বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ব্রি) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় কর্তৃক কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রাঙ্গনে বুধবার সকাল ১০ টায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে রোপা আমন ধানের চারা বিতরণ করা হয়। ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মো. আবু বক্কর সিদ্দিক সরকারের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর মহাপরিচালক মো. শাহজাহান করির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মকবুল হোসেন ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। নাবীতে রোপণ উপযোগী জাত যেমন- বিআর২২, ব্রিধান৪৬ এর চারা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। প্রধান অতিথি মহাপরিচালক মো. শাহজাহান করির বলেন, ‘আমি গত মাসে ২২ তারিখে কুড়িগ্রাম জেলা পরিদর্শনে আসি। তখনকার পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। এ বছর বন্যায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় সব জমি আবার সবুজে ভরে উঠতে শুরু করেছে।’ তার এক প্রশ্নের উত্তরে কৃষকেরা বলেন আমাদের কোন জমি আর ফাঁকা নেই। নিজস্ব ও সরকারের পক্ষ থেকে প্রদানকৃত চারা দিয়ে সম্পূর্ণ জমি রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলার উপপরিচালক বলেন এসব চারা নাবীতে রোপণ করা হলেও উচ্চ ফলন দিতে সক্ষম। এসব জাতের ধান না খেয়ে তিনি আগামী বছরের জন্য বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য উপস্থিত কৃষকদের আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন এ বছর কুড়িগ্রাম জেলায় রোপা আমন ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮২ হাজার হেক্টর জমি কিন্তু অর্জিত হয়েছে ১ লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে সব সময় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কুড়িগ্রামে আজ আর অভাব নেই। সকলের জোর প্রচেষ্টায় কুড়িগ্রামের কৃষক আজ স্বাবলম্বী। ড. মো. আবু বকর সিদ্দিক সরকার বলেন এবারের বন্যায় রংপুর এবং দিনাজপুর অঞ্চলে রোপা আমন ধানের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। যা উত্তরণের জন্য ব্রি ইতিমধ্যে ১১০০ কেজি ব্রি ধান৩৪ এর বীজ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুর এর মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে চারা তৈরির জন্য বিতরণ করেছে। ব্রি রংপুর কার্যালয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য প্রায় ২৫০ কেজি নাবী জাতের বিআর২২, ব্রিধান৩৪, ব্রিধান৪৬ সহ অন্যান্য স্বল্প জীবনকালের জাতের চারা উৎপাদন করেছে যা আজ কুড়িগ্রামসহ রংপুর অঞ্চলের কৃষদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। নাবীতে চাষযোগ্য এ চারা দিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে ধান রোপণ করা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।