সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ, জেলরোড, সিলেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ২ দিন ব্যাপী সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক গবেষণা-সম্প্রসারণ পর্যালোচনা ও কর্মসূচী প্রণয়ন কর্মশালা ২০১৭। কৃষিবিদ ড. আবুল কালাম আযাদ, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়; কৃষিবিদ মো. শাহজাহান কবীর, পরিচালক (প্রশাসন), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর এবং কৃষিবিদ মো. আলতাবুর রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চল, সিলেট।
দুইদিন ব্যাপী কর্মশালায় সিলেট অঞ্চলের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীবৃন্দ যথাঃ- সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বারি, সিলেট; আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বারি, মৌলভীবাজার; সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্র, বারি, জৈন্তাপুর, সিলেট; আঞ্চলিক ধান গবেষণা কেন্দ্র, হবিগঞ্জ; মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, সিলেট; বিনা, সুনামগঞ্জ-এর ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানীবৃন্দ; কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের সকল জেলার উপপরিচালক, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা; বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, সিলেটের উপপরিচালক (বীজ), যুগ্ম পরিচালকবৃন্দ; কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা, বেসরকারী এনজিও কেয়ার বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি এবং উপকারভোগী কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিবিদ ড. কামরুল হাসান, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাারি, গাজীপুর এর পরিচালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলায়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য ও সিলেট অঞ্চল প্রেক্ষিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষিবিদ ড. মো. লুৎফর রহমান, পরিচালক (গবেষণা), বারি, গাজীপুর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব জনাব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেন, সিলেট অঞ্চলের পতিত জমি চাষের আওতায় এনে শস্যের নিবিড়তা বাড়ানোর কৌশল উদ্ভাবন করতে হবে। অঞ্চলভিত্তিক কৃষি ফসল উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতিকে প্রকৃতির মতো থাকতে দিতে হবে, নতুবা প্রকৃতি দ্বিগুণহারে প্রতিশোধ নিবে। হাওর অঞ্চলে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার আহ্বান করেন।
উক্ত কর্মশালায় চারটি সেশনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীবৃন্দ বিগত বছরের কৃষি গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন যার অনেকগুলি জাত ও অন্যান্য প্রযুক্তি সিলেট অঞ্চলের পতিত জমির ব্যবহার ও ফসল চাষের নিবিড়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে বক্তারা মত প্রকাশ করেন। তাছাড়া সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার উপপরিচালকের পক্ষ থেকে নিজ নিজ জেলার বিগত বছরের কৃষি সম্প্রসারণে যাবতীয় কর্মকান্ডের তথ্য, কৃষকের মাঠে প্রযুক্তি স্থাপন, ফলন, সমস্যা ও সুপারিশমালা প্রভৃতি বিষয়ের তথ্য প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপিত হয়।
মাঠে বিদ্যমান সমস্যাদি কৃষির অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্য সমাধানের নিমিত্তে বিজ্ঞানীবৃন্দ কর্তৃক গৃহীত নতুন গবেষণা কর্মসূচী প্রস্তাব আকারে আলোচনা হয়। কৃষি গবেষণা, মৃত্তিকা গবেষণা, কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি উন্নয়নসহ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের ফলাফলের বিবরণীসহ উপস্থাপিত কৃষির টেকসই উন্নয়নের সাথে জড়িত প্রত্যেক সেশনের শেষে সকল অংশগ্রহনকারীগণ উন্মুক্ত আলোচনা-সমালোচনায় অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমূহের উদ্ভাবিত টেকসই প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে সারাদেশে সম্প্রসারনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নিয়োজিত এবং মান সম্পন্ন বীজ উৎপাদন ও বিতরণের জন্য একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএডিসি জড়িত, তাই এই তিন বিভাগের সামগ্রিক সমন্বয়, লিংকেজ বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের কর্মশালা নি:সন্দেহে কৃষির অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেবে বলে উপস্থিত বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাগণ মনে করেন।
উল্লেখ্য, উক্ত কর্মশালার মূলবিষয় সমূহ তথা উদ্ভাবিত টেকসই প্রযুক্তি, সফল আলোচনা, প্রস্তাবনা, সমস্যা ও সুপারিশমালা প্রভৃতির তথ্যাবলী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হবে।