প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ বলেছেন, চাহিদার ভিত্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করা হলে কৃষক ও কৃষির আমূল পরিবর্তন হবে। কৃষি বাতায়ন ও কৃষকবন্ধু ফোন সেবার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষক তার চাহিদা অনুযায়ী তথ্য জেনে তা প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির উন্নতি করতে পারবে। তিনি আজ ২৪ জানুয়ারী বেলা ১২টায় খুলনার দৌলতপুরস্থ তেলিগাতির সেলিম ফকিরের বাড়িতে মেট্রোপলিটন কৃষি অফিস, দৌলতপুর আয়োজিত প্রযুক্তি সম্প্রসারণে চাহিদা ভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণে কার্যক্রম পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন। প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ ধরনের কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষি উৎপাদনে ভারসাম্য তৈরী হবে। মতবিনিময়কালে কৃষক/কৃষানীদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে এলাকার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে তা ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। সাবেক মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বলেন, ২০১৪ সালে তেলিগাতিতে কৃষকদের চাহিদার ভিত্তিতে ১২০ জনকে ধানের আদর্শ বীজতলা তৈরীর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। পরবর্তিতে কৃষকদের চাহিদার ভিত্তিতে নারিকেলের মাইট দমন, ভার্মিকম্পেস্ট, নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও সুষ্ঠবাজারজাতকরণের উপর প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। তেলিগাতির প্রগতিশীল কৃষক মোকছেদ ফকিরের অগ্রণী ভূমিকা ও সংশ্লিষ্ঠ উপসহকারি কৃষি অফিসারের দায়িত্ববোধের কারণে এ কার্যক্রম সফলতা এনে দিয়েছে। মতবিনিময়কালে সংশ্লিষ্ট উপসহকারি কৃষি অফিসার অঞ্জন কুমার বিশ্বাস বলেন, অফিসিয়াল প্রশিক্ষণে নিদৃষ্ট বিষয়ের উপর কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যদি কৃষকের চাহিদার ভিত্তিতে তাদের সময় অনুযায়ী এবং কৃষকের দোরগোড়ায় যেয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে তাদের সময়, কাজের ক্ষতি, অর্থের অপচয়সহ কাংখিত প্রযুক্তির বিষয়ে জানতে পেরে তারা বিশেষভাবে উপকৃত হয়। এলাকার প্রগতিশীল কৃষক মোকছেদ ফকির জানান, ধান চাষে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে আগে যেখানে বিঘাপ্রতি ৮/১০ মণ ধান পেতাম বর্তমানে একই জমিতে ৫০/৬০ মণ ধান উৎপাদিত হচ্ছে। প্রযুক্তির সফলতার কারণে এখন তেলিগাতিতে শতভাগ আদর্শ বীজতলা তৈরী হচ্ছে এবং ধান চাষে শতভাগ পার্চিং এ কৃষকেরা এগিয়ে আসছে। বিষমুক্ত ফসল উ’পাদনের কারণে তার নিজের ব্যবহৃত ৫/৬টি কীটনাশক মেশিন তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। কৃষাণী কাজল রেখা বলেন, এলাকার ঘেরের পাড়ে বর্তমানে ৪ তলা কৃষি খামার গড়ে উঠেছে। ঘেরের পাড়ে এসব উৎপাদিত সব্জি শতভাগ বিষমুক্ত। তাদের উৎপাদিত এসব সবজির চাহিদার কারণে মূল্যও বেশী পান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. হুসনা ইয়াসমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিস খুলনার প্রতিনিধিসহ প্রশিক্ষিত ৩০জন কৃষক/কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।পরে প্রকল্প পরিচালক প্রশিক্ষিত কৃষক/কৃষাণীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন ও আমের পোকা দমনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।