আজ এই এআইপি পুরস্কার পেয়ে আমি অনেক আনন্দিত। তিনি বলেন, ছোট্ট একটা ভূখণ্ডের যে মানুষগুলো তাদের জ্ঞান বিজ্ঞান, গবেষণা, সম্প্রসারণ এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে তারা সবসময় অবহেলিত ছিল। এই সরকার খাদ্য নিরাপত্তাকে সবসময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। সেই সব মানুষকে সম্মানিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কৃষি বিষয়ে আগ্রহের কথা উল্লেখ করে শাইখ সিরাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষির প্রতি গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতি ইঞ্চি জমি ব্যবহারের কথা শুধু বলেই ক্ষান্ত হননি, তিনি নিজ আঙ্গিনায় কৃষিকাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ চাষী শাহিদা বেগম এআইপি সম্মাননা পেয়ে বলেন, কৃষিকাজে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করি। প্রধানমন্ত্রী কৃষিকে অনেক সম্মানের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। এআইপি সম্মাননার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সারে ভুর্তকির কারণে অল্প দামে সার ক্রয় করতে পারছি এবং কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতা সবসময় পাচ্ছি।