পাট পণ্য হতে হবে সস্তা আকর্ষণীয় ও সহজে ব্যবহারযোগ্য। কৃষি যন্ত্রপাতির মতো পাটের ব্যাগও হতে হবে স্লিম এন্ড স্মার্ট। ১৬ মে ২০১৮ (বুধবার) তারিখে রাজধানীর বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এর আয়োজনে ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মাটি থেকে পাট গাছের জন্ম। মাটির সঙ্গেই আবার পাট মিশে যায়। এটি একটি পরিবেশবান্ধব একটি তন্তু বা আঁশ। পাট পণ্যকে হ্যান্ডি, স্মার্ট, চিফ ও পাটের নানান ধরনের ব্যবহারের মাধ্যমে লাভজনক করতে হবে। লাভজনক না হলে পাটকে বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে না। পাট সম্পর্কে বলতে গিয়ে মাননীয় মন্ত্রী উল্লেখ করেন, আমাদের পাটের যে ভবিষ্যত, হয়তো সেটা অনেক উজ্জ্বল। কিন্তু এতদিনে যেটা হওয়া উচিত ছিলো, সেটা কিন্তু হয়নি। সেটা মাথা রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। আগামী দিনে কি করবো, পাট নিয়ে আমরা কতদূর যেতে পারবো সবকিছু হিসাব করে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের শৈশব, কৈশোরে পাট নিয়ে বহু কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি। ছাত্র অবস্থায় ও ছাত্রজীবনের পরেও এ পাট নিয়ে বহু কথা বলতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে। মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান নামের একটি দেশের ঐশ্বর্য, সে ঐশ্বর্যটা গড়ে উঠেছিলো বাংলাদেশের পাট দিয়েই। বিশেষ করে বর্তমানে পাকিস্তোনের রাজধানী ইসলামাবাদের টাকার যোগান দিয়েছিলো বাংলাদেশের পাট। কিন্তু পাটের সে উন্নয়নের ছোঁয়া আমরা পাইনি।
তিনি আরও বলেন, পাটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রয়েছে কৃত্রিম তন্তু। বলা হয় সার শুধুমাত্র পাটের বস্তায় আনতে হবে। পাটের বস্তায় বিশেষ করে ইউরিয়া বা অন্যান্য সার শ্রকিরা মাথা থেকে নামানার সময় অনেক ক্ষেত্রে ফেটে যায়। পাটের বস্তা আর্দ্রতা শোষণ করে তাড়াতাড়ি। সে অবস্থায় সারের ওজন কমে যায়। এ সমস্যার সমাধান না করে, জোর করে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে হবে এ সার্কুলার দিতে পারি। কিন্তু সেটা বাস্তসম্মত হবে না। সে অবস্থায় পাটের ব্যাগ কৃত্রিম তন্তুর মতো না হলেও কাছাকাছি টিকতে পারে সে ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে জোর করে সরকারি ক্রয়ে পাটের ব্যাগ ব্যবহার থেকে যাবে, কিন্তু বেসরকারি খাতে এর ব্যবহার হবে না। মাননীয় মন্ত্রী বলেন, পাটের ভবিষ্যত কিন্তু টেক্সটাইল। বিজেআরআই পাটের লিগনিনের পরিমান কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এতে করে আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের সুতা তৈরীতে পাট ব্যবহার করা যাবে। আমাদের কাগজ শিল্পের ক্ষেত্রে পাল্প আমদানি করতে হয়। আমরা যদি পাট থেকে এ পাল্প সরবরাহ করতে পারি। তাহলে আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আসবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজেআরআই এর পরিচালক (কারিগরী) ড. মো. আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এর গবেষণা কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন বিজেআরআই এর মহাপরিচালক ড. মো. মনজুরুল আলম।