Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩rd নভেম্বর ২০১৬

রংপুর অঞ্চলে ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্বোধন


প্রকাশন তারিখ : 2016-10-26

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চল, জেলা ও সদর উপজেলার যৌথ আয়োজনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে ইঁদুর নিধন অভিযান-২০১৬ এর উদ্বোধন করা হয়। উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে রংপুর অঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার উপ পরিচালক, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপ পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ)-গণসহ রংপুর জেলার সকল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা, উপসহকারী কর্মকর্তা এবং কৃষক প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহ আলম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টু। তিনি ইঁদুর নিধন অভিযানের শুভ উদ্বোধনও ঘোষনা করেন। রংপুর জেলার অতিরিক্ত উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আফতাব হোসেন ফসলে ইঁদুর নিধন গুরুত্বের উপর পাওযার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। এরপর সহজে ইঁদুর নিধনের কৌশল সম্পর্কিত একটি প্রামান্য চিত্র দেখানো হয়। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর জেলা উপ পরিচালক কৃষিবিদ স.ম. আশরাফ আলী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ রংপুর জেলার সভাপতি কৃষিবিদ মো. আলী আজম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর লালমনিরহাট জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ বিধু ভুষণ রায়, মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. খোরশেদ আলম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব কৃষ্ণ মোহন, কৃষক প্রতিনিধি মোঃ আলম মিয়া প্রমুখ।
অঞ্চল পর্যায়ে ২০১৫ সালের ইঁদুর নিধনের জন্য কৃষক, উপসহকারী কৃষি অফিসার ও উপজেলা- মোট তিন ক্যাটাগরীতে পুরষ্কার প্রদান করা হয়। সবচেয়ে বেশি সংখ্য ইঁদুর নিধন করে প্রথম পুরষ্কার লাভ করেন মিঠাপুকুরের কৃষক মো. আলম মিয়া। তিনি ২০১৫ সালে ২০হাজার ৮৯টি ইঁদুর মেরেছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পর্যায়ে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জনাব পরিমল চন্দ্র সরকার তাঁর ব্লকে ৩৬,৪৫৩টি ইঁদুর নিধন করে প্রথম পুরষ্কার পান। উপজেলা পর্যায়ে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলা ইঁদুর নিধনে সর্বোচ্চ ১,২৩,১৪১ টি ইঁদুর নিধন করে প্রথম স্থান অধিকার করে।
ইঁদুর নিধন অভিযান ২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকৃতিতে ইঁদুরের বিচরণ, ইঁদুরের প্রকারভেদ ও বংশবৃদ্ধির ধরণ, বিভিন্ন ফসলে ইঁদুরের ক্ষতির ধরণ ও ক্ষতির পরিমাণ, ইঁদুরের উপস্থিতির চিহ্ন, ইঁদুর নিধনের প্রয়োজনীয়তা, নিধনের বিভিন্ন পদ্ধতি এবং আঞ্চলিক ও জেলা পর্যায়ে ইঁদুর নিধন কৌশল সম্পর্কে  বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশে ইঁদুরের দ্বারা বছরে উৎপাদিত আমন ধানের ৫-৭%, গমের ৪-১২%, গোল আলু ৫-৭%, আনারস ৬-৯% এবং গুদামজাত শস্য ৩-৫%, সেচ নালা ৭-১০ % নষ্ট করে বলে জানানো হয়। অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ উপজেলা হিসেবে পুরষ্কার প্রাপ্ত মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান যে, একটি ইঁদুর প্রতিদিন প্রায় ৩০ গ্রাম হারে বছরে ১০-১২ কেজি খাদ্যশস্য খাবার হিসেবে গ্রহণ করে বা নষ্ট করে, যা প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের এক বছরের খাবারের সমান। বর্তমানে ধান ক্ষেতে যে পার্চিং ব্যবহার করা হয় সেগুলো যদি শক্ত কাঠি বা গাছের ডাল হয় তাহলে সেটিতে রাতের বেলায় পেঁচা বসতে পারে এবং এতে ক্ষেতের ইঁদুর দমনে সহায়ক হতে পারে। ইঁদুর দমনের ক্ষেত্রে তিনি হাত দিয়ে ইঁদুর ধরা উপচিত নয় বলে তিনি জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টু বলেন, ইঁদুর শুধু ফসলের নয়, বসতবাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্রসহ রাস্তাঘাট ও পয়ঃনিষ্কাশন নালার  প্রচুর ক্ষতি করে থাকে। ইঁদুর নিধনে নিজেদের প্রয়োজনেই সকলের সচেতন হওয়া উচিত। কৃষি ক্ষেত্রে ইঁদুর নিধন অভিযান সফল করার জন্য মাঠ পর্যায়ে এর ব্যাপক প্রচারণা ও কৃষকদের সম্পৃক্ত করার কথা তিনি উল্লেখ করেন। সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ মোঃ শাহ আলম বলেন, মাঠের ফসলের ক্ষতিকে সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য ইঁদুর নিধন খুবই জরুরী। তিনি অঞ্চলের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, যেসব ফসল ইঁদুর দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সে গুলো কখন বা ফসলের কোন স্তরে বেশি ক্ষতি করে সে সম্পর্কে কৃষক পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রংপুর কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক বেতার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম।