রাঙ্গামাটি অঞ্চলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্পের আঞ্চলিক সেমিনার অদ্য ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) তরুণ কান্তি ঘোষ। রাঙ্গামাটি অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম হারুন-অর-রশিদ সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উপপরিচালক রমনী কান্তি চাকমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলার উপপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার উপপরিচালক তরুন ভট্টাচার্য্য, প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।
সভার শুরুতে রাবার ড্যাম প্রকল্পের কার্যক্রম বিষয়ক দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম প্রকল্পের পরিচিতি, উদ্দেশ্য, সুবিধা, প্রেক্ষিত, বাস্তবায়িত এবং চলমান কার্যক্রম, কৃষিতে রাবার ড্যামের সম্ভাবনা বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, রাবার ড্যাম স্থাপনের পূর্বে ঐসব এলাকায় যেখানে ১৩,৯৮০ হেঃ জমি চাষাবাদের অন্তর্ভূক্ত ছিল সেখানে বর্তমানে ফসল চাষের এলাকা বেড়ে ২৬,১০৫ হেঃ হয়েছে। যার ফলে প্রকল্পভূক্ত এলাকায় তৃণমূল পর্যায়ে ফসলের উৎপাদন যেমন বেড়েছে পাশাপাশি কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থারও কাঙ্খিত পরিবর্তন ঘটেছে। বান্দরবান সদর এবং খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তাদের উপজেলায় স্থাপিত রাবার ড্যামের বিভিন্ন কার্যক্রম সভায় উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে উপস্থিত সদস্যগণ রাবার ড্যামের বিভিন্ন দিক নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার বিভিন্ন নদী ও পাহাড়ি ছড়াতে আরও বেশি সংখ্যক রাবার ড্যাম স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত রাবার ড্যামগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের সক্রিয় অংশীদারিত্বের উপর জোর দেন। তিনি উদ্বুদ্ধকরণ ও নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটিকে আরও সক্রিয় করার ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করেন। সভাপতির বক্তব্যে এ কে এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সেচের পানির অভাবে রবি মৌসুমে অনেক জমি পতিত থাকে। সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা থাকায় রবি মৌসুমে ফসল চাষ বাড়ানোর পাশাপাশি আউশ ধান চাষ এবং আমন ধানে সম্পূরক সেচ প্রদানে ভূ-উপরিস্থ পানি সেচের কাজে ব্যবহারে রাবার ড্যাম প্রযুক্তি একটি পরীক্ষিত প্রযুক্তি। তিনি এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, এনজিও, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিএডিসি, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ সুগারক্রপস গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির কৃষক প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ মোট ৭০ জন অংশগ্রহণ করেন।