প্রকল্প যেদিন থেকে অনুমোদন হয়, সেদিন থেকে প্রকল্পের কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করতে হবে। যাতে করে সময়মত কাজ শেষ করা যায়। ১৪ মে ২০১৮ তারিখে ঢাকার খামারবাড়ির আ.কা.মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়ামে সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের কার্যক্রম, অর্জন ও সমাপনী শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ একথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, আগামী জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের শতকরা ৯৮ ভাগ অর্জিত হবে। যার মাধ্যমে আমরা একটি প্রকল্পের সফল সমাপ্তি দেখতে পাচ্ছি। বোরো ধানের উৎপাদন বিষয়ে সিনিয়র সচিব উল্লেখ করেন, এবার বোরো ধানের ফলন অন্যান্য বছরের তুলানায় ভালো হয়েছে। হাওর এলাকায় শস্য কর্তন এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অন্যান্য এলাকা শতকরা ৬০ ভাগের বেশি ধান কর্তন হয়েছে। ঝড়, বৃষ্টি ও শিলা না হলে এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন সর্বোচ্চ রেকর্ড হতো। বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের সব সময় সচেতন থাকার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমাদের লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। ইতিমধ্যে ৮৫০ টন লেবু বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। তন্মধ্যে ২৫০ মেট্রিক টন জারা লেবু রয়েছে। দেশে লেবুর চাহিদা মিটিয়ে, বিদেশে আরো বেশি রপ্তানি করতে পারবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী পরিচালক কৃষিবিদ মো. ফরিদুল হাসান।
উল্লেখ্য, জুলাই ২০১৩ থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি জুন ২০১৮ সালে শেষ হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে লীড এজেন্সী হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ৫বছর মেয়াদী একল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। ৩টি পার্বত্য জেলাসহ ১৭টি জেলার ৬৮টি উপজেলায় প্রকল্প এলাকা নির্ধারিত ছিলো। প্রকল্প পরিচালক জানান ৫ বছরে এ প্রকল্পের মাধ্যমে লেবুর এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৪২ ভাগ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৩ ভাগ। অন্যদিকে মাল্টার এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৯৬ ভাগ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৭৭ ভাগ। কমলার এলাকা বৃদ্ধি পেয়েচে শতকরা ১৩ ভাগ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ১১ ভাগ এবং বাতাবী লেবুর এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৭ ভাগ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২২ ভাগ। শুধুমাত্র প্রকল্পের মাধ্যমে রোপিত গাছ থেকে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৮শ ৩৮ মেট্রিক টন কমলা, ৮ হাজার ১৫২ মেট্রিক টন মাল্টা, ৬শ ২৯ মেট্রিক টন বাতাবী লেবু ২হাজার ৮৫১ মেট্রিক টন লেবু পাওয়া যাবে। যার বাজার মূল্য ১শ ২ কোটি টাকা। প্রকল্পটির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২৯টি জেলার ১২৩টি উপজেলা নিয়ে লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক আরেকটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।