সরিষার শাক মানব দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধ ও রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগে ঝুঁকি কমায় বলেছেন-চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া সব রোগের মহৌষধ মধু উৎপাদনে সরিষার ফুল ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। অবাক হলেও সত্য, সরিষা বিনা চাষেও আবাদ করা যায়। তাছাড়া আপদকালীন পরবর্তী ফসল হিসেবেও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরিষা থেকে শাক, তেল ও সম্পূরক ফসল হিসেবে মধু পাওয়া যায়। সুতরাং বাংলাদেশের কৃষিতে সরিষা একটি অনবদ্য নাম। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সরিষার বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে বাংলার কৃষকেরা আধুনিক জ্ঞান আহরণে এখনো অনেক পিছিয়ে। যথাযথ বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের অভাবে কৃষকেরা পরিকল্পিত উপায়ে সরিষার বীজ উৎপাদন ও বীজ সংরক্ষন করতে পারছে না। সরিষা তথা তেল জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণে কারিগরী দক্ষতা উন্নয়নে এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত মধু উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ও বাস্তবায়িত চাষী পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন, সংরক্ষন ও বিতরণ (২য় পর্যায়ে) প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে করে আসছে। মধু মানব জীবনের জন্য মহৌষধ। মৌমাছি ও মধুর পারস্পরিক নিবিড় সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে পরাগায়ন বৃদ্ধির কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরিষার ফলন বৃদ্ধি এবং সম্পূরক ফসল হিসেবে মধু উৎপাদনে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণসহ বিদেশ রপ্তানি করার স্বপ্নের সিড়ির রুপকার কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক, চাষীয় পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও পেয়াজ বীজ উৎপাদন, সংরক্ষন ও বিতরণ (২য় পর্যায়ে) প্রকল্প। প্রকল্পের কার্যক্রম যথাযথ বাস্তবায়ন, মনিটরিং তথা কৃষকবান্ধব উপযোগিতা যাচাই ও কারিগরী দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য গত ০৬-০৭-২০১৭ খ্রি: রোজ বৃহস্পতিবার উক্ত প্রকল্পের শস্য উৎপাদন বিশেষজ্ঞ মহোদয় কৃষিবিদ মো. রাজু আহমেদ, মো. বিল্লাল হোসেন, উপজেলা কৃষি অফিসার (এলআর), সংযুক্ত: কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মশলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষন ও বিতরণ (৩য় পর্যায়ে) প্রকল্প, কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, গোলাপগঞ্জ ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারি কৃষি অফিসার সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার খমিয়াপত্তন গ্রামের কৃষক জনাব আবদুল মনাফ কর্তৃক সংরক্ষিত বারি সরিষা-১৪ জাতের প্রায় ১০০ কেজি সরিষার বীজ প্রকল্প থেকে সরবরাহকৃত ড্রামে সংরক্ষণ অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় শস্য উৎপাদন বিশেষজ্ঞ মহোদয় জনৈক কৃষকসহ উপস্থিত আরোও কৃষকগণদের সরিষার বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষন বিষয়ক বিভিন্ন কারিগরী দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। উপস্থিত কৃষকবৃন্দ পরিদর্শক দলকে স্বাগত জানান এবং তারা বলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা এভাবে মাঠ পর্যায়ে এসে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন কারিগরী নির্দেশনা প্রদানের ফলে তারা নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সর্ম্পকে ধারণা পান এবং উজ্জীবিত হন, নির্দেশিত কারিগরী প্রযুক্তি ও জ্ঞানসমূহ ব্যক্তিগতভাবে পালন করবেন এবং এলাকার অন্যান্য কৃষকগণের মাঝে এসব তথ্যাদিগুলো পৌঁছে দিবেন। কৃষকরা আরোও বলেন, সামগ্রিক কৃষকের উন্নয়নই পারে দেশের উন্নয়ন আনতে। এর আগে পরিদর্শক দল সিলেট সদর উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে রাজস্ব খাতের মাধ্যমে বাস্তবায়নকৃত মাল্টা ফল বাগান, ধান প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। সিলেট সদর উপজেলায় মাঠ কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় কৃষিবিদ উম্মে তামিমা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও মো. গিয়াস উদ্দিন, উপ সহকারি কৃষি অপিসার সাথে ছিলেন। পরে সিলেট সদরের উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে এসে প্রকল্প সম্পর্কিত দাপ্তরিক রেজিস্টার, প্রতিবেদন অন্যান্য তথাদি পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করেন। পরিদর্শনকালে সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে নদী তীরবর্তী বন্যায় প্লাবিত এলাকা, ক্ষতিগ্রস্থ আউশ আবাদ এলাকা, আমন ধানের বীজতলা, মাঠ পর্যায়ে বর্তমান পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের এর ফাঁকে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়, গোলাপগঞ্জ হতে বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করেন। পরিদর্শনকালে কৃষিবিদ মোহাইমিনুর রশিদ, আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, সিলেট পরিদর্শনরত দলের সাথে উপস্থিত ছিলেন।