দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চল সফরের অংশ হিসেবে গত ০১ জুন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান পিরোজপুর সদরের দূর্গাপুর গ্রামের এক দৃষ্টিন্দন মাল্টাবাগান পরিদর্শন করেন। তিনি পুরো বাগান ঘুরে দেখে অভিভূত হন। বাগানের মালিক অমলেষ রায় জানান, তার বাগানে লাগানো বারি মাল্টা-১ খেতে অত্যন্ত মিষ্টি এবং রসালো। পিরোজপুরের মাটি এবং আবহাওয়ার পাশাপাশি জোড় কলমের নিচের অংশ এ অঞ্চলের চাষোপযোগী বাতাবি লেবুর গাছ হওয়াতে এমন ফল পাওয়ার অন্যতম কারণ। তিনি গত বছর গাছ প্রতি ফল বিক্রি বাবদ গড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। অভাবনীয় এ সাফল্যে দেখে আশেপাশে ইতোমধ্যে বাগানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২শতে। বাগান যেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে তাতে মনে হয়, কয়েক বছরেই ওখানে মাল্টায় হবে ছড়াছড়ি। মহাপরিচালক একই উপজেলায় চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে মাল্টার চারা এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন। পরে বাংলাদের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে চাষিদের জন্য কৃষি সহায়ক প্রকল্পের উদ্যোগে দু’দিনব্যাপি এক এসএএও প্রশিক্ষণ উদ্বোধন শেষে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। ০২ জুন বরিশাল নগরীর খামারবাড়িস্থ ডিএই সম্মেলন কক্ষে বরিশাল ও ঝালকাঠির কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ ছাড়া তিনি বরিশাল সদরের কর্ণকাঠিতে একটি কৃষিসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। অতঃপর বরগুনায় এক কৃষক সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে আরও বেশ ক’টি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ওখানকার মাঠফসল প্রত্যক্ষ করেন। ৩ জুন আমতলীস্থ কৃষি রেডিও পরিদর্শন শেষে পটুয়াখালীতে অনুরূপ একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কৃষক এবং কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে ডিজি বলেন, সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আপনাদের কাছে হাজির হয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ি ও দক্ষিণাঞ্চলের জন্য দু’টি চমৎকার মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে; যার ফলশ্র“তিতে পাহাড় বেষ্টিত পূর্বাঞ্চল হবে বাহারীফলের সমারহ আর বৈচিত্র্যময় ফসল চাষের মাধ্যমে এ অঞ্চল হবে কৃষিপ্রধান। এখানকার আমড়া, পেয়ারা, নারকেল এসব প্রসিদ্ধ ফলের পাশাপাশি বিলাতীগাবসহ অন্যান্য অপ্রচলিত ফলের প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠের সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, উত্তরের কৃষি এখন দক্ষিণে নিয়ে আসা হবে। এ জন্য সরকার এক মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তা বাস্তবায়নে চাই সকলের সহযোগিতা। এর বিনিময়ে আপনাদের দক্ষিণাঞ্চল হবে ফল-ফসলে টইটম্বুর। মহাপরিচালকের সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন সাবেক মহাপরিচালক এম. এনামুল হক, বাংলাদের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে চাষিদের জন্য কৃষি সহায়ক প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, বছরব্যাপি ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. মেহেদী মাসুদ প্রমুখ।