এবার মেলার প্রতিবাদ্য বিষয়, “অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলে পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গত ১৯ জুলাই২০১৮ গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্তরে ৩ দিন ব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোদাগাড়ী মোঃ শিমুল আকতার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ফলদ বৃক্ষ মেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের মানণীয় সংসদ সদস্য ও সভাপতি শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থাযী কমিটি আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইসাহাক।
উদ্বোধনীর শুরুতে সূধীবৃন্দের শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে ফলদ বৃক্ষ মেলার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার গোদাগাড়ী কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন কৃষক তথা সকল স্তরের জনগন এই ঐতিহ্যবাহী মেলার মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ফলদ বৃক্ষের অবদান ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে সহজে নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা নিতে পারবে। তিনি মেলায় উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথি বলেন মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম হচ্ছে খাদ্য। ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্যের যোগান দেয় কৃষি। তাই মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সময় উপযোগী ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মেলা কৃষকসহ আপামর জনসাধারনকে উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কাজেই প্রতিদিন কিছু না কিছু যে কোন ধরনের ফল খেতে হবে আর এজন্য বাড়িতে যে কোন ফলের গাছ থাকা প্রয়োজন। তিনি বনজ বৃক্ষের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, বৃক্ষ শুধু আমাদের শর্করা, প্রোটিন, স্নেহ, ভিটামিন এবং খনিজ লবনের চাহিদাই পূরন করে জ্বালানী কাঠ, কাগজ তৈরীর কাঁচামাল, মাটি ক্ষয়রোধ, রাস্তার সৌন্দর্য বর্দ্ধনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করে পরিবেশ রক্ষা করে। কাজেই সবাইকে ফলদ, বনজ ও ঔষুধি বৃক্ষ রোপনে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। বৃক্ষ ও মানুষের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই আমাদের উচিৎ বেশী করে বৃক্ষ রোপন করা। তিনি আরোও বলেন, বৃক্ষ শুধু আমাদের অক্সিজেন দেয় না, বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা,স্বাস্থ্য,ভূমিক্ষয় রোধ, জৈব সার উৎপাদন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। তিনি উপস্থিত সকল স্তরের মানুষকে মেলা পরিদর্শণ ও মেলা থেকে কৃষি প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও নতুন নতুন ধ্যান ধারনা গ্রহনের পাশাপাশি ৩টি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধী বৃক্ষের চারাা সংগ্রহ করে রোপণ করার জন্য আহ্বান জানান।
সভাপতি মহোদয় বলেন, এ মেলায় কৃষকের স্ব-উদ্ভাবিত কৃষি পণ্যের প্রদর্শন ছাড়াও দ্রুত কৃষি প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে জেনে কৃষকগন ঞ্জান লাভ করতে পারবে। তিনি ফলদ বৃক্ষের সাথে সাথে বনজ ও ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপণ ও তার পরিচর্যারও গুরুত্বারোপ করে। তিনি মেলা থেকে বিভিন্ন জাতের কমপক্ষে ২টি করে ফলদ বৃক্ষের চারা সংগ্রহ করে রোপণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
৩দিন ব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলায়, বন বিভাগ, বি এম ডি এ,ওয়ার্ড ভিশন, এসিআই, ব্যাক্তিমালিকানাধীন নার্সারীসহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে বসত বাড়ীতে সবজি চাষ, মিশ্র ফল বাগান, আই পি এম পদ্ধতি, বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির ফল ও ঔষধী বৃক্ষের প্রদর্শন বিষয়ক স্টলসহ ৩০টি স্টল অংশ গ্রহন করে। উদ্বোধনী পর্বে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী ছাড়াও ৮০০ জন কৃষক কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।