পোকা দমনে আলোক ফাঁদ ও পার্চিং একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। অনেক জৈবিক দমন পদ্ধতির মধ্যে পার্চিং ও আলোর ফাঁদ আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। বিষয় দুইটির গুরুত্ব অনুধাবন করে কৃষি মন্ত্রণালয় তার সহযোগী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সারা দেশে পরিবেশবান্ধব এ দুইটি পদ্ধতির সম্প্রসারণকল্পে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ধান উৎপাদনে পার্চিং এবং আলোর ফাঁদ বেশ কার্যকর এবং লাভজনক। আমন মৌসুমে এ দুইটি কৌশল সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে নির্বিঘ্নে আমন উৎপাদন করা যায়।
আলোক ফাঁদ সম্পর্কে রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পাপিয়া রহমান মৌরী জানান, আলোক ফাঁদ ব্যবহারে পরিবেশ ভাল থাকে, উৎপাদন খরচ কম হয়, কীটনাশক কম লাগে এবং বিপিএইচের উপস্থিতি সহজে বোঝা যায়। কারন হিসেবে তিনি বলেন, আলো দেখলে বাদামী গাছ ফড়িং বা বিপিএইচ পোকা ছুটে এসে এক জায়গায় মিলিত হয়, ফলে সহজে এ পোকা ধ্বংস করা যায়। এই পদ্ধতি এলাকার কৃষকগণ ব্যপকভাবে গ্রহণ করছে এবং ভাল উপকার পাচ্ছে। এতে করে এলাকার কৃষকগণ উপকারি ও অপকারি পোকা সহজে চিনতে পারছে। তিনি আরো বলেন, এলাকার কৃষকেরা যে কোন পোকা দেখলেই কিটনাশক দিতে হবে এই ধারনা যে ভুল তা সহজেই বুঝতে পারছে।
পার্চিং সম্পর্কে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, পাখি পাচিং এ বসে একটি ক্ষাতকারক পোকা খেলে ২০০ থেকে ৩০০টি পোকা দমন হয় কারন একটি ক্ষতিকারক পোকা ২০০ থেকে ৩০০টি ডিম পাড়ে । পার্চিং টিকে চুনের দ্রবণে চুবালে অনেকটা ধবধবে সাদা দেখাবে এবং ক্ষেতের অনেক দূর থেকে দৃষ্টিগোচরে আসবে। চুনের পরিবর্তে সাদা পেইন্ট দিয়েও পার্চিংয়ের ওপরের অংশকে রঙ করা যাবে। আর মাটিতে পুতার অংশে আলকাতরা দিয়ে লেপে দিলে খুঁটির স্থায়িত্ব বেশি হয়। রঙ বা সাদা না করেও পাখি বসানোর ব্যবস্থা করা যায়। পার্চিং আইল থেকে বেশ দূরে দেয়াই ভালো এবং জমির যে অংশে চলাচলের অসুবিধা আছে সেখানে স্থাপন করা ভালো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ হতে এবং কৃষি তথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে এই পদ্ধতি দুটি ব্যবহার করার জন্য কৃষক ভাইদের মাঠ পর্যায়ে এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে জোর পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।