জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় খরাসহিষ্ণু প্রোটিন সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৭১ রাজশাহী অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্য বদলাবে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে উদ্ভাবিত এই ধান চাষে সময় ও খরচ দুটোই কম লাগে, আবার ফলন বেশি পাওয়া যায়।
রক্ষণশীল কৃষি ব্যবস্থাপনায় পাটের জমিতে আমন ধানের বীজ বপনের মাধ্যমে রিলে পদ্ধতির চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণে চারঘাটের ভাদুরিয়া গ্রামে ০৯/১১/২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে এই ধান চাষের মাঠ দিবস আয়োজন করা হয়। সেখানে এ সম্পর্কে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রাজশাহীর মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রি ধান-৭১ জাতের ধান চাষ ছাড়াই পাট কর্তনের আগে ওই জমিতে ছিটিয়ে বপন করা যায়। এতে চাষ ও সেচ বাবদ বিঘা প্রতি প্রায় তিন হাজার টাকা কম খরচ হয়। আবার প্রচলিত অন্যান্য ধানের চেয়ে এটি প্রায় ১ মাস আগে কাটা যায়। ফলে রবি ফসলে বেশী সময় ও আগাম আবাদ করা যায়। বিশেষ করে ওই জমিতে গম আবাদ করলে ভাল হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নতুন উদ্ভাবিত খরাসহিষ্ণু এ ধান চাষে কৃষকরা ভাল ফলন পাচ্ছেন। বিশেষ করে ব্রি ধান-৭১ জাতের গাছ বড় ও শক্ত হওয়ায় একদিকে যেমন প্রতিকুল আবহাওয়ায় গাছ পড়ে যায়না, অন্যদিকে ভাল খড়ও পাওয়া যায়। কৃষকরা এই ধান চাষে আগ্রহী হলে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে সফল কৃষি উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম শাহ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১৫ কাঠা জমিতে ব্রি ধান-৭১ ও ১৫ কাঠা জমিতে ব্রি ৩৯ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। ৩৯ জাতের ধানের জমিতে পোকার আক্রমনে ক্ষতি হওয়ায় ওই জমিতে এখন ৫ মনও ধান পাবেন না। কিন্তু ব্রিধান-৭১ জাতে কোন ক্ষতি হয়নি এবং ফলনও ভালো পাবেন বলে আশা করছেন। তার এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও আগামীতে এই ধানের আবাদ করবেন বলে তাকে জানান।
মাঠ দিবসে কৃষক আকবর আলীর জমিতে ব্রি ধান-৭১ প্রতি বিঘাতে ফলন পাওয়া যায় ১৯ দশমিক ৩২ মণ। যা ভাল ফলন হিসেবে ধরা যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রাজশাহীর কর্মকর্তারা জানান, কৃষকদের আগামী মৌসুমে দেবার জন্য তাদের কাছে ব্রি ধান-৭১ এর পর্যাপ্ত বীজ রয়েছে। অনুষ্ঠানে অত্র এলাকার প্রায় দু’শো কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।