স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে কৃষি ক্ষেত্রে সিংহভাগ সাফল্য এসেছে এদেশের কৃষক ও কৃষিজীবীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায়। আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা আরও জানি, প্রাণে বাঁচতে হলে খাদ্য দরকার। খাদ্য না খেলে দেহে শক্তি আসে না। তাই খাদ্যশক্তি, প্রাণশক্তি, শ্রমশক্তি ও মেধাশক্তির মূল উৎস কৃষি। ‘প্রযুক্তি দিয়ে করবো কৃষি, সুখে থাকবো দিবানিশি’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে ৫ এপ্রিল সকাল ১০টায় ফার্মগেটস্থ আ. কা. মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে তিনদিনব্যাপী জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০১৫ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চেীধুরী এমপি এ কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব বিজয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব মো. মকবুল হোসেন এমপি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ জেড এম মমতাজুল করিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মিজানুর রহমান। কৃষি তথ্য বিস্তারে ই-কৃষি বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিকেআই প্রকল্প পরিচালক ড. রাধেশ্যাম সরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, কৃষির নতুন নতুন প্রযুক্তিগুলো কৃষি তথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকের কাছে কৃষির বিভিন্ন আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি পৌঁছানো যায়। আমাদের জমি কমছে, তারপরও আমরা খাদ্য সংকট থেকে উত্তরণ পেয়েছি। পরিবেশবান্ধব ও কৃষকের উপযোগী করে জাত উদ্ভাবনের জন্য গবেষকদের আরও মনোযোগী হতে হবে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার কৃষকের কাছে পৌঁছাতে হবে। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রচারের ক্ষেত্রে কৃষকের উপযোগী করে সহজ সরল ভাষায় প্রচারণা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষি তথ্য সার্ভিসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ অতিথি জনাব মো. মকবুল হোসেন এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের কৃষিতে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে দেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, এদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। যে দেশ এক সময় খাদ্য সংকটের দেশ ছিলো, বর্তমানে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে চাল, আলুসহ বিভিন্ন শাকসবজি রফতানি করা হচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের ফলে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনাব এ জেড এম মমতাজুল করিম বলেন, কৃষি উন্নয়নে যুগোপযোগী, সহজলভ্য ও কার্যকরী প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সদা সচেষ্ট।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, জলবাযু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করে আধুনিক লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৃষির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। জনবহুল এ দেশের খাদ্যের যোগানে নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি, মেধা, উদ্ভাবনী, সরকারের সহায়তা, বেসরকারি উদ্যোগ ও বাণিজ্যিক কৃষির সমন্বয় খুবই জরুরি।
জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি মেলা উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু করে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। মেলায় সরকারি-বেসরকারি ২৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। আগামী ৭ এপ্রিল ২০১৫ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা।