গত ১৭/০৩/২০২০ খ্রি. তারিখে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার আয়োজনে সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু কৃষি উৎসব পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আপ্রু মারমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো: ফজলুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা, বনরুপা হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: আব্দুল জব্বার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: মহিদুল ইসলাম এবং সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃনাল কান্তি চাকমা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাঙ্গামাটি জেলার অতিরিক্ত উপ পরিচালক কৃষিবিদ এম,এম, শাহ্নেয়াজের স্বাগত বক্তব্যের পর কৃষি তথ্য সার্ভিসের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নির্মিত বিশেষ ডকুমেন্টারী ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কৃষি’ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে প্রদর্শণ করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা বলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে প্রাপ্ত এ বাংলাদেশকে সোনালি ফসলে ভরপুর দেখতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সে কারণেই স্বাধীনতার পর তিনি ডাক দিয়েছেন সবুজ বিপ্লবের। ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার পথে অনেক দূর এগিয়েছে। প্রধান অতিথি কৃষিবিদ মো: ফজলুর রহমান বলেন ১৯৭১ সনে এদেশের জনসংখ্যা ছিলো ৭.৫ কোটি। তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিলো। বর্তমানে বিপুল জনগণের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে দেশ আজ দানাজাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
আমরা আজ বিদেশে চাউলও রপ্তানী করছি। এসব সম্ভব হয়েছে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের কৃষি বান্ধব বিভিন্ন উন্নয়নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে। তবে এ’সকল উন্নয়ন ও সফলতার বীজ বপন করা হয়েছিল স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ পরিচালনার সময়। তিনি বলতেন, আমাদের রয়েছে উর্বর মাটি, প্রকৃতি প্রদত্ত অফুরন্ত পানি সম্পদ, আর পরিশ্রমী জনগণ। এগুলোর সুষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা অসাধ্য সাধন করে ফেলতে পারি। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকদের মুখে হাসি ফোটানো, তাই তিনি কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার প্রদানের পাশাপাশি কৃষিবিদদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন।
১৯৭৩সনের ১৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের চাকরীতে প্রথম শ্রেনির মর্যাদা প্রদান করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষে সবাইকে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে একযোগে কাজ করার জন্য তিনি আহব্বান জানান। অনুষ্ঠানে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকদের কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়। তাছাড়া মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এবং কৃষি তথ্য সার্ভিসের উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বিভিন্ন লিফলেট, বুকলেট, ফোল্ডার বিতরণ করা হয়।
পরিশেষে স্থানীয় কৃষক/কৃষাণীদের উদ্যোগে তৈরিকৃত বিন্নি পিঠা, কলা পিঠা, সাইন্না পিঠা দ্বারা সকলকে আপ্যায়ন করা হয়। উৎসবে শতাধিক কৃষক/কৃষাণী, জনপ্রতিনিধি, সংবাদকর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।