তিস্তা ব্যারেজ থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত প্রায় ১লক্ষ ৮০হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য চর রয়েছে। কৃষির আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থায়ী-অস্থায়ী এসব চরে মিষ্টি কুমড়া, স্কোয়াশ, ভুট্টা, আলু, গম, সরিষা, সরিষা ইত্যাদি চাষ হচ্ছে। তবে চরাঞ্চলে চাষ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় সেচ নিয়ে। সেচের সমস্যা লাঘব করতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পাইলট প্রকল্প হিসেবে আগামী মৌসুমে কর্মসূচি গ্রহণ করতে চায়। রংপুর কাউনিয়া উপজেলার তালুক শাহবাজপুর তিস্তার চরে কৃষকদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএডিসি’র চেয়ারম্যান (অতিক্তি সচিব) মো. নাসিরুজ্জান এ সব কথা বলেন।
বিএডিসি চেয়ারম্যান রংপুর জোনে দুদিনের মাঠ সফরে রবিবার সকালে কাউনিয়া উপজেলার তালুক শাহবাজপুর তিস্তার চরে কৃষি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ বিষয়ে মত বিনিময় করেন। এ সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএডিসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি তথ্য সার্ভিস, প্রাকটিকেল অ্যাকশন-বাংলাদেশ এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শামীমুর রহমান বলেন কাউনিয়া উপজেলার তালুকশাহবাজপুর চরসহ বালাপাড়া চর, বিশ্বনাথ চর, গোপীডাঙ্গার চর, গনাই চর, টাপুর চর ও তৎ সংলগ্ন প্রায় ৩০০০ হেক্টর চরাঞ্চল রয়েছে। তার মধ্যে ২৫০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এসব চরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সহায়তায় ভুট্টা, গম, মিষ্টি কুমড়া, স্কোয়াস, বাদাম, তিল, তিশি, তরমুজসহ শাক-সবজী উৎপাদন করে থাকেন। বিএডিসি তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কৃষিবিদ সঞ্চয় সরকার বলেন চাষাবাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা যেমন সার, বীজ ইত্যাদি উপকরণ সহজ লভ্য হলেও সেচ প্রদানের ক্ষেত্রে সেরকম সুবিধা অদ্যবধি গড়ে উঠেনি। তিনি আরও বলেন চর এলাকাকে অন্তর্ভূক্ত করে আধুনিক সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে সৌরশক্তি চালিত পাম্প ও পোর্টেবল ইরিগেশন ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম দ্বারা নদীর পানি উত্তোলনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে।
এরপর বিকেলে বিএডিসি চেয়ারম্যান হাতিবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান নদীর পানি পরিমিত ও সুষ্ঠ ব্যবহার করে রাবার ড্যাম এলাকা ও সানিয়াজন ইউনিয়নে ভূউপরিস্থ পানি নির্ভর সেচ প্রদান করার লক্ষ্য বিএডিসি কর্তৃক একটি প্রকল্পের সুবিধাভোগী কৃষকদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সোমবার সকালে মিঠাপুকুর দূর্গাপুর ইউনিয়নের বকেরবাজারে তিনি চুক্তিবদ্ধ চাষিদের সাথে মত বিনিময় করেন। পরে তিনি তাজহাটে অবস্থিত বিএডিসি কার্যালয়ে রংপুর জোনের বিএডিসি কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত কর্মকর্তাদের নির্বিঘ্নে বোরো চাষের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।