‘উন্নয়নের রোল মডেল, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় খুলনায় অনুষ্টিত হলো তিন দিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলা-২০১৮। গত ১১ জানুয়ারি বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টায় খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয়ভাবে এ মেলার উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। মন্ত্রী তাঁর উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ একটি পরিবর্তীত বাংলাদেশ। ২০০৮ সালের বাংলাদেশ আর ১০১৮ সালের বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক পার্থক্য। গত ১০ বছরে দেশের মানুষের আয় বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নীতির কারণে এখন সাধারন মানুষের পকেটে টাকা ঢুকেছে। এমন কোন শ্রেণী পেশার মানুষ নেই যাদের কথা প্রধানমন্ত্রী ভাবেন না। মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিনাঞ্চলবাসির জন্য আর্শিবাদসরুপ। প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য যতটা আন্তরিক তেমন আন্তরিক আর কেউ নন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পদ্মাসেতু, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মংলা ইপিজেড বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের এ সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুফল প্রান্তিক জনগোষ্টির দোড় গোড়ায় পৌছে দিতে হবে। এ জন্য জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসন,খুলানা আয়োজিত এ মেলার উদ্ভেধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মুহম্মদ মিজানুর রহমান, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হান্নান এবং খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনার রশিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ আমির উল আহসান। এ সময় বিএনএস তিতুমীর এর কমোডর কমাডিং শামছুল আলম, মংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর একেএম ফারুক হাসান, কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহবুব হাকিমসহ মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি দপ্তর সমুহের কর্মকর্তা/কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং সর্বস্তরের জনগন উপস্থিত ছিলেন। এবারের মেলায় ১২৩টি স্টলের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক,বীমা,আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও সমুহ তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রর্দশন করেছে। এর আগে সকাল ৯টায় শহীদ হাদিস পার্ক থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী শুরু হয়ে সার্কিট হাউজ মাঠে এসে শেষ হয়। পরে প্রধান অতিথি পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন।
এদিকে মেলার সমাপনি অনুষ্ঠানে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশের মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসার কারণে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিনত হতে যাচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে এগিয়ে যেতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে আমাদের অনুপ্রেরণার শিক্ষা নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশে ছোট ছোট দূর্ণীতি না থাকলে, কাজে ফাঁকি না দিয়ে যার যার কাজ ঠিকমত করলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নীতির কারণে উন্নয়নশীল ৬০টি দেশের মধ্যে ৩২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে। খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ আমির উল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন,ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হান্নান ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ লোকমান হেসেন মিয়া। এবারের উন্নয়ন মেলায় ১২৩টি স্টলে ৯৭টি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ইনোভেশন প্রদর্শন করেন এবং গ্রেডিং বিবেচনায় ১০টি সেরা স্টল নির্বাচনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্টল ১ম স্থান অধিকার করে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উম্মুক্ত ছিল। মেলা কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন সেমিনার, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।